সিওল: সামরিক বাহিনীতে দেশের পুরুষদের বাধ্যতামূলকভাবে যোগদান করা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় (South Korea) কঠোর নীতি চালু (Strict Policy) রয়েছে। এই নীতি অনুসারে, ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সি সকল সক্ষম পুরুষদের দেশের সশস্ত্র বাহিনীতে (Armed Forces) অন্ততপক্ষে ১৮ থেকে ২১ মাসের জন্য যোগ দেওয়া আবশ্যক। শোনা যাচ্ছে, এই নিয়মে শিথিলতা আনতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়া প্রশাসন (South Korea Administration)। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দেওয়ার রিপোর্ট অনুসারে, সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক পরিষেবা (Mandatory Service) প্রদানে সেই সমস্ত পুরুষদের ছাড় দেওয়া হতে পারে, যাঁদের ৩০ বছর হওয়ার আগেই তিন বা ততোধিক সন্তান রয়েছে বা হবে।
আরও পড়ুন: Tirupati Hundi collections | মোদানি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়, ফের মোদিকে কংগ্রেসের নিশানা
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বর্তমানে দেশে শিশু জন্ম হার (Child Birth Rate) নিম্নমুখী । গত মাসেই এই নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রজনন হার (Fertility Rate) কমেছে, এই পতন সর্বকালীন রেকর্ড। সেই কারণে দেশের সরকার ভীষণ চিন্তিত। তাই ভাবনা-চিন্তা চলছে, দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জনগণকে উৎসাহিত (Encourage) করতে হবে। তারই অঙ্গ হিসেবে তিন বা ততোধিক সন্তান ধারণের জন্য দম্পতিদের (Couples) আহ্বান জানানো হতে পারে।
গত ২২ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ান সংবাদপত্র চোসুন ইলবো (Chosun Ilbo, South Korean Newspaper) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দল পিপল পাওয়ার পার্টি (People Power Party) দেশে শিশু জন্মের বৃদ্ধির (Increasing Births) উদ্দেশ্যে অপ্রচলিত উপায় (Unconventional Means) খুঁজছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি, পর্যালোচনা চলছে।
সিওলে অবস্থিত সেন্টার ফর মিলিটারি হিউম্যান রাইটস ইন কোরিয়া (Seoul-based Center for Military Human Rights in Korea)-র কোঅর্ডিনেটর (Coordinator) চো কিউ-সুক (Cho Kyu-suk) এবিষয়ে জানিয়েছেন, এই ধরনের প্রস্তাব দেশের তরুণদের জন্য প্রণোদনা অর্থাৎ ইনসেন্টিভের (Incentive) মতো কাজ করবে এবং শিশু জন্মদানের প্রতিবন্ধকতাও দূর হবে।
আরও পড়ুন: Tiljala Incident | নবরাত্রিতে নরবলি, স্ত্রীর সন্তানলাভে শিশুকন্যা খুন তান্ত্রিকের নির্দেশে
সমালোচনা ও বিতর্ক
যদিও সরকারের এই চিন্তাভাবনা নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশে। বলা হচ্ছে, “কিশোর-কিশোরীদের (Teenagers) কি শিশু জন্ম দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে?”, “সামরিক বাহিনীতে যোগদান এড়াতে কার তিনটি সন্তান হবে?” সোশ্যাল মিডিয়ায় এই প্রশ্ন অনেকেই করেছেন। সেদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট সেই কথাই বলছে। এটাও বলা হচ্ছে, পরিবার বৃদ্ধি (Family Expand) করার ফলস্বরূপ তরুণদের অবাঞ্ছিত খরচ (Unwanted Expenditure) বহন করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এই চিন্তাভাবনাকে বিপজ্জনক (Dangerous) এবং হাস্যকর (Laughable) বলে অভিহিত করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব সিউলের (University of Seoul) পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এরিন হায়-উন কিম (Erin Hye-Won Kim, Associate Professor of Public Administration) বলেছেন, “জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা দেশের স্থিরতার জন্য আমরা জনগণকে সন্তান ধারণ করতে বলতে পারি না- আমাদের প্রজনন ক্ষমতাকে এভাবে হাতিয়ার হিসেবে ভাবা উচিত নয়।” অনেকেই বলছেন, যে সমস্ত মহিলা কাজ করেন, তাঁদের উপর প্রচুর চাপ পড়বে এর ফলে। কেন না একদিকে বাচ্চা সহ তাঁদের ঘরের কাজ সামলাতে হবে এবং অন্যদিকে পেশাদারি জগতেও সমানভাবে তাঁদেরকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।