কলকাতা: পঞ্জাব, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে বিএসএফের ক্ষমতা বাড়িয়েছে কেন্দ্র। আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় তল্লাশি চালাতে পারবে বিএসএফ। প্রয়োজনমাফিক জিজ্ঞাসাবাদ, গ্রেফতার এবং বাজেয়াপ্ত করার কাজ করতে পারবে তারা। ফলে নতুন করে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিএসএফ-এর কাজের পরিসর বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করতে কলকাতায় এসে পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব।
মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বিপি গোপালিকা এবং ডিজি মনোজ মালব্যর সহ সহ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয়কুমার ভাল্লা। শুক্রবার রাজারহাট নিউটাউনে হিডকো ভবনের বৈঠকে বিএসএফের এডিজি ওয়াই বি খুরানিয়া, ল্যান্ড পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান আদিত্য মিশ্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বর্ডার ম্যানেজমেন্টের সচিব বিবেক যোশী উপস্থিত থাকবেন।
আরও পড়ুন: সীমান্ত পাহারায় আরও বেশি ক্ষমতা বিএসএফের হাতে, বাংলা-পঞ্জাবকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা?
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের রাজ্য সফরের দিন কোচবিহার সীমান্তের গুলি চালাল বিএসএফ। শুক্রবার ভোরে সিতাইয়ে সাত ভাণ্ডারি সীমান্তে বিএসএফ গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতদের মধ্যে দু’ জন বাংলাদেশি ও একজন ভারতীয়। স্থানীয়দের দাবি, গরুপাচার ঠেকাতেই গুলি চালানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সিতাই থানার পুলিশ।
আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ১৫ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত এলাকা বিএসএফের আওতাধীন। কেন্দ্র আইন সংশোধন করে বিএসএফের কাজের এলাকা বাড়িয়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং ছান্নি। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস করেছে পঞ্জাব সরকার। আম আদমি পার্টি এবং শিরোমণি অকালি দলের বিধায়কেরাও প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গরু পাচারকারী সন্দেহে BSF-এর গুলি, মৃত দুই বাংলাদেশি-সহ এক ভারতীয়
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন মূলত সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বিষয়ে। রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করেই কাজ করতে চায় কেন্দ্র। বিএসএফের ক্ষমতাবৃদ্ধির পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গত ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়ে চিঠি লেখেন। চিঠিতে রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় সাধারণ মানুষের অসুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। সেইসঙ্গে রাজ্যের সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র, তাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: হাতের তালুতে সুইসাইড নোট, আত্মঘাতী তরুণী
শুক্রবারের বৈঠকে বিএসএফের শীর্ষকর্তা ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন সীমান্তবর্তী জেলাগুলির জেলাশাসকরা। সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাঁটাতার, বর্ডার আউটপোস্ট এবং ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট গুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বর্ডার আউটপোস্ট তৈরি ছাড়াও চোরাচালান, অনুপ্রবেশ, জাল টাকা এবং গরু পাচারের মত বিষয়গুলিও আলোচনায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।