কলকাতা: আমরা অনেক সময় এমন অনেক শারীরিক লক্ষণ এড়িয়ে যাই, যা পরবর্তী সময়ে বড় রোগ ডেকে আনে। ক্লান্তি, ঝিমুনিভাবের মতো লক্ষণগুলো সাধারণ এবং শারীরিক পরিশ্রমের কারণে হয় বলেই মনে করেন বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু এই উপসর্গই গুলিই পরবর্তীতে বিপদ ডেকে নিয়ে আসে। যেমন, খিদে না হওয়া, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, সারাদিন ধরে ঝিমুনিভাব এগুলো রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার লক্ষণ হতে পারে। আর এই রোগের ক্ষেত্রে মহিলাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
কীভাবে বুঝবেন আপনি রক্তাল্পতায় ভুগছেন?
১) হিমোগ্লোবিন রক্তের মাধ্যমে সারা দেহে অক্সিজেন বহন করে। আর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমলে দেহে অক্সিজেনের ঘাটতিও তৈরি হবে। এর জেরে একটু কাজ করেই আপনি হাঁপিয়ে যাবেন। যে কোনও কাজ করতে গেলেই আপনার ক্লান্তি বোধ হবে।
২) রক্তাল্পতার আরও একটি লক্ষণ হল, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন। অর্থাৎ হার্টবিট অত্যধিক বেড়ে যায়। আসলে আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা লোহিত রক্তকণিকার প্রোটিন, যা শরীরে অক্সিজেন বহন করতে সাহায্য করে। যখনই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়, তখনই হৃৎপিণ্ডকে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য অতিরিক্ত শক্ত পাম্প করতে হয়।
৩) এছাড়াও মাথা ঘোরা ও মাথা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। তার সঙ্গে বিষণ্ণতা বাড়ে। আয়রনের ঘাটতির কারণে অনেক মহিলাই মানসিক সমস্যায় ভোগেন।
আরও পড়ুন:ওজন কমাতে খালি পেটেই লেবু জল খাচ্ছেন? জানেন কী ক্ষতি করছেন শরীরের
৪) অনেকেই মহিলাই সারাবছর চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। দেহে আয়রনের ঘাটতি থাকলে চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে। এছাড়া মুখ-চোখ শুকনো দেখায়। আর তাই মুঠো-মুঠো চুল পড়তে শুরু করলে খুব শীঘ্রই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিন।
৫) রক্তাল্পতার প্রভাবে ত্বক ফ্যাকাশে দেখায়। অনেক সময় হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। এই ধরনের লক্ষণগুলি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
রক্তাল্পতার ঝুঁকি কমবে যে সব খাবারে- যে সব ফল ও সবজির মধ্যে ভিটামিন সি রয়েছে, সেগুলো খেতে হবে। লেবু জাতীয় ফল, কিউই, আপেল, পেয়ারায় ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এগুলো আয়রনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। একইভাবে, টমেটো, ব্রকোলি, বাধাকপি, ফুলকপি খান। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে পালং শাক ও বিটরুট স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপযোগী।
এছাড়া ড্রাই ফ্রুটস রাখুন ডায়েটে। আমন্ড, কাজু, কিশমিশ, খেজুর খান। রক্তাল্পতা থেকে সেরে উঠতে রেট মিট খেতে পারেন। কিন্তু সীমিত পরিমাণে। এছাড়া মুরগির মাংস, মুরগির মেটে, মাছ, ডিম ইত্যাদি খেলে সহজেই রক্তাল্পতার ঝুঁকি কমানো যায়।