প্রত্যেক দিনই রেজোলিউশন নেন। কিন্তু কোনও দিনই সেই সঙ্কল্পে দৃঢ় থাকতে পারেন না। ভাবছেন বছরের মাঝামাঝি রেজোলিউশনের প্রসঙ্গে আবার আসছে কোথা থেকে। প্রসঙ্গ পুজো হওয়াটাই কাম্য। তা তো নিঃসন্দেহে কিন্তু যেভাবে রাত দিন ফোনের মধ্যে আমরা মুখগুজে পড়ে আছি। তাতে চেহারার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বারোটা বাজতে আর কত দিন। বিষয়টা নিয়ে আপনি যথেষ্ট ভাবিত এবং প্রতিনিয়ত সমাধানের চেষ্টা করছেন। কিন্তু ওই যে একবার হাতে ফোন পেলে স্ক্রলিংয়ের কোনও ইতি নেই।
যেদিন প্রথম ঠিক করলেন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার দুঘন্টা আগেই ফোন অফ করে রাখবেন, সেদিনই হঠাত্ কলেজের বন্ধুরা ঠিক করল হোয়াট্সআপে ভিডিও কল করবেন। কল ৩০ মিনিটে শেষ হল ঠিকই কিন্তু আপনি সেই ফোনে আটকে রয়ে গেলেন। পুরোনো বন্ধুদের ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টের আদান প্রদান। প্রোফাইল ভিজিট সব সেরে যখন চোখ চূড়ান্ত ক্লান্ত, ঘড়ি দেখে জানতে পারলেন তখন মধ্য রাত্রি।
সত্যি বলতে কী দোষ পুরোপুরি আমাদের কিন্তু নয় এহেন আশক্তির দিকে ঠেলে দিয়েছে এই করোনা অতিমারি। প্রথমে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী। তারপর সোশাল ডিসট্যান্সিং, নাইট কারফিউ, অতিমারির ভয়াবহতা, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সঙ্গি হয়ে উঠেছে মুঠোফোন। কিন্তু ক্ষণিকের মন ভালো করার থেকে নেতিবাচক প্রভাবই বেশি পড়ছে আমাদের মনে। উপরি পাওনা চোখ ও ঘার ও পিঠের ব্যাথা। তাই প্রয়োজন সময় থাকতে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার। চেষ্টা করুন অনবরত মুঠোফোন ও স্ক্রলিংয়ের আশক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে এই নিয়গুলো মেনে চলার।
অবসর সময়ে ফোন দূরে রেখে নিজের পছন্দের কিছু করুন। যেমন ছবি আঁকা, বাড়িতে ছোট বাগান করতে পারেন। সবুজের ছোয়ায় মন ও শরীর ভাল থাকবে। বেকিং বা কুকিং করতে পারেন। বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে স্পেশাল কিছু প্ল্যান করে সারপ্রাইজ দিতে পারেন। শর্ত রাখুন যেন প্রত্যেকই অন্তত ১ ঘন্টার জন্য মুঠোফোন দূরে রাখেন।
স্মার্টফোনের যুগে এখন বিভিন্ন অ্যাপের ছড়াছড়ি, চেষ্টা করুন এই অ্যাপগুলোকে কাজে লাগাতে। বেশ কিছু অ্যাপ এরকম আছে, যেখানে স্ক্রলিংয়ের জন্য আপনি নির্দিষ্ট একটা সময়সীমা নির্ধারণ করতে পারেন। সেগুলো ব্যবহার করুন এবং এই অ্যাপগুলো রিমাইন্ডার দেওয়া মাত্রই স্ক্রলিং বন্ধ করুন।
নোটিফিকেশনস বন্ধ করে রাখুন বাড়িতেই থাকুন বা অফিসে, নোটিফিকেশন চালু থাকলে আপনারে কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। বিশেষ করে হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুকে বা ইনস্টাগ্রামের নোটিফিকেশন। কোথায় কে কোন ছবি আপলোড করল বা স্টেটাস আপডেট দিল, তা তক্ষুন না দেখলে বড় কোনও সমস্যা হবে না। আপনি পড়ে এই সাইটগুলোতে গিয়ে বন্ধুবান্ধবদের স্টেটাস দেখে প্রতিক্রিয়া দিতে পারবেন।
সোশাল মিডিয়ার আইকনগুলো হাইড করে দিন। সোশাল মিডিয়ার অ্যাপগুলোকে একট অন্য ফোলডার বানিয়ে তাতে রেখে দিন। এরফলে ফোন আনলক করা মাত্রই এই অ্যাপগুলোর আপডেটস হুমড়ি খেয়ে পড়বে না। দেখবেন আপনার ও ফোন অন করেই হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক স্ক্রলিংয়ের নেশা অনেকটাই কমে গিয়েছে।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে দেখবেন অনেক শান্তিতে থাকতে পারবেন। অহেতুক অন্যের খবরে দেখে হিংসা, দ্বেষ, ক্ষোভ, মন খারাপ বা হীনমন্যতায় ভুগবেন না।