বালুরঘাট: একে করোনায় রক্ষে নেই তার ওপর এবার দোসর কালাজ্বর। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আদিবাসি অঞ্চলে মাটির বাড়িতে বসবাসকারি মানুষের মধ্যে ফের মাথা চাড়া দিয়েছে এই রোগের প্রকোপ। জেলার একমাত্র হিলি ব্লক বাদে বংশিহারী, কুশ্মন্ডি, তপন সহ প্রায় সব ব্লকেই আদিবাসী এলাকাগুলি থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের সার্ভে রিপোর্টে কালাজ্বরের খবর পাওয়া গিয়েছে। আদিবাসী অঞ্চল গুলিতে এই রোগ প্রতিনিয়তই বাড়ছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ও জেলায় কালাজ্বর নির্মুল করতে এবার অলচিকি ভাষায় সচেতনতা মূলক প্রচারে নেমেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের।
আরও পড়ুন: প্রবল বর্ষণে মালদায় ভাঙন, গঙ্গাগর্ভে বিলীন ৪০০ বাড়ি
ওই সমস্ত অঞ্চলের মাটির বাড়িতে থাকা আদিবাসী মানুষজনদের কীভাবে সরকারি ইন্দিরা আবাসন প্রকল্পের মধ্যমে পাকা বাড়ি গড়ে দেওয়া যায়। সেই চিন্তাভাবনাও শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছরই বর্ষার মরসুমে এলাকায় কালাজ্বরের প্রকোপ বাড়ে। গত বছর থেকে করোনার প্রকোপ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কাজকর্ম বেড়ে যাওয়ায় কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণে কোনও কার্যক্রম হয়নি। রোগ বেড়ে যাওয়ার এটাই অন্যতম কারণ বলে মনে করেছে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।
স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ২২ জন কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের সকলেই গ্রামীণ আদিবাসী এলাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে এই মাসে বংশীহারি ব্লকের চৌঘরিয়া গ্রামের পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে স্বাস্থ্যদফতর থেকে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও কুশমণ্ডির কালাজ্বরের হটস্পট নামবৈল গ্রামেও প্রতিবার কেউ না কেউ আক্রান্ত হন। এবছরও কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন। পুরো এলাকা স্বাস্থ্যদফতরের নজরদারিতে রয়েছে। তপন ব্লকেও ইতিমধ্যেই কয়েকজন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে।
আরও পড়ুন: আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার বনগাঁর পোস্টমাস্টার, থানায় বিক্ষোভ গ্রাহকদের
তাই এবার জেলাজুড়ে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় অলচিকি ভাষায় সচেতনতামূলক প্রচারে নামছে জেলা স্বাস্থ্যদফতর। মূলত, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সচেতনার অভাবে মাটির বাড়িতে বেলেমাছির প্রাদুর্ভাবে কালাজ্বর ছড়াচ্ছে। তাই অলচিকি ভাষায় নানারকম সচেতনতামূলক ফ্লেক্স, ব্যানার ও লিফলেট তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সেগুলি জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় লাগানো হবে। পাশাপাশি অলচিকি ভাষায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্যদফতরের কর্তারা জানিয়েছেন।