Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: চোরেদের সরকার
সম্পাদক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৫ জুন, ২০২১, ১০:০৫:২০ পিএম
  • / ৪৩৫ বার খবরটি পড়া হয়েছে

ক্লাস ওয়ানের ছেলেও জানে, ৪৬০০ কোটির থেকে ৪৬ লক্ষ অনেক কম। সব্বাই জানে, কিন্তু আমাদের সরকার জানে না, জেএনইউতে পড়াশুনো করলে কি হবে, আমাদের অর্থমন্ত্রীও এই হিসেব জানেন না, দেশের প্রধানমন্ত্রী তো জানেনই না, ওনার সাবজেক্ট ছিল এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স, দেশের তাবৎ ব্যাঙ্কের, তাবড় তাবড় শিক্ষিত, ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রিধারি, ব্যাঙ্ক বোর্ডের মেম্বাররা জানেন না, ব্যাঙ্কের অফিসাররা তো জানেনই না, দাঁড়ান একটু শুধরে নিই, বিদেশী ব্যাঙ্কের কর্তারা এ হিসেব খুব ভালো জানেন, আর দেশের প্রাইভেট ব্যাঙ্কের কর্তারা একটু একটু জানেন, আর দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তারা একফোঁটাও জানেন না। প্রশ্ন উঠবেই, এনারা যে জানেন না, তা আমি জানলাম কী করে? এত সহজ একটা অঙ্ক, ৪৬০০ কোটি বড় না ৪৬ লক্ষ বড়? এর উত্তর যে এঁদের জানা নেই, আসুন সেটা নিয়েই একটু আলোচনা করা যাক, আলোকপাত করা যাক।
ধরুন আপনি হাজারবার ফোন করার পর, একটা দরখাস্ত দিয়ে হোম লোন, গৃহ ঋণ নিলেন। ৪৬ লক্ষ টাকার গৃহঋণ। মাসে ৪২/৪৪ হাজার ইএমআই দিতে হচ্ছে। এমন সময় প্যান্ডেমিক এসেছে, চাকরি গেছে বা পে কাট হয়েছে। আপনাকে কিন্তু ইএমআই দিতেই হবে, না দিলে গুন্ডারা ফোন করবে, কিডনি বিক্রি করার হুমকি দেবে, তারপর ঘরে আসবে, পাড়া শুদ্ধু লোকের সামনে অপমান করবে, মারধরও করবে। ৪৬ ছেড়ে দিন, ৫/৬ লক্ষ টাকার গাড়ির লোনেও একই অবস্থা, মাঝরাস্তায় মেয়ে বৌকে নামিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যাবে গুন্ডারা, যদি আপনি পয়সা না দিতে পারেন। এই হল আপনার আমার মত মধ্যবিত্তের অবস্থা, গরীব চাষিরা তাঁর আগেই ফলিডল খেয়ে মরে, আরও গরীবরা ব্যাঙ্কের ভেতরে যায়ই না। জনধন যোজনার টাকা তোলে দালালরা, কাটমানি খায়। এসব সবাই জানে। এটা হল গল্পের একপিঠের চেহারা। এবার অন্যপিঠে কী চলছে। ইদানিং ব্যাঙ্কে হেয়ারকাট বলে একটা কথা চলছে, খুব চলছে। ভাববেন না যে ব্যাঙ্কের ম্যানেজাররা চুল কাটার ব্যবস্থা করেছেন বা চুল কাটার পয়সা দিচ্ছেন। এই হেয়ারকাট হল একধরণের ডিসকাউন্ট। মানে ধরুন কোনও কোম্পানি ৪৬০০ কোটি টাকা ঋণ, ধার নিয়েছে। আর পয়সা দিচ্ছে না। হাজারবার ফোন করলে ফোন ধরছে না, ধরলে কথা বলছে না। বললে বলছে, নেক্সট উইকে ফোন করুন। শেষ পর্যন্ত অফিসে আসলে সোজা ব্যাঙ্কের বড় কর্তার ঘরে ঢুকছে, কফি কাজু খেতে খেতে জানাচ্ছে দেশের অর্থনীতির খুউউউব খারাপ অবস্থা, কাজেই কোম্পানিরও, তার ওপর প্যান্ডেমিক, অতএব। ব্যাঙ্কের কর্তা এমন ১০/১৫/২০ টা মিটিং পর বলছে ঠিক আছে, আপনি অন্তত ৫০% দিন, বাকি ৫০% হল গিয়ে ওই হেয়ার কাট। মানে ডিসকাউন্ট। সেই কোম্পানির সিইও চলে গেলেন, পরে প্রস্তাব পাঠালেন যে ওই ৫০ টা বাড়িয়ে ৭০% করতে হবে, মানে ৪৬০০ কোটি টাকা ঋণের সুদ বাদ দিন, আসলের ৭০%, মানে ৩২২ কোটি টাকা ফেরত দেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, আপাতত ১০ কোটি টাকা দিলেন। তো বাকি ৪২৭৮ কোটি টাকার কী হবে? ওঁ গঙ্গা। গেলো, জণগণের ৪২৭৮ কোটি টাকা গেলো জলে, সে টাকা তো আমার আপনার। সেই কোম্পানি ততদিনে আবার একটা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বড়কর্তার সঙ্গে মিটিং করছেন, বড়কর্তার শালী শালাজ বৌ বাচ্চা সমেত ইউরোপ ট্যুরের ব্যবস্থা হয়েছে, তিনি এবার ১০ হাজার কোটি টাকার নতুন ঋণের দরখাস্ত করছেন, সে দরখাস্ত গ্রহণও করা হবে। এই হল সংক্ষেপে হেয়ার কাটের গল্প, চুল কাটার গল্প শুনে মধ্যবিত্তের চুল খাড়া হয়ে যাবে, গরীবদের এ কথা বোঝানোও যাবে না। ওরা বলবে এ আবার হয় নাকি?
৩০০ টাকা ধারবাকিতে লাঠি ছুরি বেরিয়ে পড়ে সেখানে। তো এই হেয়ার কাট মানে আমাদের টাকায়, পাবলিকের টাকায় মোচ্ছবের কিছু নতুন তথ্য সামনে এল, আসুন আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি। তারও আগে এমন দেনায় ডুবে থাকা এবং অজস্র হেয়ার কাট পাওয়ার পর অনিল আম্বানির মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছিল মাত্র ৭৩৩ কোটিতে, এরমধ্যে হাজার ১৩ কোটি টাকা গলে গেছে পাবলিকের, উনি আপাতত বেশ গরীব, অন্তত মার্চ মাসের হিসেব তো তাই বলছে, মাত্র ৭৩৩ কোটি। এরপর গিলিগিলি হোকাস ফোকাস, মে মাসে এই মন্দার মধ্যেই তা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৮৯০ কোটিতে, আড়াই তিন মাসে বাড়লো কত? ৩১০০ কোটি টাকার ও বেশি, দাঁড়ান আরও আছে, এই ১৮ জুন, সর্বশেষ পাওয়া খবর বলছে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে, ৭৮৬৬ কোটি টাকা। সাড়ে তিন মাসে সম্পদ বৃদ্ধি ৭১০০ কোটি টাকা। দেশের মানুষের আয় কমছে, মধ্যবিত্ত গরীব হচ্ছে, গরীব আরও গরীব, আর কিছুদিন আগে দেউলিয়া অনিল আম্বানির সম্পদ বাড়ছে সাড়ে তিন মাসে মানে ১০৫ দিনে ৭১০০ কোটি টাকা, দিনে ৬৭ কোটি টাকা। মানে ঘন্টায় প্রায় আড়াই কোটি টাকার মত। ওই যে হেয়ার কাট। তিনি লোন নিয়েছেন ব্যাঙ্কের থেকে, তারপর ফেরত দিতে পারেননি, সেই ঋণ মাফ করা হয়েছে, সে ঋণের দায় আম জনতার ঘাড়ে। আবার তিনি বড়লোক হয়ে উঠছেন, ক’দিন পরেই আবার ধনীতমদের তালিকায় নাম উঠবে, সবকা সাথ সবকা বিকাশ।
আসুন আরও তথ্য সামনে রাখা যাক, বেদান্ত গ্রুপ, এনারা ভিডিওকন গ্রুপকে টেকওভার করলেন, বাংলায় বললে মানে দাঁড়ায়, কিনে নিলেন। এদিকে ভিডিওকনের কাছে ব্যাঙ্ক পায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা, বেদান্ত গ্রুপ জানিয়েছে ২৯৬২ কোটি টাকা দিতে পারবে, মানে দাঁড়াল, আপনি ৪৬ লক্ষ টাকা বাড়ি কেনার জন্য নিয়েছিলেন, ব্যাঙ্কে গিয়ে বললেন লাখ আড়াই তিন দেবো, নিলে নিন, না হলে যান। ব্যাঙ্ক কী করবে? আসুন আর একটা উদাহরণ দিই, শিভা ইন্ডাস্ট্রিস, এরা দক্ষিণের কোম্পানি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল রুফিং, পাম্প মোটরের কাজ করে, এরা ব্যাঙ্ককে বলেছে, ভাই ৩১৮ কোটি টাকা দিতে পারবো, নেবে? ব্যাঙ্ক রাজি হয়েছে, এই টাকা নিয়ে তাদের বাকি ঋণ মাফ করে দিতে। কত লোন নিয়েছিল? মানে ধার কত ছিল? ৪৮৬৩ কোটি টাকা। মানে ৪১৫০ কোটি টাকা মাফ, কাদের টাকা? আমার আপনার। