যত কিছু খাওয়া লেখে বাঙালির ভাষাতে/জড় করে আন সব, থাক সেই আশাতে৷
সেই কবে ‘খাই খাই’ ছড়ায় লিখেছিলেন সুকুমার রায়৷এ বার সেই যত কিছু খাওয়া-কে এক ছাদের নীচের এনে ফেলছে রাজ্য সরকার৷তবে ফরাসিদের ব্যাঙ, জাপানের ফড়িংয়ের ঘণ্ট, কিংবা চিনাদের আরশোলা এখানে নেই৷নেই দারোগার ঘুষ খাওয়া কিংবা ছেলেদের খাবি খাওয়া৷এখানে খাওয়া বলতে বর্ধমানের সীতাভোগ কিংবা নবদ্বীপের লাল দই৷আপনার মুলুকে বসেই মিলবে কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া অথবা বিষ্ণুপুরের নিকুতি৷
বাঙালি মানেই খাদ্যরসিক। এ-কথা কে না জানে। একই সঙ্গে বিশ্বের দরবারে বাঙালির খাবারের কদরও রয়েছে যথেষ্ট। তবে সবসময় জিভে জল আনা এইসব খাবার পাওয়া যাবে কোথায়? ভাবুন তো যদি এ-রকম হতো? কলকাতায় বসেই দুপুরের পাতে তুলাইপাঞ্জি চালের ভাত, অথবা খাবার শেষে গঙ্গারামপুরের দই বা কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া৷ আহা মন্দ হতো না! আর কী দারুণই না হতো যদি এই সবই হাজির থাকতো আপনার হাতের কাছেই।
এ-সবের জন্যে আর জেলায় জেলায় ছুটতে হবে না। গুপি গাইন বাঘা বাইনের জুতোটা আপনার নাগালেই৷ এ বার সব কিছুই হাজির হয়ে যাবে আপনার শহরে। আপনার হাতের নাগালে জেলার সব রকমের বিশেষ খাবার আনতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। বেসরকারি বৃহৎ বিপণির ধাঁচে তৈরি হবে রাজ্যের নতুন ঝাঁ চকচকে এই দোকান। খাদ্যরসিকদের কথা ভেবে কলকাতা, জলপাইগুড়ি ও বালুরঘাটে প্রাথমিকভাবে তিনটি আউটলেট চালু হবে৷ কৃষি বিপণন দফতরের উদ্যোগে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘বাংলার প্রতিটি জেলাই কোনও না কোনও খাবারের জন্য বিখ্যাত। আমরা এই সব কিছুকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে চাইছি। বাংলার মানুষ খাদ্যরসিক। তবে সব সময় সবার পক্ষে বাইরে গিয়ে খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না। তাই তাঁদের হাতের নাগালে এখন এই খাবার নিয়ে আসার জন্যই এই পরিকল্পনা। প্রাথমিকভাবে তিনটি জায়গায় এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’ আস্তে আস্তে তা রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় বাড়ানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই কাজের জন্য জায়গা চিহ্নিতকরণের কাজও শুরু করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
এই আউটলেটে এক ছাতার তলায় উত্তর থেকে দক্ষিণ সব জেলার বিখ্যাত খাবার পাওয়া যাবে। তা সে ফেলু মোদকের মিষ্টি হোক বা বিষ্ণুপুরের নিকুতি। রায়নার গোবিন্দভোগ চাল বা কাটোয়ার ডাঁটা। একই ছাতার তলায় পাওয়া যাবে দার্জিলিংয়ের চা-ও। তা হলে আর দেরী কিসের, তালিকা তৈরি করে ফেলুন। সূর্য মোদকের জলভরা তালশাঁস না বর্ধমানের সীতাভোগ, নাকি মিহিদানা কোনটা দিয়ে শুরু করবেন?
এত কিছু খেয়েও যদি নাহি ওঠে মনটা. খাও তবে কচুপোড়া, খাও তবে ঘণ্টা৷
বালাই ষাট! তা হবে কেন?