৪১বছরের খরা কেটে গেল। অলিম্পিক্সে হকিতে শেষবার পদক মিলেছিল ১৯৮০ সালে। ভারতীয় খেলোয়াড়রা তো মাঠে লড়ে গেলেন। কিন্তু মাঠের বাইরে এই লড়াইয়ের কুশি-লব আরও অনেকে। শোনানো যাক তাঁদের কথা।
গ্রাহাম রেইড (চিফ কোচ):
প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ার এই খেলোয়ারটি ভারতের পুরুষ হকি দলের কোচের দায়িত্ব নেন ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে।শুরুতেই নজর দিয়েছিলেন টিমের আক্রমণভাগকে মজবুত করতে। সত্যি সত্যিই তা বদলে যায়। এই অলিম্পিক্স তা জানান দিয়ে গেল। বিশ্বের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগ হয়ে উঠেছে। বদলে গেছে মানসিকতাও। আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। যে কোনও পরিস্থিতিতে ম্যাচ জিতে নেওয়ার ক্ষমতা আছে এখন এই দলের। এবারের ব্রোঞ্জ জয়ের লড়াই তা প্রমাণ করে দিয়েছে। ম্যাচের শুরুতে ১-৩ তে পিছিয়ে ছিল ভারত। পাল্টা আক্রমণের ঝড় তুলে ৫-৩ গোলে ম্যাচের রং বদলে দেয় ভারত। গ্রুপ লিগে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭-১ গোলে হেরেও, নক আউট পর্যায়ে খেলার ছাড়পত্র ছিনিয়ে নেয়।
এই কোচের তত্বাবধানে এফআইএইচ(FIH)প্রো লিগে আর অলিম্পিক্সে ধারাবাহিক ভালো পারফর্ম করেছে দল। কমবয়সী আর অনভিজ্ঞ এই দল নিয়ে রেইড কাজ করে চলেছেন দু’বছর ধরে।
গ্রেগ ক্লার্ক (অ্যানালেটিক্যাল কোচ):
গ্রেগ দক্ষিণ আফ্রিকার। সাত মাস আগে দলের সঙ্গে যোগ দেন। একসময় তিনি ভারতীয় কোল্টস দলের কোচ ছিলেন (২০১৩-১৪)।সেই সময় ভারত সুলতান আফ জহর কাপ জিতেছিল। নয়া দিল্লিতে ২০১৩ তে এফআইএইচ(FIH)জুনিয়র বিশ্বকাপে অংশ নেয়।
গ্রেগ দক্ষিণ আফ্রিকার হবে ২৫০টি ম্যাচ খেলেছেন। ছ’বছর সেই দেশের জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। চারটি অলিম্পিক্সে (দুটিতে খেলোয়াড় এবং দুটিতে কোচ হয়ে), চারটি বিশ্বকাপে (দুটিতে খেলোয়াড় এবং দুটিতে কোচ হয়ে),তিনটি কমনওয়েলথ গেমসে (দুটিতে খেলোয়াড় এবং একটিতে কোচ হয়ে)যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা তো আছেই, সঙ্গে রয়েছে এফআইএইচ(FIH)অসংখ্য টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতাও।
আরও পড়ুন: অভিনন্দনের বন্যায় ভারতীয় হকি দল
শীবেন্দ্র সিং (সহকারী কোচ):
জাতীয় দলের প্রাক্তণ ফরোয়ার্ড। ২০১৯ সালের মার্চে সিনিয়র দলের সঙ্গে যোগ দেন। দলের ফরোয়ার্ডদের শুধু দেখেন।দলের স্ট্রাইকাররা যে দাপট দেখিযেছে টোকিওতে, তার কৃতিত্ব অবশ্যই শীবেন্দ্রের। তিনি নিশ্চয়ই গর্ব বোধ করবেন, যেভাবে উঠতি শামশের সিং আর দিলপ্রীত সিং এই আসরে খেলেছেন। ২০০৭ সালে এশিয়া কাপে সোনা জয়ী ২০১০ সালে কমনওয়েলথ গেমসে রুপো এবং সেই বছরেই গুয়ানঝাও এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক জয়ে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
পীযুষ কুমার দুবে (সহকারী কোচ):
পীযুষ কুমার দুবে এই দলের সঙ্গে কাজ করছেন সেই ২০১৯ থেকে। তখন ছিলেন ইন্টারিম কোচ ডেভিড জনের সঙ্গে। সাইয়ের সঙ্গেই বেশী যুক্ত ছিলেন।২০১৬ সালে দেশের ২৫ জন কোচকে বার্মিংহামে পাঠানো হয়েছিল।সেবার কোচিংয়ের সঙ্গে স্পোর্টস সায়েন্স নিয়েও অনেক কিছু শিখে এসেছিলেন।
রবিন অ্যান্টনি ওয়েবস্টার আর্কেল (সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইসর):
আর্কেল দলের সঙ্গে এই কাজ করার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের ফিটনেসের দায়িত্ব সামলাতেন।জুনিয়র দলের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। পরে সিনিয়র দলে যোগ দেন।তিনি এর আগে রাগবি আর ক্রিকেট দলের সঙ্গেও কাজ করেছেন। চিফ স্ট্রেন্থ আর কন্ডিশনিং কোচ ছিলেন।এই ভারতীয় দলের এবার ফিটনেস সমস্যা ছিলনা। যা ছিল,টোকিওর গরম। তবুও সকলে যে ঠিক ছিলেন-তার কৃতিত্ব আর্কেলের।
এঁরা ছাড়াও সাপোর্ট স্টাফ হয়ে কাজ করছেন, রতিনাসাম্য বোস কান্নন (ফিজিও), অশোক কুমার সি(ভিডিও অ্যানালিস্ট),অরূপ নস্কর (ম্যাসিওর)।
ছবি:সৌ-টুইটার