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। আর এ পর্যন্ত ওই ৩১৮ কোটি টাকার কত টাকা শিবা ইন্ডাস্ট্রিজ দিয়েছে? ৫ কোটি টাকা। ব্যস। আপনি যদি এটা করতেন? একজন মধ্যবিত্ত মানুষ যদি এটা করতো? আর মজার কথা হচ্ছে, এগুলো কোন ব্যাঙ্ক? রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক। মানে আমার আপনার পয়সা নিয়ে নয় ছয় হচ্ছে। আপনি গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন, একজন ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করার জন্য, তিনি তখন এইরকম কোনও ফড়ের সঙ্গে হরিনাম সংকীর্তন করছেন। আপনার তিন লাখ, দু লাখ টাকার লোন আদায়ের জন্য আপনাকে বৌয়ের গয়না, বাড়ি বিক্রি করতে হবে, চক্রবৃদ্ধি হারে সেই সুদের অঙ্ক কষা হবে আর কোটি কোটি টাকা মাফ হয়ে যাবে তাঁদের, যাদের কোটি কোটি টাকা আছে। ৮ লক্ষ কোটি টাকা গত ১০ বছরে এইভাবেই উবে গেছে, সারা দেশের মানুষকে বিনামূল্যে কোভিশিল্ড ভ্যাক্সিন দেবার খরচ কত? ৪০ হাজার কোটি টাকা, ওদিকে ৮ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ খাতা থেকে মুছে ফেলা হয়েছে, তাকে হেয়ার কাট বলা হচ্ছে, রিটন অফ বলা হচ্ছে, আসলে যেটাকে ডাকাতি বলা উচিত। এসার গ্রুপকে ৫৪ হাজার কোটি টাকার বদলে ৪২ হাজার কোটি দিতে হয়েছে, হেয়ার কাট ২৩ শতাংশ, ভূষণ স্টিলকে ৫৭ হাজার টাকার বদলে ৩৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে, হেয়ারকাট ৩৮%, জ্যোতি স্ট্রাকচারকে ৮১৭৯ কোটি টাকার বদলে ৩৬৯১ কোটি টাকা দিতে হয়েছে, হেয়ারকাট ৫৫%,ইলেক্ট্রো স্টিলসকে ১৩৯৫৮ কোটি টাকার বদলে ৫৩২০ কোটি টাকা দিতে হয়েছে, হেয়ারকাট ৬২%, মনেট ইস্পাতকে ১১৪৭৮ কোটি টাকার বদলে ২৮৯২ কোটি টাকা দিতে হয়েছে, হেয়ারকাট ৭৫%, অলোক ইন্ডাস্ট্রিস, মুম্বইতে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি, এদেরকে ৩০২০০ কোটির বদলে ৫০৫২ কোটি টাকা দিতে হয়েছে, হেয়ার কাট ৮৩ % আর ভিডিওকনকে ৪৬০০০ কোটি টাকা ঋণ মেটাতে দিতে হচ্ছে ২৯০০ কোটি টাকা, হেয়ারকাট ৯৪ %। সবকা সাথ সবকা বিকাশ। এরা জেলের বাইরে, দিব্যি পার্টি করছে, চার্টার্ড ফ্লাইটে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এদের বিভিন্ন দেশে ভিলা আছে, এদের ছেলেমেয়েরা আরও নতুন কায়দায় চুরি করা শিখছে। আচ্ছা এসব জানেন না মোদিজি? আমাদের পরধান সেভক? চওকিদার? চায়ওয়ালা প্রধানমন্ত্রী? যিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন কালা ধন বার করবো এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে? তিনি বসে আছেন, সাত বছর শেষ, একমাত্র রামমন্দিরের ভূমিপূজন ছাড়া কোনও কাজই তিনি করেননি, সেখানেও জমি ঘাপলা, বলবো সে গল্পও একদিন, আজ এই পর্যন্তই।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team