কবি জীবনানন্দ দাশের উপর তৈরি ছবি ‘ঝরা পালক’ শেষ হচ্ছে এক ‘নির্মম সত্য’ সংলাপ দিয়ে। যেটি শোনা যাবে জীবনানন্দের স্ত্রী ‘লাবণ্য’র ভূমিকায় যিনি অভিনয় করেছেন সেই জয়া আহসানের মুখে। জীবনানন্দর মৃত্যুর পর স্ত্রীর চিরকালীন না পাওয়ার ক্ষোভ,জীবনযন্ত্রণার অসহায়তা সমস্ত কিছু এই সংলাপের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে। ‘বাংলা সাহিত্যকে তোমার দাদা অনেক কিছুই দিয়ে গেলেন কিন্তু আমার জন্য কি রেখে গেলেন?’ অনেকের মতেই কবি জীবনানন্দ দাশের বায়োপিক ‘ঝরা পালক’। ছবিতে জীবনানন্দ দাশের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা ব্রাত্য বসু। দীর্ঘদিন পর আগামী ২৪ জন মুক্তি পেতে চলেছে ছবিটি। কবি পত্নীর চরিত্রে অভিনয় করে জয়া আহসান বলেছেন,’কবি-পত্নী হওয়া বেশ কঠিন। তাও আবার জীবনানন্দ দাশের মতন কবির পত্নী। শুরুতে একটু টেনশন হয়েছিল। আর তাছাড়া ব্রাত্য তা যথেষ্ট বড় মাপের অভিনেতা। নিজের মতন করে চেষ্টা করেছি লাবণ্যপ্রভাকে ফুটিয়ে তোলা’। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী জয়াকে প্রশ্ন করা হয়; একজন শিল্পীর স্ত্রী হওয়া যতটা কঠিন শিল্পীর স্বামী হওয়াটাও ততটাই কঠিন কী? উত্তরে তিনি বলেন,’আমার স্বামী নেই,কি করে বলবো! তবে এটা মনে হয় স্বামী বা স্ত্রী নয় পার্টনার হওয়াটা খুবই কঠিন। প্রত্যেক শিল্পীর জীবনে কত রকমের ওঠাপড়া, ঝড় থাকে। সেগুলো কে সামাল দিতে একটা শক্ত হাতের প্রয়োজন হয়’। পরিচালক সায়ন্তন মুখার্জি ঝরাপালক ছবিতে সিনেমাকে একটা ক্যানভাস এর মত ব্যবহার করে জীবনানন্দের জীবন,তাঁর ভাবনা,দুঃখ-কষ্ট আবেগ এবং আশপাশের মানুষজনকে আঁকার চেষ্টা করেছেন। এই ছবির কেন্দ্রে রয়েছে কবি জীবনানন্দ দাশের দাম্পত্য জীবনের কাহিনী। লাবণ্য ও জীবনানন্দের সাংসারিক টানাপড়েনের গল্প বলা যেতে পারে। পাশাপাশি সেসময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপট কবি মহলে জীবনানন্দ দাশের অবস্থান এবং কোভিদ জীবনে পাওয়া ও না পাওয়ার দ্বন্দ্ব। বাংলা সাহিত্যের :নির্জনতম কবি’ হিসেবে পরিচিত জীবনানন্দ দাশের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম অনুসারে এই ছবির নাম রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের শেষের দিকে এই ছবির শুটিং শুরু হয়েছিল। তারপর নানা কারণে ছবি মুক্তির তারিখ ক্রমাগত পিছিয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল করণা মহামারীর থাবা। ছবিতে তরুণ বয়সের জীবনানন্দের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাহুল অরুণোদয় ব্যানার্জি। এরা ছাড়াও ছবিতে অভিনয় করেছেন দেবশংকর হালদার,সুপ্রিয় দত্ত,বিপ্লব ব্যানার্জি,কৌশিক সেন প্রমুখ।