সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: চলতি সপ্তাহের বুধবার ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করা ‘পুলিশ ডে'(Police Day)। সেই কারণে এদিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক অনুষ্ঠান করে কলকাতা পুলিশ(Kolkata Police)। আর এই দিনেই সুদূর আমেরিকা থেকে এলো খুশির খবর।
আমেরিকার টেক্সাস এলাকার একটি স্কুলে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক কনস্টেবল অরূপ মুখোপাধ্যায়ের সমাজসেবামূলক জীবনী, কাজে কর্তব্যপরায়ণতা, দক্ষতা এবং সততা নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছিলেন বাঙালি ছাত্রী অরিত্রা চক্রবর্তী। সেই প্রবন্ধ স্কুলে উচ্চ প্রশংসিত হওয়ার পর প্রথম স্থান অধিকার করে নিল।
আরও পড়ুন- মৌলিক অধিকার দিয়ে গরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করার প্রস্তাব আদালতের
মেয়ের প্রথম স্থান অধিকার করার খবর এদিন মেসেজ করে ট্রাফিক কনস্টেবল অরূপ মুখোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিলেন বাবা অরিন্দম চক্রবর্তী। সেই খবর পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বেজায় খুশি কলকাতা পুলিশের’শবর পিতা’অরূপ মুখোপাধ্যায়। কলকাতা টিভি ডিজিটালকে তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানান,”দেশেবিদেশে আমি অনেকবার পুরস্কৃত হয়েছি। তবু ছোট্ট মেয়ে অরিত্রার লেখা প্রবন্ধ স্কুলে প্রথম হওয়ায় আমি দারুণ খুশি হয়েছি”।
কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কনস্টেবল অরূপ মুখোপাধ্যায়। তিনি আগে সাউথ ট্রাফিক গার্ডের কনস্টেবল ছিলেন। বর্তমানে পোস্টিং রয়েছেন গড়িয়া ট্রাফিক গার্ডে। তার আসল বাড়ি পুরুলিয়ার পুঞ্চা গ্রামে। কলকাতা পুলিশে তিনি ‘শবর পিতা’ নামেই বেশি পরিচিত। কারণ, বেশ কয়েক বছর আগে তিনি দেশের বাড়িতে অত্যন্ত গরীব শবর ছেলেমেয়েদের জন্য একটি অবৈতনিক আবাসিক স্কুল চালু করেন। নাম দেন ‘পুঞ্চা নবদিশা মডেল স্কুল’।
আরও পড়ুন- নেশা ও দেহ ব্যবসার কারবার রুখতে তারকেশ্বরে হোটেলে অভিযান তৃণমূলের
নিজের চাকরির বেতনের টাকা থেকে এই স্কুল চালাতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু স্কুল চালানোর জন্য কয়েক বছর ধরে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা হিসেবে তার বেতন বন্ধ করে দেন ট্রাফিক বিভাগের কর্তারা। সেই কারণে বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন অরূপ মুহোপাধ্যায়। তবু একদিকে যেমন ডিউটি, অন্যদিকে তেমন গরিব ছেলে মেয়েদের জন্য স্কুল চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বুধবার রাতে অরূপবাবু বলেন,”কলকাতার বাসিন্দা অরিন্দম চক্রবর্তী কর্মসূত্রে সপরিবারে থাকেন আমেরিকার টেক্সাস অঞ্চলে। সেখানকার স্কুলে পড়ে তার মেয়ে অরিত্রা। বছর খানেক আগে কলকাতায় এসে অরিন্দম বাবু সপরিবারে পুরুলিয়ার পুঞ্চা গ্রামে বেড়াতে আসেন। সেই গ্রামে আমার সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। তখন অরিন্দম বাবু আমার স্কুল ঘুরে দেখেন। আমার সমাজসেবামূলক কাজকর্ম সপরিবারে দেখেন। এরপর তারা ফিরে যান আমেরিকায়। টেক্সাসে অরিত্রার স্কুলে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা হয়। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অরিত্রা আমার কাজকর্ম নিয়ে প্রবন্ধ লেখে। প্রতিযোগিতার শেষে দেখা যায়, তাঁর লেখা প্রবন্ধই প্রথম হয়েছে।”