কলকাতা: আনিস মামলায় (Anish Khan Death Case) আগামী এক মাসের মধ্যে সিটকে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court)। সোমবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল গোপাল মুখোপাধ্যায় শুনানিতে জানান, সিট সবচেয়ে ভালো তদন্ত করবে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, এজির সেই আশ্বাসের কথা মাথায় রেখে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে আদালত। বিচারপতির আরও নির্দেশ, ১০ দিনের মধ্যে সিটকে ফরেনসিক রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সিটের তদন্তে কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করা যাবে না।
আদালতের এই নির্দেশের ফলে আনিস-কাণ্ডের (Anish Khan) তদন্ত শেষ করার জন্য আরও এক মাস সময় পেয়ে গেল বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। ১৮ ফেব্রুয়ারি আমতার দক্ষিণ খাঁন পাড়ায় রহস্যমৃত্যু হয় ছাত্রনেতা আনিস খানের। তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে ওঠে। ঘটনার দুদিন পরই মুখ্যমন্ত্রী সিট গড়ার কথা ঘোষণা করেন। বলা হয়, ১৫ দিনের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দিতে হবে। রাজ্য পুলিসের ডিজি মনোজ মালব্যও দাবি করেন, ১৫ দিনের মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত করে সিট দোষীদের খুঁজে বার করবে।
১৫ দিনের সময়সীমা গত সপ্তাহেই শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক সিভিক ভলান্টিয়ার এবং এক কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা ছাড়া সিটের তদন্তে আর তেমন কোনও অগ্রগতি ঘটেনি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। সিট একটি মোটরসাইকেল এবং রাইফেল বাজেয়াপ্ত করার কথা আদালতকে জানিয়েছে। আনিসের বাবা সালেম খানের অভিযোগ ছিল, ঘটনার দিন পুলিস এবং সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাক পরা চারজন তাঁদের বাড়িতে এসেছিল। পুলিসের পোশাক পরা একজন তাঁর দিকে বন্দুক তাক করে একটি ঘরে আটকে রাখে। বাকি তিনজন সোজা বাড়ির ছাদে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর ওই তিনজন নেমে এসে বন্দুকধারীকে জানায়, কাজ হাসিল হয়ে গিয়েছে। এরপরই ও চারজন আনিসের বাড়ি থেকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর বাড়ির সামনে আনিসকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: Anubrata Mandal: সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারির আশঙ্কা, রক্ষাকবচ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে অনুব্রত মণ্ডল
আনিসের বাড়িতে হানা দেওয়া বাকি দুজনকে এখনও কেন সিট শনাক্ত করতে পারল না, বিরোধীরা সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন। বিরোধী নেতাদের আরও অভিযোগ, প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতেই সিট তদন্তে গড়িমসি করছে। আইনজীবীদের একাংশ সিটের ভূমিকার পাশাপাশি আদালতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।
এর আগে সিটের তরফে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছিল। আদালতের নির্দেশ ছিল, ওই রিপোর্টে কী আছে, তা জনসমক্ষে আনা যাবে না সোমবারের আগে। সেই রিপোর্টের কপি সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের দিতে বলা হয়েছিল। এদিন আদালতে আনিসের পরিবারের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, রিপোর্টে কিছুই নেই। শুধু আদালতের নির্দেশমতো ঘটনার বিবরণ দেওয়া আছে। ঘটনায় কারা জড়িত তার কোনও উল্লেখ নেই। সরকারি আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ফরেনসিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তদন্তে অগ্রসর হওয়া যাচ্ছে না। বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, আগামী ১০ দিনের মধ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রের ফরেনসিক দলকে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এক মাসের মধ্যে সিটকে সম্পূর্ণ তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।