হাওড়া: বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, গভর্মেন্ট প্রেসের পর এবার পুরোপুরি বন্ধের মুখে হাওড়ার আরতি কটন মিল৷ প্রশ্নের মুখে এখানকার শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের ভবিষ্যৎ৷ মিল বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়৷ চিঠির উত্তরে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জরদোশ জানিয়েছেন, ওয়ার্কিং ক্যাপিটলের অভাব এবং অন্যান্য আর্থিক সমস্যার কারণে এই মিলে উৎপাদনের কাজ চালানো সম্ভব নয়৷ এর ফলে হাওড়ায় বন্ধ কারখানার তালিকায় আরও একটি নতুন নাম জুড়তে চলেছে৷
হাওড়ার
দাশনগরে বহু পুরনো এই মিলটি একসময় রমরমিয়ে চলত৷ শাড়ির সঙ্গে তোয়ালেও উৎপাদন হত৷ এই মিল থেকে তৈরি হওয়া তোয়ালে রেলের যাত্রীরা ব্যবহার করতেন৷ কিন্তু করোনার জেরে ডাকা দীর্ঘ লকডাউন থেকে মিলের দুর্দিন শুরু৷ ২০২০ সালের মার্চ থেকে উৎপাদন বন্ধ থাকে এই মিলে৷ তখন কার্যত অনিশ্চিয়তায় দিন কাটে শ্রমিকদের৷ মিল খোলার আশায় দিন গুনছিলেন তাঁরা৷ তাই পরের বছর জানুয়ারি থেকে আবার কাজ শুরু হওয়ায় হাসি ফোটে শ্রমিকদের মুখে৷ কিন্তু নানা কারণে ধুঁকতে থাকা মিলটিতে ফের বন্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ অনিয়মিত হয়ে পড়ে শ্রমিকদের বেতন৷ ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে থাকেন তাঁরা৷
তখন এলাকার সাংসদ বস্ত্রমন্ত্রককে চিঠি লেখেন৷ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মিলটি পুনরুজ্জীবনের আবেদন করেন৷ সেই চিঠির উত্তরে বস্ত্রমন্ত্রকের তরফে ওই চিঠি দেওয়া হয়৷ শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় বার্নস্ট্যান্ডার্ড এবং আরতি কটন মিলের উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছিলেন৷ তিনি রেলমন্ত্রক ছাড়ার পর থেকেই মিল বন্ধ করার পরিকল্পনা শুরু করে কেন্দ্র৷ মিলটি বাঁচানোর জন্য হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় জিরো আওয়ারেও বিষয়টি তুলেছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘আমি সংশ্লিষ্ট বিষয়ক মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিলাম৷ শেষপর্যন্ত আমাকে চিঠি দিয়ে মিল বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷’
মিল বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় সাড়ে চারশো কর্মী কাজ হারাবেন৷ তাঁরা সমস্যা মিটিয়ে অবিলম্বে মিল চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন৷ এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের অবস্থা খুব খারাপ৷ বাবা-মায়ের ওষুধ কিনতে পারছি না৷ বাচ্চার দুধ কিনতে পারছি না৷ ধার-দেনা করে সংসার চলছে৷ আমরা চাই মিলটি ২৬ দিন সচল থাকুক৷’ অন্য এক শ্রমিক বলেন, ‘খুব কষ্টের মধ্যে সংসার চলছে৷ তিন মাস ধরে বেতন বন্ধ৷ ছোটখাট কাজ করে টাকা রোজগার করছে৷ মুদিখানা দোকান ধারে সামগ্রী দিচ্ছে না৷’ হাওড়ার বিজেপি নেতা উমেশ রাই জানিয়েছেন, সব ব্যাপারে কেন্দ্র দোষী আর রাজ্য সরকার কাজ করতে চাইছে এসব বললে চলবে না৷ মিল বন্ধের অনেক কারণ থাকে৷ বিগত ১০ বছরে পশ্চিমবঙ্গে অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে৷ তার জন্য দায়ী কে?
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: বাঁকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভার উপর স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