Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
Fourth Pillar | দেশকে টুকরো টুকরো করবেন এই মোদি–শাহ
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  শ্রেয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪, ০৪:৪৫:৫২ পিএম
  • / ৩৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • শ্রেয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

এই দুনিয়ায় দু’ ধরনের সরকার আছে, আমি সরকারের গঠন নিয়ে বা বলা যাক কাঠামো নিয়ে কথা বলছি। ১) যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ২) কেন্দ্রীয় সরকার।

প্রথমটা হল বহু অঞ্চল, বহু রাজ্য নিয়ে এক রাষ্ট্রীয় কাঠামো, যেখানে প্রত্যেকটা অঞ্চলের নিজেদের পতাকা আছে, অভ্যন্তরীণ নিয়ম কানুন আছে, এমনকী নিজেদের আলাদা হয়ে যাওয়ার অধিকারও আছে। এরকম একটা কাঠামোকে বলা হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার। উদাহরণ অধুনা বিলুপ্ত সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্র, আজারবাইজান থেকে জর্জিয়া হয়ে বেলারুশ, উজবেকিস্তান। প্রত্যেকের আলাদা পতাকা ছিল, সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলাদা হওয়ার ক্ষমতাও ছিল, সেই কারণেই ১৯৮৯ থেকে সোভিয়েতের এইসব অংশগুলো সংবিধান মেনেই আলাদা হতে পেরেছিল। বা ধরুন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কথা। সেও একইরকম। যেমন ধরুন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে মারিজুয়ানা, মারিজুয়ানা জানেন তো? এক ধরনের নেশার জিনিস, তো সেই মারিজুয়ানা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় যদি যান তাহলে কেউ কিচ্ছুটি বলবে না, আসুন বসুন তামুক খান জল খান গোছের ব্যাপার। কিন্তু যদি আলাবামাতে যান তাহলে কেলেঙ্কারি, জেলে যেতে হতে পারে। আমাদের দেশেও আছে, বিহারে গুজরাতে মদ চলবে না, বাংলায় কেরালায় দিব্যি চলবে। তবে গুজরাতে যদি আপনাকে ডাক্তার লিখে দেন তাহলে চলবে, মানে ডাক্তার লিখে দেবেন যে মদ না খেলে এই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়বে, অতএব আপনি ছাড় পাবেন, বিহারে ডাক্তারবাবুর কথাও শুনছে না। কিন্তু আমাদের রাজ্যগুলোর আলাদা পতাকা নেই, কাশ্মীরের ছিল, ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পর সেটাও গেছে। কিন্তু ইদানিং বহু সরকারের নিজস্ব সিম্বল তৈরি হচ্ছে, বহু সরকারের রাজ্য সঙ্গীত তৈরি হচ্ছে। কেন হচ্ছে? পরে সে আলোচনাতে আসব। আমেরিকার প্রত্যেকটা ফেডারেল সরকারের নিজেদের পতাকা আছে, যেমনটা সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রে ছিল।

দ্বিতীয়টা হল কেন্দ্রীয় সরকার, ধরুন চীন, কিউবা, বার্মা, উত্তর কোরিয়া। কেন্দ্রে একটা সরকার আছে, তারাই নিয়ম কানুন পাশ করে, তারাই লাগু করে, নিয়ম এক, আইন এক, শাসক এক, সংবিধান এক।

এবার আমাদের দেশের কথায় আসি। আমাদের দেশে একদিকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আছে, আবার একটা শক্তিশালী কেন্দ্রও আছে। রাজ্যের হাতে কিছু অধিকার আছে, কিছু বিষয় আছে যে বিষয়ে তাদের কথাই শেষ কথা, আবার কেন্দ্রের কাছে কিছু বিষয় আছে যা তাদের বিষয় সেখানে তারাই শেষ কথা বলবে। এখানেই শেষ নয়, কিছু বিষয় আছে যা নিয়ে দুজনেই আইন তৈরি করতে পারে নিজেদের মতো লাগুও করতে পারে। আর আইন তো জানেন এক অদ্ভুত জিনিস, আইন কোনও অজর অমর অক্ষয় বস্তু নয়, আইনকে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হবে আইন সেভাবেই চলবে। এইখানেই গন্ডগোল। আমাদের সংবধান রচনা যাঁরা করেছিলেন, তাঁদের মাথায় ছিল আমাদের দেশের বাস্তব পরিস্থিতি। এত ভাষা, এত ধর্ম, এত বৈচিত্র্য সর্বত্র। তাঁরা বুঝেছিলেন যে চাপিয়ে দিতে গেলেই কেলেঙ্কারি হবে। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে যেমন জোর দিয়েছিলেন, তেমনই একটা শক্তপোক্ত কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করার কথাও বলেছিলেন। এটা আমাদের সংবিধান পড়লে স্পষ্ট হবে। কংগ্রেস দল নীতিগতভাবে এ ধারণার বিরোধিতা করেনি, কিন্তু বহুবার যুক্তরাষ্ট্রীয় ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই এমন কাজ করেছে, জরুরি অবস্থার কথাই ধরুন না কেন। কিন্তু এই যুক্তরাষ্ট্রীয় ধারণার বিরুদ্ধে কংগ্রেস দল বলেনি, দেশের অন্যান্য দলও এর বিরুদ্ধে বলেনি আর আঞ্চলিক দলগুলো তো যুক্তরাষ্ট্রীয় অধিকার নিয়েই গড়ে উঠেছে। একমাত্র ব্যতিক্রম বিজেপি। তারা সংবিধানের এই যুক্তরাষ্ট্রীয় অংশটি মুছে ফেলে এক শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করার পক্ষে। তারা দেশে প্রেসিডেন্সিয়াল সিস্টেম লাগু করার পক্ষে, তাদের আদর্শ ও দর্শন এই কথা বলে, সোচ্চারে বলে। লক্ষ করে দেখুন তারা ইতিমধ্যেই নির্বাচনী লড়াইটাকে মোদি বনাম না মোদিতে এনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সারা দেশে এক আইন এক সংবিধান, এক ভাষা এসবের কথা বলেই যাচ্ছে। সংবিধান বলছে আমাদের কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই। হিন্দি মোটেই রাষ্ট্রভাষা নয়, কিন্তু বিজেপি বারবার সচেতনভাবেই এই বিতর্ককে উসকে দিচ্ছে। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়া ছিল এই দর্শনেরই অঙ্গ। বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ কি বুঝতে পারছেন না? বুঝছেন, আর বুঝছেন বলেই তো দক্ষিণে রাজ্যের ক্ষমতা হারাচ্ছে বিজেপি। সেই প্রশ্নের সামনে আর একবার আমরা সবাই। দুটো বিষয়কে কেন্দ্র করে। প্রথমটা হল রাজ্যপাল। এমনিতেই এই সাদা হাতি নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। শুরু থেকেই রাজ্যপাল কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের যোগসেতুর চেয়ে বেশি কেন্দ্র সরকারের হয়ে কাজ করেছে। এখন সেই খেলা আরও নগ্ন। কেরালা, পুদুচ্চেরি বা আমাদের বাংলার দিকে তাকান একবার। কেরালায় আরিফ মহম্মদ খান সরাসরি রাজনৈতিক তরজায় নেমে পড়েছেন। রোজ মিডিয়া ডেকে কেন সিএএ ভালো, কেন এনআরসি দরকার, কেন কংগ্রেস বা সিপিএম আসলে দুর্নীতিগ্রস্ত এক দল এসব নিয়ে বলেই চলেছেন। অথচ তিনি নাকি রাজনীতি ছেড়েই দিয়েছেন। ওধারে রাজ্যে রাজ্যে রাজ্যপাল আর মুখ্যমন্ত্রীর কাজিয়া কলতলার ঝগড়াতে নেমেছে। একজন অন্যজনের কাগজ সবার সামনে ছিঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছেন। এবং পশ্চিমবঙ্গ। বাংলায় ধরমবীরের সময়ের থেকেও খারাপ অবস্থা। ধনখড়ের সময়টা ভাবুন, রাজ্যপালকে জোর করে বিধানসভায় ঢুকতে হচ্ছে, ছাত্ররা তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দিচ্ছে না, উনি কার্জনের টেবিলে বসে বাঙালিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, পাড়ার যোগব্যায়ামের অনুষ্ঠানের গিয়ে সিএএ-র কথা বলছেন। তিনি গেলেন তো এলেন বোস, সে আবার আরেক মহামহিম। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল কাক ডাকার আগে দফতর খুলে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীকে শপথ পড়িয়ে দিচ্ছেন। এবং মনে করার কোনও কারণ নেই যে এগুলো এমনি এমনি হচ্ছে। এর পিছনে পাকা মাথা তো কাজ করছেই।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | যে ৭টা প্রশ্নের উত্তর না পেলে মোদিজির গদি নড়ে যেতে পারে

বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে রীতিমতো সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। পিনারাই বিজয়ন তো সূর্য মিশ্র বা বিমান বসু নন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমেত ১১ জন মুখ্যমন্ত্রীকে একজোট হতে আবেদন জানাচ্ছেন। সাংঘাতিক সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন রাজ্যপালের নির্দিষ্ট ভূমিকা আছে। তাহলে আপাতত রাজ্যের সঙ্গে এই সংঘাত চলবে। বিজেপি সেটা চায়। বিজেপি একটা এসপার ওসপারের খেলায় নেমেছে। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে চুরমার করে একটা কেন্দ্রীয় সরকার, রাষ্ট্রপতি ধাঁচের ব্যবস্থা, এক ভাষা এক আইন এক দেশ চায়। এবং দলে তাদের এমন কোনও সুবিবেচক নেই বা থাকলেও তারা বোঝানোর মতো অবস্থায় নেই যে এরকম একটা চেষ্টা দেশটাকে রসাতলে নিয়ে যাবে। প্রবল প্রতিরোধ হবে, বিদেশে মুখ পুড়বে, পোড়া শুরু হয়ে গেছে। কেবল তাই নয় এ ধরনের আগ্রাসী মনোভাবের ফলে বিচ্ছিন্নতাবাদ জন্ম নেবে। বিভিন্ন রাজ্য যে তাদের নিজেদের সিম্বল, নিজেদের রাজ্য সঙ্গীত নিয়ে মাতামাতি করছে, বিভিন্ন রিজিয়নে ভাষাভিত্তিক দাবি উঠছে, এগুলো আপাত নিরীহ মনে হলেও এরই পেছনে লুকিয়ে আছে এক সাংঘাতিক প্রবণতা। এসবের সামান্য ধারণা থাকলে বিজেপি দু’ পা পিছিয়ে ভাবার চেষ্টা করত কিন্তু তারা জেনে গেছে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতার ঝটকা দিয়েই সংবিধানটাকে তাদের মত করে তৈরি করে নিতে হবে।

এর সঙ্গে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো আছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তার আগে একটা গল্প বলি। অনেকে জানেন, অনেকে জানেন না। গল্পটা হল স্বর্গে ব্রহ্মার কাছে সব দেবতারা গিয়ে হাজির হয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য, চিত্রগুপ্ত হিসেব রাখতে পারছেন না। পৃথিবীতে যেখানে সেখানে যখন তখন মানুষ মিথ্যে বলছে, ধরা যাচ্ছে না, কী করা যায়? ব্রহ্মা সব শুনে বিশ্বকর্মাকে ডেকে একটা যন্ত্র তৈরি করালেন। সে যন্ত্র চিত্রগুপ্তের দফতরে টেবিলে রাখা থাকল। যখনই পৃথিবীতে কেউ মিথ্যে কথা বলছে তখনই বেজে উঠছে যন্ত্র আর অন্য ধার থেকে ছেপে বার হচ্ছে যে বলছে তার নাম আর কোথা থেকে বলছে তার ঠিকানা। সবাই খুশি। ঘণ্টা বাজল, জানা গেল নিউইয়র্কে ট্রাম্প প্রেস কনফারেন্সে কথা বলছেন। সেখানে সবার নাম আসে, মাঝেমধ্যে ১৫-২০ মিনিট ধরে বাজে। কং নেতা, বিজেপি নেতা, উত্তর কোরিয়ার কিম জং বা ব্রাজিলের বলসনারো থেকে বহু রাজনৈতিক নেতাদের নাম আসে, ডাক্তার মোক্তার অধ্যাপক সাংবাদিকের নাম আসে। চিত্রগুপ্তের সন্দেহ হল, তিনি ব্রহ্মাকে ফোন লাগালেন। স্যর, সবার নাম আসছে কিন্তু নরেন্দ্র মোদিজির নাম আসছে না কেন? মানে উনি কি এক্কেবারেই মিথ্যে বলেন না। ব্রহ্মা বললেন, দূর বোকা উনি সবসময়েই মিথ্যে বলেন বলে ওঁর নামটা আমি বাদ দিয়ে রেখেছি। না হলে যন্ত্রটা কেবল বেজেই যেত, বেজেই যেত।

হ্যাঁ, এখন আর আমার লজ্জা লাগে না বলতে যে আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন নিয়ম করে মিথ্যে বলেন। এই সেদিন আবার বললেন, এমনিতে তো রোজই বলেন, বেশ কিছুকাল আগে, ২০১৯-এর নির্বাচনের ঠিক আগে উনি টুমকুর, কর্নাটকের টুমকুরে গিয়েছিলেন। সবার সামনে বললেন, সকালে একটা বোতাম টিপে ৬ কোটি প্রান্তিক কৃষকের ব্যাঙ্কের খাতায় ২০০০ করে টাকা পৌঁছে দেওয়া হল। একটু খুলে বলি। ২০১৯-এ নির্বাচনের ঠিক আগে মোদিজি এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি। দেশের ২৩ কোটি প্রান্তিক কৃষক বছরে ৬০০০ টাকা পাবেন, তিন কিস্তিতে, মানে ২০০০ টাকা প্রতি চার মাসে। প্রধানমন্ত্রী ম ব্লাঁ পেন ব্যবহার করেন, সব থেকে কমটির দাম ৩০০০০ টাকা। সে থাক। তো কৃষক যারা আত্মহত্যা করছিল, মহারাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন, সারা ভারতেও খারাপ ছবি। তারমধ্যে নরেন্দ্র মোদির ঘোষণা। নির্বাচনের আগে এসব তো স্বাভাবিক। পয়লা নভেম্বর ঘোষণা এবং পয়লা কিস্তি পয়লা ডিসেম্বর দেওয়া হল। আনন্দের কথা ৯৮ শতাংশ কৃষক এই টাকা পেলেন। ভাবা যায়? যেমন কথা তেমন কাজ। তাহলে হিসেব অনুযায়ী ৩১ মার্চ ২০১৯ দ্বিতীয় কিস্তি, পয়লা আগস্ট ২০১৯ তৃতীয় কিস্তি আর চতুর্থ কিস্তি পয়লা ডিসেম্বর দেওয়ার কথা। আরে বাবা টাকা তো ২০০০ মাত্র। সেটা তো সময়ে দিতে হবে। এদিকে মোদিজি বোতাম টিপলেন ২ জানুয়ারি টুমকুরে। মানে? এটা কোন কিস্তি মোদিজি? কিস্তি বাকি পড়েছিল ১ ডিসেম্বর, দেওয়া হচ্ছে ২ জানুয়ারি? না, এমনও নয়, প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান যোজনার ওয়েবসাইটটা খুলুন দেখবেন ১ ডিসেম্বর টাকা দেওয়া হয়েছে, কত দেওয়া হয়েছে সে প্রশ্নে পরে আসছি। প্রথমেই জানাই ২ জানুয়ারি বোতাম চিপে ৬ কোটি কৃষকের খাতায় ২০০০ করে টাকা দেওয়ার কথাটা ততটাই মিথ্যে যতটাই ছিল প্রতি নাগরিকের খাতায় ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।

এবার দেখুন নির্বাচনের আগে মোদিজির প্রতিশ্রুতি কেমন করে নির্বাচনের পরে উবে যাচ্ছে, হ্যাঁ, জাদুকর মোদিজি।

আপাতত বেনিফিসিয়ারি মানে এই প্রকল্পে যারা টাকা পাবে তাদের সংখ্যা ৮ কোটি ৫৪ লক্ষ। প্রথম কিস্তি পেলেন ৮ কোটি ১২ লক্ষ। দারুণ ব্যাপার, যাকে বলা যায় সাফল্য। দ্বিতীয় কিস্তি পেলেন ৭ কোটি ৪৬ লক্ষ, মানে ১ কোটির মতো মানুষ পেলেন না। ঠিক আছে। কিছু কম পেলেন প্রায় ৭-৮ শতাংশ। এরপর তৃতীয় কিস্তি ৫ কোটি ৯৬ লক্ষ। মানে প্রায় আড়াই লক্ষ কৃষক টাকা পেলেন না। এবং ডিসেম্বরে চতুর্থ কিস্তি ২ কোটি ৯০ লক্ষ। মানে ২৭ শতাংশ পেলেন, বাকিরা পেলেন না। তার মধ্যে আর এক নাটক প্রধানমন্ত্রী নাকি আবার বোতাম টিপে ৬ কোটি কৃষককে ২০০০ করে টাকা পাঠালেন ২ জানুয়ারি। হিসেব মিলছে না রে তোপসে। হিসেব মিলছে না। আবার হিসেবে গন্ডগোল করেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। প্রান্তিক চাষির সংখ্যা কি তাহলে রোজ কমে যাচ্ছে?

