কলকাতা: কথায় আছে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। কিন্তু ভারতের মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টির অবস্থা আরও খারাপ। কারণ চোর পালালেও বুদ্ধি বাড়েনি। যার কারণে এই মুহূর্তে চরম দুর্দশায় পড়তে হয়েছে বাংলার মাটিতে দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে শাসন করা রাজনৈতিক দলকে। ঘুরে দাঁড়াতে বৈঠকে বসেছে রাজ্য কমিটি।
আরও পড়ুন- কুড়ি বছরেও হয়নি পাকা হয়নি সেতু, জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত
২০১১ সালে বাংলার মাটি থেকে শেষ হয়ে যায় বামেদের শাসন। তারপর থেকে ক্রমশ ক্ষয় হয়েছে সংগঠনের। একাধিক বিধায়ক অন্যদলে নাম লিখিয়েছেন। পরবর্তী দুই নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে কোনও সুরাহা হয়নি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে একজন প্রার্থীও জিততে পারেননি। যা প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে সাংগঠনিক ব্যর্থতা।
আরও পড়ুন- বিমা বিলের বিরোধিতায় সংসদে আত্মহত্যার চেষ্টা মৌসমের
সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে। করোনাবিধি মেনেই সশরীরে বৈঠক শুরু হয়েছে। ভোটে বিপর্যয় এবং সিদ্ধান্তগত ত্রুটির বিষয়গুলো সামনে রেখে নেতৃত্বের বদল চেয়ে বর্ধমান, হাওড়া এবং কলকাতা জেলা কমিটির প্রস্তাব পেশ করেছে সিপিএম-এর রাজ্য কমিটির বৈঠকে। আগামী নির্বাচনে দএর তরুণ ‘কমরেড’দের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার ভাবনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- রাস্তায় নেমে বিরোধী সাংসদদের বিক্ষোভ গণতন্ত্রের লজ্জা: বিজেপি
এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। দলের শীর্ষ স্থানে বা পদ দখল করে থাকা পাকা চুলওয়ালা নেতাদের চেয়ার ছাড়ার দাবি নতুন নয়। সিপিএম-র অন্দরে অনেকদিন ধরেই এই কথা হচ্ছে। ২০১৫ সালে দলের প্লেনামে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। স্থির হয়েছিল যে দলে ৪০ শতাংশ তরুণ মুখ রাখতে হবে। কিন্তু সেই প্রস্তাবের সঠিক প্রয়োগ হয়নি। সেই প্লেনামে ঠিক হয়েছিল যে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৬০ অভিজ্ঞ কমরেড থাকতে হবে।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে ভিন্ন ছবি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রবীণেরাই পদ অলঙ্কৃত করে রেখেছেন। ২০১৬ সালে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকাতেও দেখা গিয়েছে প্রবীণদের আধিক্য। একুশের নির্বাচনে তরুণ মুখ বাড়লেও তা যথেষ্ট ছিল না। যুবসমাজ হয়ে গিয়েছে বাম-বিমুখ। এই অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে তরুণদের হাতে দায়িতে তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। শুধুমাত্র রেড ভল্যান্টিয়ার হিসাবে নয়, পার্টির কাজেও সর্বক্ষণের জন্য কর্মী বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- প্লাবিত উত্তরপ্রদেশে উদ্ধারকার্যে নামল NDRF
প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শুরু হওয়া বৈঠক একদিনে শেষ হচ্ছে না। দীর্ঘ সময় ধরে তা চলবে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে এই বিষয়ে সিপিএম-র সিদ্ধান্ত জানা যাবে। ঘুরে দাঁড়াতে ২০১৫ সালের প্লেনামে নেওয়া সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর করা হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।