নয়াদিল্লি: কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়াল ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দল। কপিল দেব (Kapil Dev), সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar) সম্বলিত দলের তরফে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের চ্যাম্পিয়ন কুস্তিগিরদের টানাহেঁচড়ার অপ্রীতিকর দৃশ্যে আমরা ব্যথিত এবং বিরক্ত। সেই সঙ্গে তাঁরা যে তাঁদের পদক গঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেওয়ার ভাবছেন, তা নিয়েও আমরা অত্যন্ত চিন্তিত। ওই পদকের পিছনে রয়েছে বহু বছরের প্রচেষ্টা, ত্যাগ, সংকল্প, এবং দৃঢ়তা এবং শুধুমাত্র তাঁদের নয়, দেশের গর্ব এবং আনন্দের। আমরা তাঁদের এই বিষয়ে তাড়াহুড়ো করে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি এবং আশা করি তাঁদের অভিযোগ দ্রুত শোনা হবে এবং সমাধান করা হবে। দেশে আইন বিরাজ করুক।
মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan Singh) গ্রেফতার এবং অপসারণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনা চলছে। ধরনার পুরোভাগে রয়েছেন সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia), বিনেশ ফোগটের (Vinesh Phogat) মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদকজয়ী কুস্তিগির। গত ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিন, তাঁদের টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ।
আরও পড়ুন: Wrestler’s Protest | কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ ফেডারেশন প্রধান ব্রিজভূষণের
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় মুখ না খোলায় ক্ষুব্ধ হয়ে শচীন তেন্ডুলকরের বাড়ির সামনে পোস্টার টাঙিয়ে দেয় মুম্বই পুলিশ। তবে শচীন কেন, দেশের কোনও ক্রিকেটারই এতদিন কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়াননি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বেশ কিছুদিন আগে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অন্তত ৮৩-র বিশ্বকাপ জয়ী দল এগিয়ে এল। ভারতের ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri) কিন্তু কুস্তিগিরদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের উপর পুলিশি অত্যাচারের নিন্দে করেছেন। সাক্ষী-বজরংদের পাশে প্রথম থেকেই আছেন জ্যাভেলিন তারকা নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra)। অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী শুটার অভিনব বিন্দ্রাও (Abhinav Bindra) পাশে আছেন।
প্রসঙ্গত, ২৮ মে-র ঘটনার পর রাগে দুঃখে অপমানে সমস্ত পদক গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাক্ষীরা। অলিম্পিক্স এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জেতা পদক গঙ্গায় বিসর্জন দিতে মঙ্গলবার হরিদ্বার গিয়েছিলেন সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), বিনেশ ফোগট (Vinesh Phogat), বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia)। হাজির হয়েছিলেন হর কি পৌরি ঘাটে। তাঁদের আটকে দেন নরেশ টিকাইত (Naresh Tikait) সহ কৃষক নেতা। আপাতত টিকাইতের জিম্মায় রয়েছে পদক। সেদিনই কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঁচদিনের সময়সীমা দিয়েছেন ভারতের কৃতী কুস্তিগিররা। এর মধ্যে ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার এবং পদ থেকে বহিষ্কার না করা হলে তাঁরা আবার হরিদ্বারে আসবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।