নেমিই (জাপান): চাল (Rice) থেকে তৈরি হচ্ছে প্লাস্টিক (Plastic)। আশ্চর্য হচ্ছেন? বিজ্ঞানের অবদানে এই আশ্চর্যকেই সত্যি করে তুলেছে জাপানের (Japan) একটি শহর। পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের (Fukushima Nuclear Reactor) বিস্ফোরণে তেজস্ক্রিয় (Radiation) বিকিরণে একসময় জনহীন হয়ে গিয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম। হাসিখুশি জীবনযাত্রায় নেমে এসেছিল শ্মশানের শূন্যতা। সেখানেই আজ ফের ধীরে ধীরে জেগে উঠতে চলেছে জীবন সংগ্রামের নতুন মেঠো সুর। যে বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে সুর ধরিয়ে দিয়েছেন ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধ। তাঁর নাম জিনিচি আবে। ১৩ প্রজন্মের কৃষক আবে নেমেইয়ে সমবায় গঠন করে সেই চাল উৎপাদন করছেন।
সকালে ঘুম থেকে মাঠের ধারে বসে থাকেন আবে। দেখেন কীভাবে যন্ত্রচালিত ট্রাক্টরে জমি কর্ষণ করা হচ্ছে। প্রায় এক দশক পরে এই মাটিতে আবার সবুজ ধানের গাছ হাওয়ায় দোল খাচ্ছে। বছর দশেক আগে ২০১১ সালের মার্চে ফুকুশিমা পরমাণু চুল্লি বিস্ফোরণের পর এই এলাকা ফাঁকা করে দিয়েছিল সরকার।
আরও পড়ুন: India Slams Pakistan At UN: রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার অধিবেশনে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা ভারতের
এবার আবার আবের নেতৃত্বে ধানের ফলন শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই চাল থেকে রোগব্যাধি হতে পারে, এই সন্দেহে এই চাল কেউ খায় না। প্রথমদিকে পশুখাদ্য হিসেবে এই চাল ব্যবহার করা হতো। কিন্তু, এখন সেই চাল ব্যবহার করা হচ্ছে লো-কার্বন প্লাস্টিক (Low-Carbon Plastic) উৎপাদনে।
গত নভেম্বরে, টোকিওর বায়োমাস রেসিন নামে একটি কোম্পানি প্রথম এগিয়ে আসে এই এলাকায়। তারা এখানকার চাল কিনে নিয়ে প্লাস্টিকের দানা প্রস্তুত করছে। যাতে পরিবেশের ক্ষতিকর কার্বনের মাত্রা অত্যন্ত কম। এই নতুন ধরনের প্লাস্টিক দানা চলে যাচ্ছে জাপানের বিভিন্ন শহরে। যা থেকে তৈরি হচ্ছে রেস্তরাঁর চামচ, কাঁটা চামচ, কিংবা ডাকঘরের প্লাস্টিকের থলি। জাপানের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও এই প্লাস্টিক দানা স্মারক প্রদর্শনী হিসেবে রাখা হয়েছে।
আবে সংবাদ সংস্থা রয়টারকে বলেন, ধান উৎপাদন ছাড়া এ শহরের বাঁচানো সম্ভব ছিল না। গুজবের কারণে আমাদের চাল বিক্রি করা সম্ভব ছিল না। এগুলো পশুখাদ্য হিসেবে বিক্রি করা হতো। আর এখন আমরা এর নাম দিয়েছি ফুকুশিমা চাল। তিনি আরও বলেন, বায়োমাস আসায় আমাদের খুবই সাহায্য হয়েছে। এখন আমরা কোনও দুশ্চিন্তা ছাড়াই চাল উৎপাদন করছি।