কলকাতা: খলিস্তানি বিতর্কে বৃহস্পতিবারও উত্তাল থাকল রাজ্য রাজনীতি। এদিন বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল বিক্ষোভ দেখায়। শিখ গুরুদ্বার কমিটির এক প্রতিনিধিদল এ ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থার আর্জি নিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেন। প্রতিনিধিরা রাজ্যপালকে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন। পরে তাঁদের তরফে গুরমিত সিং বলেন, বিজেপি নেতা-নেত্রীরা আইপিএস অফিসারকে খলিস্তানি বলে শিখ সম্প্রদায়ের পবিত্রতা এবং আত্মসম্মানকে অপমান করেছেন। আমরা রাজ্যপালকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
গুরমিত জানান, রাজ্যপাল বিষয়টি নিয়ে তাঁদের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখব।
শিখ সম্প্রদায় তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসছে না। রাজভবন থেকে সকলে মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য দফতরের সামনে লাগাতার চলতে থাকা ধরনায় অংশ নেন। তাঁরা বলেন, যতক্ষণ না শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির অন্য নেতারা ক্ষমা চাইবেন, ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে। মুরলীধর সেন লেনে শিখেরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার জন্য পাকাপাকি রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করেছেন। ঘণ্টায় ঘণ্টায় চা, কেক দেওয়া হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। বিজেপি অফিসের গেটের সামনে এলইডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। তাতে মঙ্গলবার সন্দেশখালির ঘটনার ভিডিও দেখানো হচ্ছে। লাগানো হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর কুশপুতুল। বিক্ষোভকারীদের দাবি, শুভেন্দুকে দল বহিষ্কার না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া হবে। এদিন আসানসোলে বিজেপি অফিসের সামনেও শিখদের বিক্ষোভ হয়। সেখানে শুভেন্দু এবং বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলের কুশপুতুল পোড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৮)
গত মঙ্গলবার সন্দেশখালিতে শুভেন্দুদের আটকায় পুলিশ। সেখানে ডিউটিতে ছিলেন আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিং। অভিযোগ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু তাঁর মাথায় পাগড়ি দেখে যশপ্রীতকে খলিস্তানি বলে কটাক্ষ করেন। তা নিয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ওই অফিসারের তর্কাতর্কিও হয়। তার কিছুক্ষণ পরই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে ওই ঘটনার নিন্দা করে বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিভাজনের অভিযোগ আনেন। তিনি বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেন। তারপরই সন্দেশখালিতে বসে দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকারও একই অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে। ঘটনার পর থেকেই তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়ায় খলিস্তানি বিতর্ক নিয়ে ঝড় তুলে দিয়েছে। সেই ঝড় এখনও অব্যাহত। শুভেন্দু এবং বিজেপি নেতাদের দাবি, তাঁরা ওই আইপিএস অফিসারকে খলিস্তানি বলেননি। শাসকদল সন্দেশখালি থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য এই বিতর্ককে ইন্ধন দিচ্ছে।
দেখুন আরও অন্যান্য খবর: