Placeholder canvas
কলকাতা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ (Fourth Pillar) | ২০২৩-এর শেষে আমাদের ঘাড়ের ওপরে এক নৃশংস ফ্যাসিবাদ চেপে বসছে
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  ওয়েব ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৪:৫০:০৮ পিএম
  • / ৭১ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • ওয়েব ডেস্ক

একটা বছর শেষ হতে চললো, কিন্তু প্রায় নিঃশব্দে এক ফাসিস্ট রাজ কায়েম হচ্ছে আমাদের দেশে। ২০২৩ নয়তো যেন ১৯৩৩, দুনিয়াজোড়া ফাসিবাদের উথ্বান, দক্ষিণপন্থার উথ্বান সেই কথাই মনে করাচ্ছে। দুনিয়াজোড়া মানুষের রং আলাদা হতে পারে, ভাষা আলাদা হতেই পারে, খাবার? হ্যাঁ তাও আলাদা হতেই পারে কিন্তু মানুষ, মানুষের সমাজ, দেশ, রাষ্ট্র, আইন বিচার এসব ব্যবস্থা খুব আলাদা কিছু না। কারণ শুরুটা তো একই জায়গায়, তাই না। ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি বলে ব্রহ্মা বসলেন ঠ্যাং মাথা হাত হৃদয় পাকস্থলি আর যৌনাঙ্গ নিয়ে তারপর টাপাটপ মানুষ তৈরি করে ছুঁড়ে ফেলে দিতে থাকলেন পৃথিবীর এক এক জায়গায় এভাবেতো at least  আমার আপনার উদ্ভব হয়নি। আমাদের গবেষণা, বিজ্ঞান বলেছে কিভাবে এককোষি প্রাণ এল পৃথিবীতে। তারপর কোষ বিভাজন, তারপর ক্রমশ ক্রমশ প্রটোজোয়া, পরিফেরা সিলেন্টেরেটা মালাস্কা রেপ্টাইল আম্ফিবিয়া ইত্যাদি হয়ে টয়ে আমরা এই হোমো স্যাপিয়েন। বজরঙ্গবলী কিনা জানি না কিন্তু সাধারণ বানর থেকে মানুষের উৎপত্তির ইতিহাস আমরা জানি। সেই গুহা মানূষ খুব আলাদা কিছু ছিল না। একই ভাবে সম্পদের আবিস্কার আর দখল হয়, একইভাবে জমি দখল হয়, একই ভাবে রাজা শাসনে বসে, ব্রাহ্মণ মন্দিরে। একইভাবে বেনিয়ারা এক দেশ থেকে এক দেশে বাণিজ্যে। একই ভাবে শ্রম এবং শোষণ।

