কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: কংগ্রেসের নেতৃত্ব বদলের প্রশ্নে বিস্ফোরক দলের প্রবীণ নেতা কপিল সিব্বল (Kapil Sibal)। তাঁর মন্তব্য, অবিলম্বে সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi), রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সরে দাঁড়ানো উচিত। নতুনদের নেতৃত্বের সুযোগে দেওয়া দরকার। একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ওই বিস্ফোরক মন্তব্য করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিব্বল (Congress leader and former Union Minister) বলেন, চিন্তন বৈঠক করে কাজের কাজ করে কিছু হবে না। আসল কথা হল, নেতৃত্বের বদল চাই। তাঁর আরও প্রশ্ন, কংগ্রেসের নেতৃত্বে কারা থাকবেন, তা স্থির করার অধিকার দলের ওয়ার্কিং কমিটির নেই। গুটিকয়েক লোক বসে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সেই সিদ্ধান্ত নেবে এআইসিসি।
পাঁচ রাজ্যে দলের বিপর্যয় নিয়ে রবিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বসে দিল্লিতে। বৈঠকের শুরুতেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, নেতারা চাইলে আমরা এখনই নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি আছি। পরে অবশ্য ওয়ার্কিং কমিটি সোনিয়া গান্ধীর উপরই আস্থা রাখে। স্থির হয়েছে, নির্ধারিত সময়মতোই দলের সাংগঠনিক নির্বাচন হবে। সেপ্টেম্বর মাসে নির্বাচিত সভাপতি না হওয়া পর্যন্ত সোনিয়াই সভানেত্রীর পদে থাকবেন।
রবিবারের ওই বৈঠকে বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতারা গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে তেমনভাবে সরব হননি। নেতৃত্ব বদলের কোনও জোরালো দাবিও ওঠেনি। আনন্দ শর্মা, গুলাম নবি আজাদের মতো বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতারা মৃদুস্বরে কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন মাত্র। ওই বৈঠকে আরও স্থির হয়, সংসদের অধিবেশন শেষ হলে এপ্রিল মাসে চিন্তন বৈঠকের আয়োজন করা হবে। ফের বসবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক।
আরও পড়ুন: India-Pakistan: পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের মিসাইল, তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকার
২০২০ সালে যে ২৩ জন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে নেতৃত্ব বদলের দাবি জানিয়ে আলোড়ন ফেলেছিলেন, কপিল সিব্বল তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এই প্রবীণ নেতাই ওযার্কিং কমিটির বৈঠকের পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই নেতৃত্ব নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গান্ধী পরিবারের নিজের থেকই সরে দাঁড়নো উচিত। কারণ, তাঁদের মনোনীত কমিটি কখনওই তাঁদেরই নেতৃত্বে থাকার কথা বলতে পারে না।
কপিল সিব্বল বলেন, পাঁচ রাজ্যের ভোটে দলের শোচনীয় ব্যর্থতায় আমি মোটেই আশ্চর্য হইনি। একইভাবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে গান্ধী পরিবারের প্রতি আস্থা রাখাতেও আমি একেবারেই অবাক হইনি। ওয়ার্কিং কমিটির বাইরে দলের এমন বহু নেতা রয়েছেন, যাঁরা ভিন্ন মত পোষণ করেন। তাঁর কথায়, ওয়ার্কিং কমিটির বাইরেও কংগ্রেস আছে। দয়া করে তাঁদের কথাও শুনুন। আমার মতো অনেক নেতাই আছেন যাঁরা ওয়ার্কিং কমিটিতে নেই। কিন্তু কংগ্রেসে আছেন। ওয়ার্কিং কমিটিতে নেই বলে কি আমাদের কোনও দাম নেই?
ক্ষুব্ধ সিব্বল ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি অন্যদের হয়ে কথা বলছি না। আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত জানাচ্ছি। আমি চাই, সব কি কংগ্রেস। কেউ কেউ চায় ঘর কি কংগ্রেস। আমি সব কি কংগ্রেসের জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করে যাব। এই সব কি কংগ্রেসের অর্থ শুধু কংগ্রেসকে একত্র করা নয়, বিজেপিকে যারা চায় না, তাদেরও সঙ্ঘবদ্ধ করা। কপিলের এই মন্তব্যকেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: CPM State Conference: কলকাতায় শুরু সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন, হবে আত্মসমীক্ষা
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা খোলাখুলিই রাহুল গান্ধীরও সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, রাহুল কংগ্রেসের সভাপতি নন। অথচ তিনি সব সিদ্ধান্ত নেন। তিনিই কংগ্রেসের ডি-ফ্যাক্টর সভাপতি।