কলকাতা: শুরুটা হয়েছিল ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন থেকে। তফশিলি ভোটের উপর ভর করে বাংলায় ১৮টি আসন পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। উত্তরবঙ্গে একচেটিয়া ভোট পেয়েছিল তারা। দক্ষিণবঙ্গেও ভালো ফল করেছিল গেরুয়া শিবির। তার পর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও তফশিলি ভোটের একটা বড় অংশ গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। তবে তাল কাটল উপনির্বাচনে।
সদ্য সমাপ্ত নদিয়ার শান্তিপুর, কোচবিহারের দিনহাটা, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা আসনের উপনির্বাচনে বড় মার্জিনে জয় পেয়েছে তৃণমূল। যার নেপথ্যে রয়েছে তফশিলি ভোট। যে তফশিলিরা বিগত নির্বাচনগুলিতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল, তারাই এ বার ঢেলে ভোট দিয়েছে তৃণমূলকে। ভোটের ফল থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান স্বস্তি দিয়েছে রাজ্যের শাসক দলকে।
আরও পড়ুন: রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা, মমতার ক্যাবিনেটে নতুন মুখ?
উত্তরবঙ্গের দিনহাটায় ৪১ শতাংশ তফশিলি জাতির ভোটার রয়েছেন। তাদের একটা বড় অংশ রাজবংশী সম্প্রদায়ের। শান্তিপুরে ৩৫ শতাংশ তফশিলি জাতির ভোটার রয়েছেন। যার অধিকাংশই মতুয়া সম্প্রদায়ের। গোসাবায় মোট ভোটারের ৬০ শতাংশ তফশিলি জাতির এবং ১০ শতাংশ তফশিলি উপজাতির। এই তিন কেন্দ্রেই তফশিলি ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।
উপনির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, বিজেপির হিন্দু ভোটব্যাঙ্কেও ধস নেমেছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনাকে রীতিমতো সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে উপনির্বাচনে প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। দলের নেতারা উপনির্বাচনে প্রচারে গিয়ে বারংবার উসকে দিয়েছেন সাম্প্রদায়িক ইস্যু। তবে এই প্রচার যে আদপে হিতে বিপরীত হয়েছে, নির্বাচনের ফলাফল থেকে তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন: দিলীপকে পাল্টা, এবার গুপ্তকথা ফাঁস করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি তথাগতর
দিনহাটার মোট ভোটারের ৭০ শতাংশ হিন্দু। তাদের মধ্যে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১১ শতাংশ মানুষ। নদিয়ার শান্তিপুরে ৮৬ শতাংশ হিন্দু ভোটার রয়েছেন। এখানকার মাত্র ২৩ শতাংশ হিন্দু ভোটার ভোট দিয়েছেন বিজেপিকে। খড়দহে ৮৭ শতাংশ হিন্দু ভোটারের মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ ভোট দিয়েছেন বিজেপিকে। গোসাবার ৯০ শতাংশ হিন্দু ভোটারের মধ্যে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ।