নয়াদিল্লি: বিজেপির রথযাত্রার ‘রামচন্দ্র’ লালকৃষ্ণ আদবানিকে অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছেঁটে ফেলার চেষ্টা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতেই ক্ষতে মলম লাগাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস। একইসঙ্গে এদেশে রাম-রাজনীতি আমদানি করা আরেক প্রবীণ বিজেপি নেতা মুরলিমনোহর জোশিকেও রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। ভিএইচপি এবং আরএসএসের শীর্ষ নেতারা সমালোচনার মুখ বন্ধ করতে এই দুই প্রবীণ নেতার বাড়িতে গিয়ে প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন।
হিন্দু পরিষদের কার্যকরী সভাপতি অলোক কুমার এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নেতা রাম লাল ও কৃষ্ণগোপাল গিয়ে আদবানি ও জোশিকে আমন্ত্রণ জানান। সেই ছবিও সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। কুমার বলেন, আদবানি এবং জোশিজি বাদ দিয়ে রামমন্দির আন্দোলনের কথা আমরা ভাবতেই পারি না। তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন হলেও দুজনকে আসতেই হবে। আদবানি এবং জোশি দুজনেই বলেছেন, তাঁরা আসার চেষ্টা করবেন। তবে কীভাবে তাঁদের আনা হবে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গীতাপাঠে নেই মোদি, আজ বৈঠকে মমতার মুখোমুখি
প্রবীণ এই দুই নেতা অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ আন্দোলনের অন্যতম রূপকার ছিলেন। মন্দিরের অছি পরিষদের তরফে প্রথমে জানানো হয়, এই দুই বয়োবৃদ্ধ নেতা তাঁদের স্বাস্থ্য এবং বয়সের কারণে আগামী মাসে মন্দির উদ্বোধন ও প্রাণপ্রতিষ্ঠার পুণ্যকার্যে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
রামমন্দির অছি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই জানান, দুই নেতাই সঙ্ঘ পরিবারের প্রবীণতম সদস্য। তাঁদের বয়সের কথা ভেবে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আর এই প্রস্তাব দুই নেতাই মেনেও নিয়েছেন।
রাই বলেন, ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেদিন উপস্থিত থাকবেন। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। প্রাণপ্রতিষ্ঠার জন্য পুজো শুরু হবে ১৬ জানুয়ারি থেকে। চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত।
তিনি বলেন, আদবানিজির বয়স এখন ৯৬ এবং জোশিজি আগামী মাসে ৯০ বছরে পড়বেন। সে কারণেই তাঁদের আসতে মানা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়াকে। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং লোকসভায় বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরীকেও। এছাড়া ৬ শঙ্করাচার্য এবং প্রায় ১৫০ সাধুসন্ত আসবেন। মোট প্রায় ৪ হাজার সাধু এবং ২২০০ অন্যান্য অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, বৈষ্ণোদেবীর প্রধান প্রধান, দলাই লামা, কেরলের মাতা অমৃতানন্দময়ী, যোগগুরু রামদেব, অভিনেতা রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন, মাধুরী দীক্ষিত, ছোট পর্দার রাম অরুণ গোভিল, পরিচালক মধুর ভাণ্ডারকর। শিল্পপতিদের মধ্যে থাকতে পারেন মুকেশ ও অনিল আম্বানি, ইসরোর ডিরেক্টর নীলেশ দেশাই প্রমুখ। প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর ৪৮ দিনের মণ্ডলপুজো হবে। দর্শনার্থীদের মন্দির খুলে দেওয়া হবে ২৩ জানুয়ারি থেকে।
অন্য খবর দেখুন