তারপর ধীরে ধীরে গণতান্ত্রিক বোধ, ব্যবস্থা। রাষ্ট্র চালনায় গণতন্ত্র, এসব আসতে থাকে। যখন আমাদের দেষের জনপদ্গুলো হাত তুলে রাজা নির্বাচন করতো, তখনই পৃথিবীর আর এক প্রান্তে বসে অ্যারিস্টটল লিখছেন MAN IS A SOCIAL ANIMAL. অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও পৃথিবীতে খুব একটা আলাদা কিছু নয়, জমিদারি প্রথা, রাজা রাজড়ারা চলে যাবার পরে পুঁজিই এই বিশ্বে চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে, তার এক সুষ্ঠ বিলি বন্দোবস্তের জন্য ভেতরে যতই অসাম্য থাকনা কেন ওপরে ওপরে এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাই তার প্রয়োজন। সেভাবেই বিভিন্ন রাষ্ট্র গড়ে উঠতে থাকলো। পুজির নিজেদের লড়াই ও চলছিল, দুনিয়া দখলের লড়াই ও চলছিল। যাদের নিজেদের দেশে গণতন্ত্র, এমন কি সাম্যের কথাও লেখা ছিল সেই ব্রিটিশ বা ফ্রান্স এর কলোনী ছিল শোষণের ডেরা। কিন্তু ফাঁসি দেবার আগে বিচার হত, ক্ষুদিরাম এর ও হয়েছে, ভগত সিংহ এর ও হয়েছে। সে বিচার কে আপনি যতই ভুল একপেশে বলুন না কেন। কিন্তু ১৯ শতকের শুরুর দিকে আর এক ভাবনা চিন্তা গজিয়ে উঠতে থাকলো দেশে দেশে। এমন নয় যে তারা একে অন্যের সঙ্গে প্ল্যান করে এসব করছিল, না তেমন নয় কিন্তু কাজটা আদতে হচ্ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, তার পরেই ভয়ঙ্কর আর্থিক মন্দা চাকরি নেই, আজ এক শাসক কাল আর এক জন। সেরকম সময়ে বেনিতো মুসোলিনী ইতালিতে একটা দর্শন কে বেশ পাকাপোক্ত করার কাজ করে যাচ্ছেন। ফাসিস্ত দর্শন। ফাসিজ্যম। ফাসিও কথা থেকে এসেছে বেশ কিছু লাঠি একসঙ্গে বাঁধা, তাকেই বলে ফাসিও, ইতালিতে। বেশ কিছু সমমনভাবনাপন্ন মানুষের সঙ্গগঠন কে ফাসিস্ত। ওধারে সোভিয়েতে সেই ১৯০৫ থেকে রেভেলিউশন, লাল ঝান্ডা, শ্রমিক শ্রেণীর লড়াই, ইত্যাদি কথাগুলো ছড়িয়ে পড়ছে। পৃথিবীতে রেভেলিউশন মানে পরিবর্তনকামী মানুষ। তো ইতালিতে পার্তিও ন্যাশন্যালে ফাসিস্তা NATIONAL FASCIST PARTY PNF তৈরি হল, পার্টি ছিলই, একটু নাম বদলে বেনিতো মুসোলিনি তার মাথায় বসছেন ১৯১৯। প্রবল ঘেন্না কমিউনিস্টদের, লিবারাল দের, বিরুদ্ধে ছড়ানো হচ্ছে, তাদেরই একজন বেনিত্তো মুসোলিনি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা এক সৈনিক। এসেই শ্রমিকদের জন্য ৮ ঘন্টার শ্রম, তাদের মিনিমাম ওয়েজ, চালু করলেন, যারা ট্যাক্স ফাঁকি দেয় তাদের শাস্তি, ধর্মীয় সম্পত্তির অবলোপ এর নির্দেশ দিলেন আর তার সঙ্গে তাদের জাতিই সবচেয়ে ভালো, বাকিরা নিম্ন শ্রেণীর মানুষ, তাঁরাই আসল উচ্চ বংশের বাকিরা নিম্ন শ্রেণির মানুষ, এই প্রচারও শুরু করলেন। কিন্তু তাতে তো দেশের গরিষ্ঠাংশ মানুষের কোনও সমস্যা ছিল না। মুসোলিনী ক্ষমতা পেলেন, এবার শ্রমিক ধর্মঘট ভাঙার জন্য তাদের গুন্ডাদেরই ব্যবহার হল, ফাসিস্ত ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা ফুলে ফেঁপে উঠতে লাগলো। চার্চ হয়ে উঠতে থাকলো রাষ্ট্রের ধামাধরা। একই গল্প জার্মানিতেও। ন্যাশনাল স্যোশালিস্ট জার্মান ওয়ার্কারস পার্টি বা নাজি পার্টির দায়িত্বে এলেন হিটলার। তারপর বেকারি, মুল্যবৃদ্ধি, ব্যাঙ্ক ফেল সব কিছুরই মুলে ঐ ইহুদিরা বলে জার্মানদের সঙ্গে নিয়ে আস্তে আস্তে ক্ষমতায়। কিছুদিন পর হিটলার আর ভগবানে কোনও তফাত নেই। তারপর প্রথমে কমিউনিস্ট তারপর ইহুদি, তারপর ডেমোক্রাট, লিবারাল ডেমোক্রাট এবং শেষপর্যন্ত যে কোনও মানুষ যে একচুল বিরোধিতা করবে তাকেই শেষ করো।

