মুর্শিদাবাদ: অর্জুন সিং (Arjun Singh), সায়ন্তিকার পর এবার বিদ্রোহ ঘোষণা ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের ( Humayun Kabir)। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে (Baharampur Lok Sabh) নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়ানোর হুমকি দিলেন পোড় খাওয়া এই তৃণমূল নেতা। মঙ্গলবার তিনি বলেন, বহরমপুর কেন্দ্রে বাইরে থেকে ভাড়া করে আনা ইউসুফ পাঠানকে জেলার মানুষ মেনে নেবে না। ভোটের দিন ঘোষণা হোক, মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন জানানো হোক। তারপর আমার নির্দল হয়ে বহরমপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর দাবি, ইউসুফ পাঠানের ( Yusuf Pathan) মতো বহিরাগত প্রার্থীর পক্ষে অধীর চৌধুরীকে হারানো সম্ভব হবে। মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের হুমায়ুনকে সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনও তো বহিরাগত প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছেন। দল ইউসুফ পাঠানের মতো আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়কে মুর্শিদাবাদে পাঠিয়েছে। এর জন্য আমাদের গর্ব হওয়া উচিত।
হুমায়ুন বলেন, এর জন্য দল যদি আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, নেবে। তৃণমূল নেতৃত্বের তো সুপ্রিম পাওয়ার রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে দল, সাসপেন্ড করতে পারে। করুক। তাতে আমার কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। তার জন্য আমি কারও কাছে দরবারও করতে যাব না। ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, জেলার কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে একতরফা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। আমার সঙ্গেও কথা বলেনি দল। জেলার মানুষ বলছে, বহরমপুরে ইউসুফ পাঠানকে ভোট দেবে না। আমি মানুষের দরবারে যাব। হুমায়ুন কবীর মানুষের জন্য দল করে। আমি আবার মানুষের কাছে যাব। আগেও গিয়েছি। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের সময় সৌমিক হোসেন, শুভেন্দু অধিকারীরা আমার পিছনে লেগেছিল। আমি নির্দল হিসেবে তৃণমূল প্রার্থীর জামানত জব্দ করেছিলাম। নির্দল হিসেবে আমরা কী ক্ষমতা, মানুষ আমাকে কতটা ভালোবাসে তা দেখিয়ে দেব।
আরও পড়ুন: অভিমানী অর্জুন, অফিস-ঘর থেকে সরল মমতা-অভিষেকের ছবি
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন বলেন, আমি বিজেপিতে যাচ্ছি না। অন্য কোনও দলেও যাচ্ছি না। আমার স্ট্যান্ড পরিষ্কার। তৃণমূলে আছি। তৃণমূলে থাকার চেষ্টা করেছিলাম। এখনও করছি। দল ব্যবস্থা নিলে নেবে। আমি তার জন্য তৈরি আছি। তাঁর কথায়, তৃণমূল মা, মাটি, মানুষের কথা বলে। তারা মানুষের কথা শুনবে না কেন। জেলার মানুষ কী চাইছে, সেটা না শুনলে হবে কেন।
এর আগেও হুমায়ুন দলের বিভিন্ন নীতির বিরোধিতা করেছেন, দলবিরোধী কথা বলেছেন। খোদ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় বৈঠকে তাঁকে ধমক দিয়েছেন। কিছুদিন চুপ থাকার পর আবার দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার এই বর্ণময় চরিত্র। এক সময় কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন হুমায়ুন। বহুবার এ দল, ও দলের জার্সি বদলেছেন। এখন তিনি ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। সদ্যপ্রয়াত ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলির সঙ্গেও তাঁর বিরোধিতা ছিল। তবে বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থী প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা ইউসুফ পাঠানের বিরোধিতায় নির্দল হিসেবে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন। তবে জেলার এক তৃণমূল নেতা বলেন, হুমায়ুনের হুমকিকে এখন কেউ পাত্তা দেয় না। দিদি ডেকে এক ধমক দিলেই ও ভুল স্বীকার করে নেবে।
অন্য খবর দেখুন