Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: এ সরকার দরকার নেই
সম্পাদক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২১ জুন, ২০২১, ০৭:৪২:০৬ পিএম
  • / ৫৩২ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

মানুষ মাত্রেই ভুল করে, এ তো ঠাকুমার ঠাকুমাও বলেছিল। হ্যাঁ মানুষ কাজ করলে ভুল হয়, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ভুল হয়, সমষ্টির সিদ্ধান্ত ভুল হয়, প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ভুল হয়, সেই একই সূত্র ধরে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তও ভুল হয়, হতে পারে বা হয়ে থাকে। আর তাই ভুল হওয়াটা বড় কথা নয়, ভুল শুধরে নেওয়াটা বড় কথা।

কিভাবে ভুল শোধরানো যায়? আধুনিক ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স বলছে, তিন ধাপে শুধরে নেওয়া যায় ভুল। তার প্রথম ধাপ হল ভুলটা চিহ্নিত করা, স্বীকার করা, টু অ্যাকসেপ্ট দ্য ফল্ট অর মিসটেক, তাহলেই অর্ধেক কাজ হয়ে গেলো। আপনি ভুল করেছেন, বুঝতে পেরেছেন? স্বীকার করছেন? যদি বুঝতেই না পারেন, বা ভুল হয়েছে এটা স্বীকার না করে অন্য কোনও অজুহাত দিয়ে বসে থাকেন, তাহলে নিশ্চিত আপনি আবার, আবার এই ভুলটাই করবেন। ধরুন স্যুট তৈরি করবেন, আপনি দোকানে গেলেন, কাপড় দেখলেন, অর্ডার দিলেন, মাপ ইত্যাদি নেওয়া হয়ে গেলো, এবার বিল বানানোর সময় দেখলেন, দাম আপনার বাজেটের চার কি পাঁচ কি ছ গুণ। কেলেঙ্কারি, যাই হোক করে ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট করে বাড়ি ফিরলেন, মাস টেনেটুনে চালাতে হবে। সে তো হল, কিন্তু ভুলটা কোথায়? ভুল হল দাম না জেনে কিনে ফেলা, যদি এটা বুঝতে পারেন তো ভালো, না বুঝলে আবার হবে। কেবল বোঝা নয়, আপনাকে ভুলটা স্বীকার করতে হবে। সেটা হল প্রথম ধাপ। বৌকে বললেন, আসলে সেদিন আমি সকালে বের হবার সময়েই তুমি হাঁচলে, ব্যস, তারপর থেকে, আমি অন্যমনস্ক হয়ে গেলাম। মানে এই ভুলের দায় আপনার নয়, আপনার বৌ এবং তার হাঁচির। হয়ে গেলো, এরপর আবার এই ভুল হবে, হবেই। তখন আবার দোষটা অন্য কারোর ঘাড়ে চাপাতে হবে, জওহরলাল নেহেরু বা ইন্দিরা গান্ধীর ওপরে। ভুল চলতেই থাকবে। দ্বিতীয় ধাপ হল, কেবল ভুলটাকে স্বীকার করাই নয়, ভুলটাকে বোঝা, কেন এরকম ভুল হল, সেটা বোঝা। দেওয়াল তুলেছিলেন, ভেঙে পড়ে গেলো। স্বীকার করলেন, হ্যাঁ দেওয়াল ভেঙেছে, এবার খুঁজতে হবে কেন ভাঙলো? ভিত ঠিক ছিল না? সিমেন্ট ঠিক ছিল না? মিস্ত্রি বাজে? শুকনো হবার আগেই লোড পড়েছে? খুঁটিয়ে দেখতে হবে সবটা, দুম করে সিদ্ধান্ত নিলে চলবে না, কারোর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিলেই চলবে না, এ তো খুব সাধারণ ব্যাপার, দেওয়াল তো ভেঙেই থাকে বা ও পাড়ার জওহরলাল বা রাহুল ভেঙে দিয়ে গেলো, বা ওদের তো কতবার দেওয়াল ভেঙেছে, এসব বলতে থাকলেই কেলো, আবার ভুল হবেই। কারণ আপনি ভুলের কারণটাই বুঝতে পারলেন না, অতএব আপনি আবার ভুল করবেন। তাহলে প্রথমে ভুল স্বীকার করা, তারপর ভুলের সঠিক কারণ নির্ধারণ করা, এরপরের ধাপ হল তা শুধরানো, তারজন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান দরকার, এক্সপার্টিজ দরকার, সেই বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া দরকার, কেবল মাত্র তাহলেই তাকে শোধরানো যায়, বা বলা ভাল শোধরানোর প্রক্রিয়াটা চালু করা যায়, এই তিনটে বিষয় ব্যক্তি মানুষের ভুলের ক্ষেত্রেও যেমন কাজে লাগে, তেমনই কোনও প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের জন্যও খুব জরুরি।