রাজ্যের হিসেবগুলো দিই। ঝাড়খণ্ডে ১৫ লক্ষ ৯৩ হাজার কৃষকের মধ্যে প্রথম কিস্তি পেয়েছিলেন ১৪ লক্ষ ৩৯ হাজার, তৃতীয় কিস্তি পেয়েছেন ৪ লক্ষ ৫ হাজার আর চতুর্থ কিস্তি কেউ পাননি। আসুন মধ্যপ্রদেশে। ৫৪ লক্ষের মধ্যে প্রথম কিস্তি পেয়েছেন ৫১ লক্ষ। তিন নম্বর কিস্তি পেয়েছেন ২২ লক্ষ, মানে অর্ধেকেরও কম, আর চতুর্থ কিস্তি পেয়েছেন ৮৫ জন, হ্যাঁ, ৮৫ জন, ওয়েবসাইট খুলুন, দেখুন। উত্তরপ্রদেশ, যোগীর রাজ্য, প্রথম কিস্তি পেয়েছেন ১ কোটি ৯৭ লক্ষ আর চার নম্বর কিস্তি পেয়েছে ৭৭ লক্ষ। মহারাষ্ট্র প্রথম কিস্তি ৮১ লক্ষ ৬৭ হাজার, চতুর্থ কিস্তি ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার, বিহার প্রথম কিস্তি ৫১ লক্ষ, চতুর্থ কিস্তি ৬ লক্ষ, হরিয়ানা ১৪ লক্ষ ৬১ হাজার প্রথম কিস্তি পেয়েছেন, চতুর্থ কিস্তি পেয়েছেন ৮ লক্ষ ৬৮ হাজার।

মানে খুব পরিষ্কার নির্বাচনের জন্য ঘোষণা হয়েছিল, নির্বাচন চলে গেছে টাকাও বন্ধ হচ্ছে। ভগবান এদেশের বুকে নির্বাচন আসুক নেমে। তার মধ্যে মোদিজি এটা করলেন কেন? মানে এই টুমকুরে গিয়ে বোতাম টিপে নাটকটা? করলেন কারণ সবকটা বড় পত্রিকায় লেখা হল, টিভিতে দেখানো হল, ভক্তরা সেই খবর ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেবে দিকবিদিকে। যা হওয়ার তো হয়েই গেল। টাকা পৌঁছল না কি পৌঁছল না তা নিয়ে কার মাথাব্যথা। প্রথম সারির প্রচার মাধ্যম এসব খবর নিয়ে আর কোনও খোঁজও করবে না। ঢাকবাজানোর কথা ঢাক বাজিয়ে দিয়েছে। এবার আবার অন্য কোনও জায়গায় গিয়ে আবার বোতাম বা অন্য কিছু টেপা, আবার মিথ্যে, আবার মিথ্যে। ঝুট বোলো, ফির ঝুট বোলো, ফির সে ঝুট বোলো, গোয়েবলস উপর থেকে দেখছে আর বলছে উফফফফ কী প্রতিভা।

কেন্দ্র সরকার গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ, কেরালার পাঠানো ট্যাবলো ডিজাইন বাতিল করে দিয়েছে। ভারি মজার ব্যাপার। ২৬ জানুয়ারি প্যারেড হবে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে ট্যাবলো যাবে। সেখানে সেই রাজ্যের সংস্কৃতি, সেই রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ট্যাবলো হবে। এখানেও সেই একই রাজনীতি। এরপর যদি এর পাল্টা কিছু রাজ্যে হয়? ধরুন সিএএ মানি না, মোদি সরকার নিপাত যাক, বা এমএসপি কৃষকের অধিকার এরকম বলে তিন চারটে ট্যাবলো রেড রোডের প্যারেডে চলে, ২৬ তারিখ রাজ্যেও অনুষ্ঠান হয়। তাহলে? ওই যে বলেছিলাম না, বিজেপি চাইছে মুখোমুখি লড়াই।

৬২তে চীন-ভারত যুদ্ধ। ৬৩-র গণতন্ত্র দিবসে দিল্লির প্যারেডে নেহরু ডেকেছিলেন আরএসএসকে। ভাবা যায়। নেহরু তার আদর্শের চরম বিরোধী আরএসএসকে দিল্লিতে গণতন্ত্র দিবসে প্যারেডে ডাকছেন কারণ চীন-ভারত যুদ্ধ। আসলে শিক্ষিত মানুষ, চিন্তাশীল মানুষ আদর্শের লড়াইকে কলতলায় নামিয়ে আনেন না, নেহরুও আনেননি। তার মানে কি সব শেষ? অত সোজাও নয়। কৃষকদের দেখুন, আবার রেল রোকোর ডাক দিয়েছে তারা, আবার তারা দিল্লির দিকে কুচ করবে, ওরাই ভরসা। ওরাই রুখে দেবে মোদি-অমিত শাহকে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team