বসিরহাট: নাবালিকার (Teenage Marriage) বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে চরম হেনস্তার মুখে পড়লেন আধিকারিকরা। শুধু তাই নয়, যে নাবালিকার (Teenage marriage in I
ndia) বিয়ের আয়োজন ছিল, সেও বেরিয়ে এসে গালিগালাজ শুরু করে আধিকারিকদের। চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যে পাড়া-প্রতিবেশীরাও এসে যোগ দেন। সকলের বাধার মুখে পড়তে হয় সরকারি প্রতিনিধিদের। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে দীর্ঘ বচসার পর পুলিসের হস্তক্ষেপে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হয়। বসিরহাট মহকুমার ভেবিয়া পঞ্চায়েতের দক্ষিণ ভেবিয়া এলাকার এই ঘটনায় যথেষ্ট ক্ষোভ ছড়িয়েছে কন্যাশ্রী দফতর, চাইল্ড লাইন ও সরকারি আধিকারিকদের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বছর ১৬-র একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ের তোড়জোড় চলছিল জোরকদমে। পাত্রীর বাড়িতে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন। এই ঘটনা জানাজানি হতেই, কনে প্রাপ্তবয়স্ক না-হওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা টোল ফ্রি নম্বরে সল্টলেকের কন্যাশ্রী দফতরে ফোন করেন। তারা বিষয়টা জানায় হাসনাবাদের বিডিও মোস্তাক আহমেদকে। বিডিওর নির্দেশে কন্যাশ্রী আধিকারিক প্রবীর মুখোপাধ্যায়সহ ৫ জনের একটি প্রতিনিধিদল বিয়েবাড়িতে হাজির হয়। নাবালিকা ছাত্রী, তার বাবা জালালউদ্দিন মল্লিক, মা সালমা মল্লিক ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁদের সঙ্গে আধিকারিকরা কথা বলেন। নাবালিকার বিয়ে অপরাধ, তাঁরা এই বিয়ে দিতে পারেন না বলে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। বিয়ে না দেওয়ার একটা মুচলেকা চান। এর মধ্যেই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ছাত্রীর পরিবার ও আধিকারিকরা। স্থানীয় বাসিন্দারাও এসে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। সরকারি আধিকারিকদের একদিকে হেনস্তা, অন্যদিকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ দিতে শুরু করেন। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে এই বচসা চলতে থাকে।
মুচলেকা দিতে অস্বীকার করেন নাবালিকার বাবা ও মা। তখন বিয়েবাড়ি থেকে ফিরে আসেন আধিকারিকরা। পুরো বিষয়টা হাসনাবাদ থানার পুলিসকে জানানো হয়। নাবালিকার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয় থানায়। তখন পুলিস গ্রামে গিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করে। নাবালিকার বাবাও পুলিসের সামনে বিয়ে না-দেওয়ার মুচলেকা লিখে দেন।
আরও পড়ুন এবার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী ছাড়তে চেয়ে চিঠি বাঁকুড়ার ২ বিজেপি বিধায়কের
এই ঘটনায় এলাকায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এমনকী রীতিমতো ক্ষুব্ধ কন্যাশ্রী দফতরের আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, পড়াশোনার জন্য সরকারি এত সুযোগ-সুবিধা থাকতে কেন নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে! এত সচেতনতা প্রচার সত্ত্বেও এখনও সেই তিমিরেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ।