নয়াদিল্লি: জুনের মাঝামাঝি ট্যুইটারের আইনি রক্ষাকবচ কেড়েছিল কেন্দ্র। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আদালতগুলিতে মামলা হচ্ছে মাইক্রোব্লগিং সাইটটির বিরুদ্ধে। নতুন নতুন তিরে বিদ্ধ হচ্ছেন ট্যুইটার ইন্ডিয়ার কর্তা। যদিও ট্যুইটার ইন্ডিয়ার প্রধান মণীশ মহেশ্বরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা কর্নাটক হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত রয়েছে। তবে এরই মধ্যে একের পর এক মামলা দায়ের ট্য়ুইটর কর্তার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: ট্যুইটারের ভারতীয় এমডি’র নামে এফআইআর
এ বার মাইক্রোব্লগিং সাইটটিতে শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত কনটেন্ট থাকার অভিযোগ উঠল। জাতীয় শিশু অধিকার সংরক্ষণ কমিশন (এনসিপিসিআর)-এর অভিযোগের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধদমন শাখা ট্যুইটারের বিরুদ্ধে দ্য প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পকসো)-সহ নয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনে এফআইআর দায়ের করেছে। এই নিয়ে মাইক্রোব্লগিং সাইটটির বিরুদ্ধে চতুর্থ এফআইআর দায়ের করা হল।
দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধদমন শাখা ট্যুইটারের কাছে শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত যাবতীয় কনটেন্টের লিঙ্ক চেয়ে পাঠিয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনও কিছু প্রোফাইলের লিঙ্ক পাঠিয়ে অবিলম্বে ট্যুইটারকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। তবে ট্যুইটারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত বিষয়ে তারা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে অনেক আগেই। এই সংক্রান্ত কনটেন্ট ঠেকানোর জন্য তাদের টিম নিয়মিত কাজ করে। শিশু পর্নোগ্রাফি রুকতে তারা বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের বৈঠকে ডাক ফেসবুক, গুগলকে, নেই ট্যুইটার
ট্যুইটার-কেন্দ্র জটিলতার সূত্রপাত বেশ কয়েকমাস আগে। নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতি নিয়ে ফেব্রুয়ারি থেকে কেন্দ্র-টুইটার টানাপোড়েন চলছে। প্রথমে নয়া নীতি মানতে রাজি না থাকলেও ৫ জুন কেন্দ্রের চূড়ান্ত নোটিসের পর অবশ্য আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসে মাইক্রো ব্লগিং সাইটটি। সরকারের নীতি মেনে নেবে বলে জানায় তারা।
ট্যুইটারের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতির শর্ত মেনে চলার ব্যাপারে তারা বদ্ধপরিকর। কেন্দ্রের দাবি মেনে চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার, নোডাল কনট্যাক্ট পার্সন এবং গ্রিভান্স অফিসার নিয়োগ করার ব্যাপারেও সম্মতি জানায় মাইক্রো ব্লগিং সাইটটি। রাতারাতি অন্তর্বর্তীকালীন চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগও করে ফেলে তারা। তারপরেও রেহাই মেলেনি, ভারতে আইনি রক্ষাকবচ হারিয়েছে মাইক্রো ব্লগিং সাইটটি।
আরও পড়ুন: ট্যুইটারের আইনি রক্ষাকবচ কাড়ল কেন্দ্র
তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন আদালতে ট্যুইটারের নামে মামলা দায়ের হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে হেনস্থা ও ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর ভিডিয়ো ট্যুইটারে পোস্ট করার অভিযোগে চলতি মাসে গাজিয়াবাদে প্রথম এফআইআর দায়ের হয়েছিল। সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে ভারতের বাইরে দেখানোরও অভিযোগ উঠেছে ট্যুইটারের বিরুদ্ধে।
ওই অভিযোগে প্রেক্ষিতে মহেশ্বরীর বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশের একটি কোর্টে এবং উত্তরপ্রদেশের একটি কোর্টে দুটি পৃথক এফআইআর দায়ের হয়েছে। এর কয়েকদিনের মধ্যেই মাইক্রোব্লগিং সাইটটিতে শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত কনটেন্ট থাকার অভিযোগে টুইটারের বিরুদ্ধে দ্য প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পকসো)-সহ নয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনে এফআইআর করেছে দিল্লি পুলিশ।
আরও পড়ুন: ট্যুইটারকে চরম হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের