আলিপুরদুয়ার: করোনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আলিপুরদুয়ারে চোখ রাঙাতে শুরু করলো ডেঙ্গি। ইতিমধ্যেই ওই মারণ রোগের থাবায় চলতি বছরে প্রথম কালচিনি ব্লকের গারোপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজাভাত চা বাগানে শাল বাড়ি এলাকায় এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে।
গত সোমবার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চেতানুল ঠাকুর (৫০)। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে যে কালচিনি ব্লকে আরও চার জন ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলেছে। জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। ২০১৭ সালের বর্ষাতেও কালচিনিতে ডেঙ্গির সংক্রমণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই রোগের প্রাদুর্ভাব রুখতে বৃহস্পতিবার কালচিনি ব্লক অফিসে একটি
গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। ওই বৈঠকেই ডেঙ্গি মোকাবিলা নিয়ে রূপরেখা ঠিক করা হয়। যদিও বছরের শুরুতেই বর্ষায় কালচিনিতে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সাবধান করেছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কারণ ভৌগোলিক অবস্থানের কারনে জেলার ওই ব্লকটি ভুটান পাহাড়ের পাদদেশে হওয়ায় এবং বন জঙ্গল পরিবেষ্টিত হওয়ায় সেখানে বর্ষা এলেই জমা জলের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সিংহভাগ মানুষ গোর্খা ও আদিবাসী জনজাতির হওয়ার দরুন তাঁদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে শুয়োর প্রতিপালনের প্রবণতা রয়েছে।
আরও পড়ুন- কৃষক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে মৃত ১০৪ জনের পরিবারকে চাকরি দিচ্ছে পঞ্জাব সরকার
ব্লকের চা বাগান থেকে শুরু করে সাধারণ লোকালয়ের কোনায় কোনায় প্রচুর শুয়রের খামার থাকার দরুন ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কা যে অমূলক ছিল না তার ইঙ্গিত কিন্তু ওই ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু। জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা নষ্ট করতে ইতিমধ্যেই যৌথ অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও কালচিনি ব্লক প্রশাসন। ডেঙ্গি প্রবণ এলাকা গুলিকে চিহ্নিত করে বিশেষ স্বাস্থ্য শিবির চালু করা হবে। সঙ্গে লাগাতার সচেতনতার প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- হেরে যাবে তাই ভোট চায় না বিজেপি, বলছে তৃণমূল, ট্রেন-স্কুল বন্ধ তাও ভোট কেন, পাল্টা দিলীপ
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশ চন্দ্র বেরা বলেছেন, “২০ অগস্ট ওই আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমে কালচিনির লতাবাড়ি হাসপাতলে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন। তারপর তাঁকে নিয়ে আসা হয় জেলা হাসপাতালে।সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ২১ তারিখ পাঠানো হয় কোচবিহারের এমজেএন হাসপাতালে।সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। কালচিনি ব্লকে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব রুখতে আমরা তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করেছি।”