পৃথিবীর শাসন ব্যবস্থায় এই ফাসিজম বহুবার বহুভাবে এসেছে, কখনো মিলিটারি ডিক্টেটর হিসেবে, কখনো bruit majority পাওয়া কোনও দলের নেতার ছদ্মবেশে। এসেছে। এবং তাদের প্যাটার্ন আলাদা নয়। তাদের আসার কিছু লক্ষণ আছে। তাদের মধ্যে বেশ কিছু মিল থাকবে।  আমি একে একে সেই লক্ষণগুলো বলে যাচ্ছি  যে যে জায়গায় মিল পাবেন, লিখতে থাকুন বা মাথায় রাখুন। দুনিয়াজোড়া শাসন ব্যবস্থায় এই লক্ষণ যখনই এসেছে, তখন ই ফাসিবাদ নেমে এসেছে, অন্তত চেষ্টা করেছে।

১) যিনি সরকারের মাথায় থাকবেন তিনি দলের একছত্র নেতা হবেন। আরও ১০ টা ১২ টা ১৬ টা নেতা থাকতেই পারে, কিন্তু ঐ একজন নেতার ওপরে কেউ না, কেউ না। তার রাজনীতির গুরুদেবও না। না হিটলারকে এই নাজি দলে টেনে আনলেন আন্তন ড্রেক্সলার, ইহুদিরাই যে শত্রু এই তত্ত্ব এনার কাছ থেকেই তিনি জানলেন। তারপর ধীরে ধীরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বে। তখন ড্রেক্সলার একা, নিঃসঙ্গ। তারপর জার্মানির ক্ষমতায় এলেন হিটলার, ড্রেক্সলার একলা বসে মদ খাচ্ছেন। আহারে কারুর কথা মনে পড়ছে, বয়স হয়ে গেছে, একলা পড়ে গেছেন, দলের কোনও কাজে তাকে ডাকাও হয় না। ডায়াট্রিক এখার্ট, এনার থুল সোসাইটি হিটলারের দর্শন এর মূল উৎস। হিটলারের আত্মজীবনী, মেইন ক্যাম্ফ এর দ্বিতীয় খন্ড এনাকেই উৎসর্গ করা। কিছুদিন পর ইনিও, বাদের তালিকায়। অবশ্য মারা যাবার পর সমাধি স্থল বানিয়েছিলেন। আর এক জনের নাম না করলেই নয়, আর্নেস্ট রোম, ইনি জার্মান মিলিটারি অফিসার ছিলেন, এবং ঐ শুরুর দিনগুলোতে হিটলারের বডিগার্ড স্ট্ররমট্রুপার বা ঝটিকাবাহিনী তৈরি করেছিলেন। তারা সারা দেশ এ হিটলারের হয়ে মানুষ পেটাতো, ইহুদি পেটাতো। এই আর্নেস্ট রোম এর সামনে একটা পিস্তল রেখে বলা হয়েছিল হয় নিজেকে নিজে গুলি করে মারো, নাহলে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দেওয়া হবে। উনি প্রথমটা বেছে নিয়েছিলেন। একই ঘটনা ঘটেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবিসংবাদিত জেনারেল রোমেল কে নিয়ে। মানে একজন নেতা, তার একটা কথা, একটা সিদ্ধান্ত, একটা আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তো দুরের কথা একটা কথাও বলা যাবে না। মিল পাচ্ছেন?

২) দেশপ্রেম নয় উগ্র জাতীয়তাবাদ। রবিঠাকুর এক চিঠিতে লিখেছিলেন,   “হিরের দামে ঠুনকো কাচ কিনতে আমি নারাজ। জীবদ্দশায় মানবতার ওপর দেশপ্রেমকে তাই ঠাঁই দিতে চাই না।“ রবিঠাকুর বলেছে তো কি? এন্টায়ার পলিটিকাল সায়েন্স এ মাস্টার্স করা মোদী জী অন্যরকম ভাবতেই পারেন। যেমন টা ভেবেছিলেন হিটলার বা মুসোলিনী, বা যেটা ফাসিজমের প্রথম কথা। চাকরি নেই? সিয়াচীনে জওয়ান লড়ছে। মুল্যবৃদ্ধি, পাকিস্তান মুর্দাবাদ, চিকিৎসা পাচ্ছেন না, সার্জিকাল স্ট্রাইক তো হচ্ছে। খেতে পান না পান, চাকরি পান বা না পান। দেশ নিয়ে কোনও কথা বলা যাবেনা। রাহত ইন্দোরি তার শায়রী তে বলেছিলেন, সরহদোঁ পর বহত তনাও হ্যায় ক্যায়া? সরহদোঁ পর বহত তনাও হ্যায় ক্যায়া? কুছ পতা তো করো চুনাও হ্যায় ক্যায়া? আমরা তো শুনেছি যখনই প্রশ্ন ওঠে বস্ত্র কি খাদ্য, সীমান্তে বেজে ওঠে যুদ্ধের বাদ্য। ফাসিজম এক অজানা শত্রু তৈরি করে, যে দেশ আমাদের কাছে তিন বার যুদ্ধে হেরেছে, যার অর্থনীতি খুব খারাপ সেই দেশ কে শত্রু বানিয়ে বাকি সব সমস্যাকে ঢাকা দাও। আনো বালাকোট, আনো সার্জিকাল স্ট্রাইক, সিয়াচীন। উগ্র জাতীয়তাবাদ। এবং এখানেই থামেনা খেলা, যারা বিরোধী, যারা অন্যসুরে কথা বলছে, যারা একমত নয় তাদের দেশদ্রোহী বানাও। তাদের বিশ্বাসঘাতক বলো। দেশেরভ মানুষ কে বলো এই গদ্দার দের গুলি করে মারতে হবে। এই প্রচারেই নাথুরাম গডসে রা হাতে পিস্তল তুলে নেয় এখনও, ৩০ জানুয়ারিতেই।

৩) মিডিয়া কিনে নাও, কিনে নাও তাদের মালিক, সাংবাদিক দের, তারপর মিথ্যা মিথ্যা মিথ্যা। প্রতিটা খবর এক নতুন মিথ্যে তোইরি করবে, যা আপনাকে প্রভাবিত করবে প্রতটা মুহুর্ত। প্রতিটা কবি সম্মেলন থেকে ছড়ানো হবে বিষ, সিনেমা তে থাকবে লুকিয়ে কেউটে সাপ। আপনি তার বিষের ছোবলে নীল হয়ে যাবেন কিন্তু মজা পাবেন। এই ছবি আপনাকে দেশপ্রেম, উগ্র জাতীয়তাবাদ শেখাবে, আপনি দেশ এর উদার মানুষ তাদের তোলা প্রশ্নকে কখন যেন বিরোধিতা করতে শুরু করবেন। মগজ ধোলাই যন্ত্র। টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদের একবারের জন্যও এই প্রশ্ন তুলতে দেখা যাবেনা যে দেশের প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন না কেন? নির্বাচনে বিজেপি জিতছে, অ্যাঙ্করের মুখ উদ্ভাসিত, মানে হুজুর দেখুন আপনার হতে পারে জয় এর কথা ভেবে আমরা কতটা পুলকিত।

