নয়াদিল্লি: ফের সংবাদ শিরোনামে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। আগামী দিনে তিনি কোন রাজনৈতিক দলে অবস্থান করবেন তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, তিনি কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইছেন। কিন্তু, কংগ্রেসের একাধিক নেতা প্রশান্ত কিশোরের আবেদনের বিরোধিতা করেছেন। যা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সভাপতি সোনিয়া গান্ধি। এখন আদৌ প্রশান্ত কিশোরকে দলে নেওয়া হবে কিনা নির্ভর করছে সোনিয়া গান্ধির উপরেই। তাঁর সিদ্ধান্তেই প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেসে যোগদান নির্ভর করছে৷
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোর পর থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন প্রশান্ত কিশোর। সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে রাহুল গান্ধি বা প্রিয়াঙ্কা গান্ধির কোনও আপত্তি নেই। এর আগে উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে দুজনের সঙ্গেই প্রশান্ত কিশোর কাজ করেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের সিনিয়র নেতাদের আপত্তি রয়েছে প্রশান্ত কিশোরকে দলে নেওয়া। তাঁদের একটা অংশের মতে, প্রশান্ত কিশোরকে দলে নিলে পার্টির অবস্থা আরও খারাপ হবে। তবে, কেউ কেউ আবার প্রশান্ত কিশোরকে দলে নিতে অনেকটাই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন- আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও ভারতে কেন বাড়ছে, প্রশ্ন রাহুলের
আবার অন্যান্যরাও বলছেন, কংগ্রেসে প্রশান্ত কিশোরের ওয়ার্ল্ড কার্ড এন্ট্রিতে কোন বিশেষ প্রভাব পড়বে না। গান্ধি পরিবার বরাবরই তার নেতাকর্মীদের কথা শোনে। তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এ দিকে কংগ্রেসে যোগ না দিয়েই প্রশান্ত কিশোর বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছেন। বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। এর ফলে শুধুমাত্র কংগ্রেসের বিরোধীরাও লাভবান হয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের দাবি। কিন্তু, প্রশান্ত কিশোর বিরোধী কংগ্রেস শিবিরের এক নেতা বলেন, প্রশান্ত কিশোরের কোনও জাদু শক্তি নেই। তিনি দলের সংস্কৃতি এবং পদ্ধতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে অসুবিধা বোধ করতে পারেন।
আরও পড়ুন-এত নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই, অকপট স্বীকারোক্তি দিলীপের
আহমেদ প্যাটেলের মৃত্যুর পর কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভাপতি সোনিয়া গান্ধী পরামর্শদাতা খুঁজছিলেন। যিনি কংগ্রেসের সংগঠন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবেন। যাতে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়া কংগ্রেস পুনরুজ্জীবিত হয়। এ দিকে আগের ইতিহাস বলছে, কংগ্রেসের সঙ্গে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্ক সন্তোষজনক ছিল না। তিনি অতীতে বহুবার কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন। ২০১৭ উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি জোট ব্যর্থ হয়েছিল। প্রশান্ত কিশোরের একমাত্র উজ্জ্বল জায়গা ছিল পঞ্জাব। যেখানে আকালি দল ও বিজেপি জোটকে পরাজিত করেছিল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে ৪০ তলার দুটি আবাসন গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
অন্যদিকে, গত মে মাসে প্রশান্ত কিশোর মন্তব্য করেছিলেন, কংগ্রেস ১০০ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল। তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক দল পরিচালনার পদ্ধতি রয়েছে। প্রশান্ত কিশোর বলেছিলেন, ” কংগ্রেস প্রশান্ত কিশোর বা অন্যদের মত লোকদের দ্বারা প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে কাজ করার জন্য উন্মুক্ত নয়। তারা আমার কাজ করার ধরন নিয়ে কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকবে না,”। তবে, কংগ্রেসের উপলব্ধি করা উচিত যে তারা প্রশান্ত কিশোর কিংবা তাঁর মতো কুশলীদের নিয়ে কাজ করা উচিত কি না।