আলিপুরদুয়ার: পাশে থাকার কেউ নেই। মাথায় ঠাঁই বলতে সরকারি পরিত্যক্ত একটি ঘর। যেখানে বিদ্যুতের সংযোগও নেই। স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের খাবার খেয়েই বেঁচ্ রয়েছেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে গরমের ছুটিতে স্কুল বন্ধ থাকায় সেই পথও বন্ধ। রেশনের দোকানে ফেলে দেওয়া চালই এখন সম্বল ৮৫ বছরের সরস্বতী দাসের।
আলিপুরদুয়ারের ২ নং ব্লকের পূর্ব চেপানী গ্রামের এক অসহায় বৃদ্ধা। যাঁর মাথা গোঁজার একমাত্র ঠিকানা সরকারি এক পরিত্যক্ত ঘর। জানা গিয়েছে, এক আত্মীয় অসুস্থ বৃদ্ধার সঙ্গে প্ররোচনা করে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দখল করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাঁকে। তারপর থেকই ওই সরকারি পরিত্যাক্ত ঘরেই দিনযাপন সরস্বতীর। ঘরের চাল ফুটো থাকায় বর্ষাকালে ঘরের ভিতরে জল পড়ে। এমনকী ঘরে বিদ্যুতের সংযোগও নেই। টিমটিম কুপির আলো দিয়েই তাঁর রাত্রিবাস। মেলেনি কোনও সরকারি সুবিধাও।
স্থানীয়দের মতে, প্রায় ৩০ বছর আগে ওই বৃদ্ধার স্বামী মারা যায়। তারপর থেকেই খাপসাডাঙা বাজার এলাকায় কিছু জমি এবং গরু-ছাগল প্রতিপালন করে দিন কাটাতো ওই বৃদ্ধা। কয়েক বছর আগে এক আত্মীয় বৃদ্ধার অসুস্থতার সময় চিকিৎসা করানোর নাম করে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করে। এরপর তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তাঁর বর্তমান ঠিকানা ওই সরকারি পরিত্যাক্ত ঘর।
আরও পড়ুন: Covid Updates Inddia: দেশে সামান্য কমল দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, বেড়েছে সুস্থতার হারও
এই বিষয়ে সরস্বতী দাস বলেন, আমার আঙুলের ছাপ না মেলায় রেশন এবং বার্ধক্যভাতা কোনও কিছুই পাই না। এমনকী কেরোসিন পাইনা। কেরোসিনের দাম বেড়ে যাওয়ায় ঘরে কুপি জ্বালানোর ক্ষেত্রেও অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। আমার পরিবারে কেউই নেই। দই ছেলে জন্মের কিছুদিন পরই মারা যায়। আমার সমস্ত সম্পত্তি ঠকিয়ে নিয়েছে আমার এক আত্মীয়। এই মুহূর্তে আমি চাইছি প্রশাসনই আমার সন্তান হয়ে পাশে দাঁড়াক।
এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সভাধিপতি প্রকাশ চিক বড়াইক বলেন, আপনাদের মাধ্যমে সমস্ত বিষয় জানতে পারলাম। আমি খুব দ্রুত ওই বৃদ্ধা সরস্বতী দাসের খোঁজ নিয়ে তার পাশে দাঁড়াব। জেলা ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাঁর সমস্তরকম সরকারি সাহায্যের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।