৪) হিউমান রাইটস, মানবাধিকার উবে যায় ততটাই যতটা জাঁকিয়ে বসে ফাসিজম। আদালত থেকে শুরু করে বাকি প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নেওয়া হয়, এবং মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ইহুদিদের তো মারতোই, গুলি করে মারতো, কনসেনট্রেশন ক্যাম্প এ নিয়ে গিয়ে মারতো, এ তো তাদের ঘোষিত পরিকল্পনা। কোনও পড়শি ইহুদিকে আপনি সাহায্য করেছেন, আপনি করেন নি, আপনার বাবা করেছেন বা আপনার ছোট ভাই। ব্যস। আপনি পরদিন জেলে, এটা ছিল জার্মানির ইতিহাস। অনেকেই জানেন না, বলি শুনুন। কারোর ছেলে অন্ধ, বা স্প্যাসটিক, বা বোবা। প্রথমে এই হেরিডিটরি রোগকে ও রোগীকে চিহ্নিত করা হতো। তারপর তাকে শুধু নয়, তার বংশের সন্তান উতপাদনোক্ষম মানে তাদের বাচ্চা হতে পারে, সেরকম পুরুষ বা নারীদের হত্যা করা হতো।  যাতে করে সেই রোগ ছড়িয়ে না পড়ে। ভাবুন তো? একেই ফাসিজম বলে।

৫) শত্রু তৈরি করা, যার বিরুদ্ধে সমস্ত জাতি কে নেতার পক্ষে আনা হবে। প্রথমে কমিউনিস্ট, কারণ এরা রাইখস্টাগে আগুন ধরিয়েছে, এরা গণতন্ত্র চায় না, এরা রাশিয়ান দানব দের বন্ধু। তারপর ইহুদি। ইহুদি দের বাঁচার কোনও অধিকার নেই। সাফ কথা। পালাতেও দেওয়া হবে না, ডিটেনশন ক্যাম্প, কনসেনট্রেশন ক্যাম্প এ রাখো, তারপর তাদের মারো। তারপর লিবারাল দের, তারা প্রতিবাদ করে। আমাদের দেশে টুকরে টুকরে গ্যাং, এরা কারা, কোথায় থাকে? যদি আছে তো তাদের ধরছোনা কেন? তাদের বিচার হচ্ছে না কেন? আর্বান নক্সাল। এরাই বা কারা? এদের বিচার হচ্ছে না কেন? কেউ জানে না। কিন্তু শত্রু তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশেও।

৬) ধর্ম আর সরকার দেশ কে মিলিয়ে দাও। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষ কে ভাগ করে দাও। সংখ্যালঘুরা যাতে সবসময় আতঙ্কে থাকে তার ব্যবস্থা করো, এটাই ফাসিজম। এবং মাঝে মধ্যেই পিটিয়ে মারো, ধর্ষণ করো, আগুন লাগাও, পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখবে, আদালত ছেড়ে দেবে। যান আপনারা সমাজসেবা করুন বলে জেলের বাইরে পাঠিয়ে দেবে। প্রতিটা বিষয়ের সঙ্গে ধর্ম কে জুড়ে দেওয়া হবে।

৭) অসাধু ব্যবসায়ী আর তাদের দুর্নীতি। হিটলারের জামানায় দেখা গ্যাছে। এমনকি বিরাট বড়লোক ইহুদিও তার অর্থের বিনিময়ে প্রাণ বাঁচিয়েছে। প্রতিদিন টাকা সোনা গয়না দিয়ে তারা নিজেদের বাঁচাতো। আমাদের দেশের দিকে তাকান। বিজয় মালিয়া, মেহুল চোকসি, নীরব মোদী, পুস্পেশ বৈদ্য, আশিস জবানপুত্র, সানি কালরা, আরতি কালরা, সঞ্জয় কালরা, যতীন মেহতা, উমেশ পারেখ, রাজিব গোয়েল ২৮ জন মিলে ১০ লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে কেটে পড়েছে। ১০ লক্ষ কোটি। একজনও পাকিস্তানি নয়, আর্বান নক্সাল নয়, মুসলমান ও নয় কিন্তু ঐ বিজয় আলিয়া কে বাদ দিলে প্রত্যেকে প্রত্যেকে কি আশ্চর্য গুজরাটের বাসিন্দা।

