কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আগে সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তেমন আমল দেয়নি। ফলে দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারাত্মকভাবে ভুগতে হচ্ছে সারা দেশকে। ইতিমধ্যে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে আছড়ে পড়েছে তৃতীয় ঢেউ। এ দেশেও তৃতীয় ঢেউ আসবে এটা স্পষ্ট। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কতটা প্রস্তুত সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
বিশেষজ্ঞদের সর্তকতা না-মানলে কী হতে পারে, দ্বিতীয় ঢেউয়ে টের পেয়েছে সারা দেশ। মোদি সরকারের এই ঢিলেমি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমালোচিত হয়েছে। দেশে এখন দ্বিতীয় ঢেউয়ের গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী। বাড়ছে আনলকিং প্রক্রিয়া। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে। কারণ এখনও পর্যাপ্ত টিকাকরণ হয়নি। অথচ সাধারণ মানুষ আবার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগের মতো বিধিনিষেধ ভাঙতে শুরু করেছেন।
অথচ গত এপ্রিল-মে মাসেই কোভিড সংক্রমণের মুখে কার্যত ভেঙে পড়েছিল দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। কোভিড শয্যার অভাব, ওষুধের অভাব, অক্সিজেনের অভাব, তার থেকে মৃত্যু সবই প্রত্যক্ষ করেছেন মানুষ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য কতটা প্রস্তুত দেশ? কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ভারতে টিকাকরণের মহাযজ্ঞ চলছে। যাকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টিকাকরণ কর্মসূচি। অথচ বাস্তব ছবিটা হল টিকার জোগানের অভাবে এখনও অনিয়মিত টিকাদানের দৈনিক হার। দৈনিক মোট সংখ্যার হেরফের দেখলেই বোঝা যায় টিকাকরণ কর্মসূচির আসল ছবিটা কী।
সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে, ভারতবর্ষে মোট যত সংখ্যক টিকা দেওয়া হয়েছে তা আমেরিকায় টিকাদানের সংখ্যাকে অতিক্রম করে গেছে। অনেকের মনে হতে পারে, তা হলে দেশ তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য আমেরিকার থেকে সুরক্ষিত। ছবিটা আদৌ তা নয় । ভারতবর্ষে ১৮ বছরের উপরে ব্যক্তিদের মোট সংখ্যার মাত্র ৬ শতাংশ টিকাকরণ হয়েছে। ১৮ বছরের নীচে যে বিপুল জনসংখ্যা দেশে রয়েছে তার টিকাকরণ এখনও শুরুই হয়নি। ফলে তৃতীয় ঢেউয়ে যারা আক্রান্ত হতে পারে তাদের সংখ্যা আমেরিকার থেকে বহুগুণ বেশি বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিছুদিন আগেও হাসপাতালে অক্সিজেন ও শয্যা পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন জুলাই-অগস্টে যেভাবে ট্যুরিস্ট স্পটে রুম পাওয়া যাচ্ছে না, সেটাও বিপদের হাতছানি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।