আরও পড়ুন:বিজেপিকে রুখতে শরদের বাড়িতে মঙ্গলবার বিরোধীরা

গত ৭ বছর ধরে আমাদের দেশে এই পদ্ধতি উবে গেছে, তাকিয়ে দেখুন ইন্দিরা গান্ধীর দিকে, জরুরি অবস্থা জারী করেছিলেন, মুখে না স্বীকার করলেও বুঝেছিলেন এটা ভুল, তুলেছিলেন, হেরেওছিলেন, আবার ক্ষমতায় এসেছেন, জরুরি অবস্থার নামও নেননি, এবং কংগ্রেস দল, প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে, জরুরি অবস্থা জারি করা ভুল ছিল, ভয়ঙ্কর ভুল। আশা করাই যায়, ক্ষমতায় এসে কংগ্রেস জরুরি অবস্থা জারি করার কথা কোনওদিনও ভাববেন না। অন্যদিকে আরএসএস, গান্ধী হত্যার দায় ছিল, কোনওদিন সেই দায় স্বীকার করেনি, তীব্র গান্ধী ঘৃণা তাদের সদস্যদের রক্তে বইছে, আজকের বিজেপি তাই এক চরম সাম্প্রদায়িক, ধর্মান্ধ নাথুরাম গডসেকে শহিদ বলে মনে করে। গত সাত বছর ধরে বিজেপি শাসিত সরকারের এই ভুল স্বীকার, বোঝার, শুধরানোর কোনও দায় নেই, সেই ব্যবস্থাটাই নেই, নরেন্দ্র মোদী নিজেও মনে করেন না যে তিনি ভুল করতে পারেন, তাঁর দলের কারোর বলার ক্ষমতাই নেই যে মোদীজি ভুল করতে পারে, দলের ভক্তরা বিশ্বাসই করে না যে, মোদীজি ভুল করতে পারেন। ফল যা হবার তাই হচ্ছে, ভুলের পর ভুল, ভুলের পর ভুল। আর মজার ব্যাপার হল এই ভুলের জন্য ভুগছে কারা? মধ্যবিত্ত, দরিদ্র মানুষ। আগের দিন বলেছিলাম, টাকা, কারেন্সি হল অর্থনীতির শরীরে রক্ত, টাকা কমলেই অর্থনীতি ধুঁকতে থাকে, তো তিনি সেই টাকাকেই ভ্যানিস করে দিলেন, বাতিল করলেন ৫০০, ১০০০ টাকার নোট। কার সঙ্গে কথা বললেন? কোন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললেন? কোন অর্থনীতিবিদ এই কথা বললো, ঢপের হলেও তাঁর ডিগ্রিটা তো এন্টায়ার পলিটিকাল সায়েন্সের, অর্থনীতির নয়, তাহলে? কে জানতো? জানা গেলো অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও জানতেন না। বিরাট ভুল, হিমালয়ান ব্লান্ডার, বেশ হল সেটা। তিনি স্বীকার করলেন? একবারও বললেন, যে ওটা ইচ্ছাকৃত ছিল না, ভুল হয়েছে, ভুল স্বীকারই করলেন না, ভুল বোঝা, ভুলের কারণ বোঝা, তা শুধরে নেবার প্রশ্নই ওঠে না। সেই ২০১৬ থেকে, হ্যাঁ অতিমারির সময় থেকে নয়, সেই ২০১৬ থেকেই আমাদের জিডিপি নামতে শুরু করলো, জিডিপি নামছে, আবার ভুল। এবার সরকার বলে দিল, ওসব জিডিপি ইত্যাদি কিছুই নয়, দেশ এগোচ্ছে। বোঝো ঠ্যালা, আবার ভুল। এবার জিএসটি এল, সে তো ভুলের হাতবাক্স, এখনও তার দায় বইছি আমরা।

আরও পড়ুন: আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া চিঠি কেন্দ্রের

এসব করতে করতে অতিমারি, করোনা কিছুই নয়, প্রথমে থালা বাজাও, তারপর দিয়া জ্বলাও, হঠাৎ লকডাউন, পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যা ভুলের মিছিল, ভুলভুলাইয়া। ভুল স্বীকারও নেই, বোঝা, শুধরানোর প্রশ্নই নেই। কোভিড ওয়ান তখনও যায়নি, সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা বলেছেন কোভিড টু আসছে, সারা পৃথিবী ভ্যাক্সিন, চিকিৎসা নিয়ে রেডি হচ্ছে, মোদীজি নির্বাচন নিয়ে মাঠে, উল্লসিত জনতা দেখে, উদ্বেল জনতার সংখ্যা দেখে, ওদিকে ৯১ লক্ষ মানুষ কুম্ভ মেলায় হাজির, সরকারের হোর্ডিং, শ্রদ্ধালুওঁ কো স্বাগতম। তীব্র বেগে ছড়ালো কোভিড ২, মোদীজি বললেন ২৮ কোটি ডোজ আছে ভ্যাক্সিনের, ভ্যাক্সিন উৎসব। তার মানে, সাধারণ হিসেবে ১৪ কোটি মানুষকে ভ্যাক্সিন দেওয়া যাবে, আমেরিকা, ইউকে, ইজরায়েল, ফ্রান্স, ইতালি তাদের দেশের ৪৫% মানুষকে দুটো ডোজ দিয়ে ফেলেছে, আমাদের? ৩.৫% মানুষ দুটো ডোজ পেয়েছে, কোনও পরিকল্পনাই যে ছিল না আজ তা পরিস্কার। কিন্তু প্রধান সেবক যথারীতি, টেলিভিশনের পর্দায় এসে গত ৭০ বছরে কিছুই যে হয়নি, সেই গল্প শোনালেন, জওহরলাল, ইন্দিরা, রাজীব, মনমোহনের জন্যই যে কোভিড বাড়ছে, তাদের জন্যই যে মানুষ মারা যাচ্ছে, সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা বা অপচেষ্টা করলেন। এখন পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে, দেশে অন্তত ৩৫ লক্ষ মানুষ মারা গেছেন, কিন্তু সরকারের বয়ানে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার, ভুল আর থামে না। ক’দিন আগে পিউ রিসার্চ সেন্টার একটা হিসেব দিল, তার আগে এরা কারা জেনে নিন, আমেরিকার এই সংস্থা তাদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলছে, Pew Research Center is a nonpartisan fact tank that informs the public about the issues, attitudes and trends shaping the world. We conduct public opinion polling, demographic research, content analysis and other data-driven social science research.

এনারা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করে, সমীক্ষা প্রকাশ করেন। তো তেমন এক সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে যে, ৩ কোটি কুড়ি লক্ষ মধ্যবিত্ত প্যান্ডেমিকের পরে গরীব হয়েছে, ঠিক গরীব নয় লো ইনকাম গ্রুপে চলে গেছে, আর ওই লো ইনকাম গ্রুপের ৩.৫ কোটি চলে গেছে দরিদ্র সীমারেখার তলায়, মানে তারা পুওর। আর দরিদ্রের সংখ্যা বেড়েছে ৭.৫ কোটি। ওদিকে গত চার বছরের মধ্যে কর্পোরেট আয় বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে যা আমাদের জিডিপির ২.৪% এবং মাত্র ক’দিন আগে সরকার জানালো, ডাইরেক্ট ট্যাক্স কালেকশন বেড়েছে ১০০%। মানেটা কী? মানে হল বড়লোক আরও বড়লোক হচ্ছে, আরও বেশি বিক্রি হচ্ছে বি এম ডবলিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ কার, আর গরীবরা আরও  গরীব হয়েই চলেছে। আর কতবার বলবো যে ঘন্টায়, প্রতি ঘন্টায় মুকেশ আম্বানির রোজগার ৯০ কোটি, গৌতম আদানির ৭০ কোটি আর আমাদের প্রধান সেবক, যিনি নাকি আবার ফকির, তাঁর সিকিউরিটির জন্য প্রতিদিন খরচ হয় ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এত ভুল, এত ভুল শোধরানো সম্ভব নয়, তাই আমাদের কেবল একটা ভুল শোধরাতেই হবে। প্রথমে বুঝতে হবে প্রকান্ড ভুল হয়েছে এরকম একজন মিথ্যেবাদী, অশিক্ষিত মানুষকে প্রধানমন্ত্রী করে, সেই ভুলটাকে বুঝতে হবে এই প্রধানমন্ত্রীর পারফরম্যান্স বিচার করে, প্রত্যেকটা ভুলের কথা জানতে হবে, তারপর ইনি এবং এনার সরকার যাতে না আসে, তার ব্যবস্থা করতেই হবে, কারণ ওটাই একটা পদ্ধতি আছে যা দিয়ে এই ভুল শুধরে নেওয়া যায়। আসুন আমরা ভুল শুধরে নিই, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, আমাদের এই ভুল শোধরাতেই হবে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

ক্যাফের মধ্যে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন, চাঞ্চল্য কড়েয়ায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
আগামিকাল মুর্শিদাবাদে সেলিমের পরীক্ষা, ১৩ মে বহরমপুরে অধীরের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team