কলকাতা : সুদূর ইউকে থেকে ডারফিন ডারেন নামে এক ব্যক্তি ইমেল মারফত অভিযোগ জানান। ক্রিপ্টো কারেন্সির অ্যাপ তৈরি করে প্রতারণা করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই কৈখালী এলাকার বাসিন্দা অরিজিৎ দে’কে গ্রেফতার করল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
ক্রিপ্টোকারেন্সি হল এক রকমের ডিজিটাল কারেন্সি। এই কারেন্সি কোনও দেশের সরকার তৈরি করে না। এগুলি তোলার জন্য কোনও Atm ও ব্যবহার করা হয় না। মূলত অনলাইন ট্রানজেকশন ও শপিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয় এই কয়েন। কোনও ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার হলে সেটি অনলাইন বিনিয়োগ করতে হয়। ফেরতও পাওয়া যায় অনলাইনেই।
এই অনলাইন কারেন্সি বিনিয়গের নামেই ফাঁদ পেতেছিল অভিযুক্ত। অরিজিৎ দে নামে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি পোকমোন নামে একটি ক্রিপ্টো কারেন্সি অ্যাপ তৈরি করে। সেই অ্যাপের শেয়ারে ইনভেস্ট করার জন্যে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে বিজ্ঞাপন দেয়। বিজ্ঞাপন দেখে উৎসাহী হয়ে বিদেশের প্রায় ৮০০০ নাগরিক।
আরও পড়ুন – চালককে মাদক মেশানো চা খাইয়ে বারুইপুরে ছিনতাই আস্ত টোটো
যারা এই অ্যাপের শেয়ারে আনুমানিক ৬ লক্ষ ডলার যার ভারতীয় মুদ্রায় মূল্য ৪ কোটি ৪২ লক্ষ ৪০ টাকা ইনভেস্ট করে। এর পরই যখন শেয়ার বাজারে এই কারেন্সির মূল্য বাড়তে থাকে সেই সময় এই অরিজিৎ দে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট ডিলিট করে দেয়। সব শেয়ার তুলে নেয় বলেও অভিযোগ। কেউ অভিযুক্তর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও লাভ হয় না।
এরপর ১১ই সেপটেম্বর ইউকের বাসিন্দা ডারফিন ডারেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক উচ্চ পদস্থ কর্তার কাছে মেল মারফত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। খোঁজ মেলে অভিযুজুক্তর। জানা যায় অভিযুক্ত কৈখালী এলাকার বাসিন্দা। নাম অরিজিৎ দে। পেশায় সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি আই টি সংস্থার কর্মী। এছাড়া সে নিজে একজন সটওয়্যার ডেভেলপার।
আরও পড়ুন – সুপারি কিলার দিয়ে তৃণমূল নেতাকে কীভাবে খুন করা হয়েছিল? ঘটনার পুনর্নির্মাণ আউসগ্রামে
অভিযুক্তর ব্যাংকের তথ্য থেকেও পুলিশ জানতে পারে ক্রিপ্টো কারেন্সির কিছু টাকা তার একাউন্টে ঢুকেছে। এরপরই মঙ্গলবার কৈখালী এলাকায় অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ক্রিপ্টো কারেন্সির অ্যাপ তৈরি কথা স্বীকার করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এরপর বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার স্বতঃপ্রণোদিত রুজু মামলার ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। বুধবার অভিযুক্তকে বিধাননগর আদালতে তোলা হয়েছে। এই ব্যক্তির সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।