বিট হল যৌথ পরিবারের সেই বড় বৌয়ের মতো, যাঁর কাজ প্রচুর কিন্তু কপালে প্রশংসা জোটে না৷ গন্ধের কারণ অনেকেই বিট খেতে একদম পছন্দ করে না। বিশেষ করে খুদেরা একদমই নয়। ভুলিয়ে ভালিয়ে খেতে দিলেও সেই খাওয়ার শেষে বিট পাতেই পড়ে থাকে। রূপচর্চাতেও একই অবস্থা৷ অ্যালোভেরা, মধু, পাতিলেবু, ব্যাসন, টক দইয়ের ভিড়ে বিটের কথা কে-ই বা মনে রাখে। অনেকে হয়তো জানেনই না, যে চুলের রং থেকে ত্বকের পরিচর্যা, ঠোঁটের যত্ন সব ক্ষেত্রেই বিটের অপার মহিমা। তাই উপেক্ষা না করে খুব ভাল হয় যদি নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় বিটকে রাখা যায়।
ব্রন ও ফুসকুড়ি সারিয়ে তোলে বিট
বিটে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী ভিটামিন ও নাইট্রিক অ্যাসিড, এই উপাদানগুলি ত্বকের কোষের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নতুন কোষ তৈরি করে। এর জন্য প্রত্যেক দিন একগ্লাস করে বিটের রস খান। লিভারের জন্য এটা খুবই উপকারী আর তার প্রভাব প্রায় হাতেনাতে বুঝিয়ে দেবে আপনার ত্বকের জৌলুস। এ ছাড়া বিটের তৈরি প্যাক মুখে লাগালে আরাম পাবেন। একটি পাত্রে ২ চামচ বিটের রস ও ২ চামচ টক দই মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে নিন এবং ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। জল মুছে নিয়ে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে পারেন।
বলিরেখা কমাতে কার্যকরী বিট
ত্বকের বয়স বাড়তে দেয় না বিট। বলিরেখা ও ত্বক কুঁচকে যাওয়া কমিয়ে আনতে বিট ভীষণ উপকারী।বিটে আছে ভিটামিন সি। ত্বকের অত্যন্ত আবশ্যক প্রোটিন কোলাজেন তৈরি করে এই ভিটামিন। এর ফলে ত্বক মসৃণ ও সুন্দর দেখায়। বিটের জুস বা বিটের তৈরি প্যাক লাগালে উপকার পাবেন।
ত্বকের জৌলুস বাড়িয়ে তোলে বিট
নিয়মিত বিটের রস খেলে রক্তের বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার হয়ে ত্বকের জেল্লা বেড়ে যায়। বিটে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থ রয়েছে। এগুলি ত্বকের মৃত কোষগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে। ত্বককে আপনার মনের মতো সুন্দর করে তোলে। বিটের তৈরি প্যাক লাগিয়ে দেখুন। তফাতটা নিশ্চয় বুঝবেন।
ঠোঁটের লাবণ্য বাড়িয়ে তোলে বিট
ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে ভাল কাজ করে বিট। তাই রোদে পুড়ে বা অন্য কোনও কারণে ঠৌঁট কালচে হয়ে গেলে, রং হাল্কা করতে খুবই উপকারী বিট। পাশাপাশি ঠোঁটে একটা হাল্কা গোলাপি আভা এনে দেয়। এই কারণেই লিপ বাম তৈরির ক্ষেত্রে বিটের রস ব্যবহার করা হয়। আপনি বাড়িতেও খুব সহজেই ঠৌঁটের পরিচর্যায় বিট ব্যবহার করতে পারেন। বিটের একটা স্লাইস কেটে ফ্রিজে ঠান্ডা করতে দিন। পনেরো মিনিট পর বার করে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। প্রয়োজনে স্ক্রাব করার জন্য চিনি মেশাতে পারেন। শুতে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণ ঠোঁটে ডলে নিন। স্ক্রাব করা হবে আবার ঠোঁট প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাবে।
চুলের স্বাস্থ্য ভাল করতে বিটের উপকারিতা
বিটে রয়েছে ক্যালসিয়াম, মিনারেল ও ভিটামিন। তাই শুষ্ক ও জৌলুসহীন চুলের রূপ ফেরাতে বিটের রস খেতে পারেন। বিট দিয়ে তৈরি মাস্কও মাথায় ও চুলে ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। চুলপড়ার সমস্যা সমধানে বিট ভীষণ কার্যকরী।
এ ছাড়া ডায়বিটিসের সমস্যা, হজম প্রক্রিয়া ঠিক করতে, ক্যানসারে প্রতিরোধে গড়ে তুলতে ও শারীরিক ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে ভীষণ কাজের বিট।