বেঙ্গালুরু: রাত পোহালেই চার বছর পার হয়ে যাবে সমজাকর্মী এবং সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের মৃত্যুর। যাকে তাঁর বাড়ির সামনে দুষ্কৃতীরা গুলি করে হত্যা করেছিল। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাঁচ তারিখ দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর ওই ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র দেশে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে আওয়াজ তোলা এবং হিন্দুত্ববাদের বিরোধী অবস্থানের কারণেই গৌরী লঙ্কেশকে খুন হতে হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন অনেকে। কাঠগড়ায় তোলা হয় হিন্দু সেনা নামক সংগঠনকে। সেই সময়ে কর্ণাটকে কংগ্রেসের সরকার ছিল। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ওই খুনের তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করা হয়।
তদন্তের ভিত্তিতে মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যাদের মধ্যে মূল হত্যাকারী ছাড়াও এমন অনেকে রয়েছে যারা ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত ওই মামলায় কোনও ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। এখনও বিচার চলছে। কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান গৌরী লঙ্কেশের বোন কবিতা।
সুপ্রিম কোর্টে মামলার বিষয় ছিল এক অভিযুক্তকে কর্ণাটক হাইকোর্টের গুরু অপরাধে অভিযুক্ত না করা। সেই ব্যক্তির নাম হচ্ছে- মোহন নায়েক। যাকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই মোহন নাকি মূল হত্যাকারী এবং অন্যান্যদের বেঙ্গালুরুর শহরতলি এলাকায় আশ্রয় দিয়েছিল। কবিতা লঙ্কেশের সুপ্রিম কোর্টে পিটিশনের বিরুদ্ধে এখনও কর্ণাটক রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
আরও পড়ুন- ভাঙন অব্যাহত, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়
চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে ধৃতদের মধ্যে ১৬ জন জামিনের জন্য আবেদন করে। যদিও তা মঞ্জুর করেনি কর্ণাটক হাইকোর্ট। ওই জামিনের আবেদনকারীদের মূল হত্যাকারী দুই অভিযুক্ত ছিল না। ওই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে নবীণ কুমারের নাম উঠে এসেছে। যাকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয়। এই নবীণ হিন্দু যুব সেনা নামক একটি সংগঠনের প্রধান ছিল।
আরও পড়ুন- দিন ঘোষণা হতেই ভবানীপুরে উপ-নির্বাচনের প্রচার শুরু তৃণমূলের
গৌরী লঙ্কেশ হত্যার তদন্তকারী অফিসারদের কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সম্মানিত করা হয় ২০১৯ সালে। ওই হত্যাকান্ডের উপযুক্ত তদন্ত করার জন্য ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে অফিসারদের মেদেল দেওয়া হয়। গৌরী লঙ্কেশ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখতেন। নিজের একটি ট্যাবলেয়েড ছিল। পিছিয়ে পরা সমাজের উন্নতির জন্য কাজ করতেন তিনি। মাওবাদীদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে কর্ণাটক রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটির মাথায় বসানো হয় তাঁকে।