৮) এক দেশ, এক নেতা , এক ভাষা, এক আইনের কথা বলা। এটাও ঐ ফাসিস্তদেরই শিক্ষা। নেতা একজন, বাকিরা ল্যাম্পপোস্ট। দেশ একটাই। সভ্যতা একটাই। ভাষা একটাই। আপনার বাংলা ভাষায় লেখা জাতীয় সঙ্গীত সিনেমা হলে জানা গানা মানা দ্রাবিড উৎকলা বঙ্গা। না প্রতিবাদ করা যাবে না, পারলে কাল ই হিন্দী রাষ্ট্র ভাষা করে দেয়। খেয়াল করেছেন, সমস্ত আইনক্সে, হ্যাঁ বাংলার সমস্ত আইনক্সে কিভাবে কিভাবে মাছ মাংস ডিম উবে গ্যালো। সব নিরামিষ। মধ্যপ্রদেশের নতুন সরকার, রাজস্থানের বিধায়ক জিতেই ফতোয়া দিয়েছেন মাছ মাংস বিক্রিই করা যাবে না, আলাদা লাইসেন্স নিতে হবে। এবার লাইসেন্স দেওয়া হবে না চুকে গ্যালো। বাধ্যতামূলকভাবে নিরামিষ। কেন? উত্তর নেই। মানে এক খাবার। বিজয়বর্গী চিঁড়ে খায় না তো আপনিও খাবেন না, নাহলে আপনি বাঙ্গলাদেশি।  ফ্রিজে গরুর মাংস থাকতে পারে এই অনুমানের ওপর ভিত্তি করে গুজব এবং একলাখ আহমেদ কে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল। এক খাবার চাই।

আমি যেটা বলতে চাইছিলাম, ভালো দল, খারাপ দল, কাজ করে, কাজ করেনা, মানুষ তাকে সরিয়ে আর একজন কে আনবে, সেও যে কাজ করবে তারও নিশ্চয়তা নেই। সেও হয়তো চুরি করবে। কিন্তু শেষবেলায় আপনার একটা সংবিধান আছে, আইন আছে আদালত আছে, ভোট আছে, কিছুই না হলে গান্ধিমুর্তি আছে ধরণা দেবার জন্য কিন্তু ফাসিজম এক অন্য ব্যবস্থা। এখানে একবার ঢুকে পড়লে এক বিরাট দীর্ঘকালীন লড়াই যুদ্ধ, একেবারে শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফাসিস্ট রা তাদের বিষ ছড়িয়ে যাবে। খারাপ সরকার মানুষের শত্রু, চোর সরকার মানুষের শত্রু কিন্তু ফাসিস্ত সরকার মানবতার শত্রু। ঠিক তাই জীবলের শেষ প্রান্তে এসে রবিঠাকুর বলছেন এ এক সভ্যতার সংকট। “সমস্ত যুরোপে বর্বরতা কী রকম নখদন্ত বিকাশ করে বিভীষিকা বিস্তার করতে উদ্যত। এই মানবপীড়নের মহামারী পাশ্চাত্য সভ্যতার মজ্জার ভিতর থেকে জাগ্রত হয়ে উঠে আজ মানবাত্মার অপমানে দিগন্ত থেকে দিগন্ত পর্যন্ত বাতাস কলুষিত করে দিয়েছে। আমাদের হতভাগ্য নিঃসহায় নীরন্ধ্র অকিঞ্চনতার মধ্যে আমরা কি তার কোনো আভাস পাই নি।“

দেরি হবার আগেই তাই আমাদের মানুষকে এই কথাগুলো বোঝাতে হবে, বলতে হবে, গণতান্ত্রিক ধ্যান ধারণা, বহুস্বরের কথা জোর দিয়ে বলতে হবে, বলতে হবে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা, আমরা যদি মানুষকে বুঝিয়ে সঙ্গে নিয়ে এই ফাসিবাদের উথ্বানকে রুখতে না পারি, তাহলে অনিবার্য ফাসিবাদ দেশকে সমাজকে ধ্বংশ করবে।

দেখুন ভিডিও:

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team