আলিপুরদুয়ার: সম্প্রতি বিতর্ক যেনো কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা সদ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় ঠাঁই পাওয়া জন বা্র্লার। নতুন করে বাংলা ভাগের ডাক দেওয়ার অভিযোগ, সরকারি জমিতে নির্মাণ কাজ চালানোর অভিযোগের পর বৃহস্পতিবার এক আদাবাসী তরুণীকে লাগাতার ধর্ষণে অভিযুক্ত ও গ্রেপ্তার হওয়া এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে, ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অছিলায় ৫০ লক্ষ টাকা হরফ করার অভিযোগ উঠেছে জন বার্লার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন- মমতার উন্নয়নেই ভরসা রাখছেন বাম জমানার মন্ত্রী গৌতম দেব
ওই ঘটনাকে ইস্যু করে কোমড় কষে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল। এদিন আলিপুরদুয়ারের দলীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে ওই টাকা লেনদেন সংক্রান্ত অডিও বার্তা প্রকাশ্যে আনেন বিজেপির আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন জেলা সভাপতি ও বর্তমানে জেলায় তৃণমূলের অন্যতম নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। ওই অডিও বার্তায় ধর্ষিতা তরুণীর এক নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী জনৈক জয়চাঁদ আগরওয়ালের কথোপকথন শোনা গিয়েছে। যদিও ওই অডিও বার্তার সত্যতা ‘কলকাতা টিভি’ যাচাই করেনি।
আরও পড়ুন- সংসদ খোলার পর ভ্যাকসিন নিলেন রাহুল, দু’দিন তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে জল্পনা
কথোপকথনে জয়চাঁদ ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জন বারলাকে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। ইতিমধ্যেই নির্যাতিতা ওই তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত জয়চাঁদ আগরওয়ালকে গ্রেফতার করেছে বানারহাট থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন- মুকুলের পিএসি চেয়ারম্যান পদ নিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি ১০ অগাস্ট
গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অভিযোগ, “এক জন মাননীয় সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে জন বারলা কীভাবে ওই ঘৃণ্য কাজ করতে পারলেন? আমরা ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছি। যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রীসভার স্বচ্ছতা নিয়ে এতো বড়াই করেন, তখন জন বার্লার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কেনো তদন্ত হবে না?” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেছেন, “তদন্তের স্বার্থে জন বারলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।”
গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার ওই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর, তার পাল্টা হিসেবে জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি অফিসে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত রায়। তিনি বলেন “অডিও বার্তায় জন বার্লার কোনও কন্ঠস্বর নেই। দু’জনের অডিও বাক্যালাপ শোনা গিয়েছে মাত্র। তার কোনও সারবত্তা নেই। এভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। পরিষ্কার ভাবে রাজনৈতিক স্বার্থে জন বার্লাকে কলুষিত করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল। আমরা রাজনৈতিক ভাবে এর মোকাবিলা করবো।”
আরও পড়ুন- সব মেয়েদের সুরক্ষায় নিরাপত্তাকর্মী দেওয়া সম্ভব নয়, মন্তব্য বিজেপি মন্ত্রীর
যদিও যাঁকে কেন্দ্র করে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা ওই গুরুতর অভিযোগ এনেছেন, সেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা সঙ্গে মোবাইলে বারংবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি, এমনকি এসএমএস ও হোয়াটসঅ্যাপেরও কোনো জবাব দেননি। এর আগে অভিযোগ উঠতেই কলকাতা টিভির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেই সময়ে দিল্লিতে মন্ত্রকের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছিলেন জন বার্লা।