কলকাতা: ভূপতিনগরে (Bhupatinagar) হামলার ঘটনায় এনআইএ (NIA) আধিকারিকদের রক্ষাকবচ আদালতের (Calcutta High Court)। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ, এনআইএ-র কোনও আধিকারিককে গ্রেফতার করা যাবে না। এনআইএর কোনও আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিশ দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও সংরক্ষণ করতে হবে। তদন্ত চলবে, কিন্তু চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করা চলবে না। রাজ্যের হলফনামা তলব। দুটি মামলার কেস ডায়রি তলব। ২৯ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন: জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পাবেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার
এনআইএ আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে এনআইএ তদন্ত করছে। তদন্তের সময় অভিযোগের পক্ষে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জোরালো প্রমাণ মেলে। তাদের মধ্যে ৪ জনকে ২ বার করে সমন পাঠানো হলেও তারা সাড়া দেননি।
৬ এপ্রিল ভোর ৫ টা নাগাদ আমার গ্রামে তদন্ত করতে যাই। ৬ এপ্রিল ভোর ৪ টা৩০ টা নাগাদ পুলিশকে জানানো হয়।
আমরা যখন দুজন সন্দেহভাজনকে সঙ্গে নিয়ে গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসছিলাম সেই সময় আমাদের উপর হামলা হয়।
সকাল ৮ টা ৪০ নাগাদ আমার এফআইআর (FIR) দায়ের করি। বিকাল ৪টা ৩০ টা নাগাদ আমার আদালত থেকে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নিজেদের হেফাজতে পাই। সন্ধ্যা ৬ টা ০৫ নাগাদ মনোব্রত জানার স্ত্রী আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।
আমার রাত ৩ টা ৩০ টের সময় গিয়েছি বলে অভিযোগ করা হয়। এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমাদের সঙ্গে মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন। আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মনোব্রত জানাকে শারীরিক ভাবে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। রাজ্য সরকারি হাসপাতালে তার পরীক্ষা হয়েছে। কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই।
রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ভোর ৪ টা ১৫ নাগাদ এনআইএ আধিকারিকরা ভূপতি নগর থানায় যান। তারা ৫ টি জায়গায় যাওয়ার কথা বলেন এবং নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কর্মী চান। এনআইএ কোথায় কোথায় যাবে সেকথা জানানো হয়নি।
আমাদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। তাও আমরা বাহিনী প্রস্তুত রেখেছিলাম। আমাদের বাহিনী প্রস্তুত রাখতে বলা হয়। বলা হয়েছিল যে যখন প্রয়োজন হবে তখন ডাকা হবে। কিন্তু তারপর আর কোনও ফোন আসেনি। আমাদের বাহিনী প্রস্তুত ছিল।
সকাল ৬ টা ২৫ নাগাদ এনআইএর তদন্তকারী আধিকারিক অর্পণ সাহা আমাদের ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের জানান।
সকাল ৬টা ৪৫ নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তখন এনআইএর আধিকারিকরা ফেরত আসছিলেন।
সকাল ৭ টা ৪৭ মিনিটে সবাই থানায় ফেরত আসে। সকাল ৮টা ৪০ নাগাদ এফআইআর দায়ের হয়।
বিকাল ৬ টা ৪৫ মিনিটে মনোব্রত জানার স্ত্রী মনি জানা একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এই বিষয়ে বিচারপতি বলেন, দ্বিতীয় এফআইআর দায়ের করার আগে পুলিশ কি মনে করেনি যে প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রয়োজন ?
রাজ্য আরও জানায়, আমাদের কাছে ধর্তব্যযোগ্য অপরাধের অভিযোগ এসেছিল, তাই আমরা FIR করেছি।
এনআইএর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক ভাবে ৩ জনের নাম উঠে এসেছে। আমরা ৪১এ নোটিশ পাঠিয়েছি।
যে এনআইএর আধিকারিক আহত হয়েছিলেন আমরা তাকে সাক্ষী হিসাবে ডেকে পাঠিয়েছি জবানবন্দী এবং মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। মনি জানার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৩ জনের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি এনআইএকে বলেন, আপনারাও তো তদন্তে সাহায্য করছেন না। রাজ্য পুলিশ যখন নথি চাইছে সেটা দিচ্ছেন না কেন ?
মনি জানা যে অভিযোগ করেছেন তার ভিত্তিতে এনআইএর এর আধিকারিকদের বিরুদ্ধে গুরুতর আঘাতের ধারা(ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩২৫ ধারা)দেওয়া হলো, আর এনআইএ যে অভিযোগ দায়ের করল তার ভিত্তিতে সামান্য আঘাতের ধারা (ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারা) দেওয়া হল ! তাও কোন প্রমাণ ছাড়া ? এটা কি ধরনের তদন্ত ? কে দায়ের করেছে এই এফআইআর? মনি জানা তার অভিযোগে কোথাও গুরুতর আঘাতের কথা জানাননি, পুলিশ নিজেই যুক্ত করেছে। মনি জানা যেটা বাদ রেখেছিলেন সেটা পুলিশ পূরণ করে দিয়েছে।
সিবিআই আইনজীবী জানান, আদালত চাইলে আমরা তদন্তে প্রস্তুত।
দুটি এফআইআরের ক্ষেত্রেই পুলিশের কাছে সমান তৎপরতা আশা করে আদালত। কেন্দ্রের আইনজীবী বলেন,
এখানে তদন্ত করতে এসে ইডি এবং ইনকাম ট্যাক্সের আধিকারিকরা পর্যন্ত মার খেয়েছে।
আরও খবর দেখুন