Placeholder canvas
কলকাতা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
মমতা ‘জুজু’র জন্যই কি কৃষিবিল প্রত্যাহার ?
জয়ন্ত ঘোষাল Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১, ০৭:১৮:৫৫ পিএম
  • / ৫৪৯ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

আজ মনে পড়ছে, কৃষি বিলের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন যখন দিল্লিতে শুরু হল তখন হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশের সীমান্তে তাঁরা অবস্থান করছেন। সেই আন্দোলন ভাঙার জন্য দিল্লির সরকার বাহাদুর খড়্গহস্ত। নানানভাবে চেষ্টা চলছে এই আন্দোলন প্রত্যাহার করার, এ প্রায় এক বছর আগের কথা। আরও মনে পড়ছে যে, এই আন্দোলনটা মূলত অরাজনৈতিক আন্দোলন, কৃষকদের আন্দোলন। কৃষকদের মধ্যে নানান স্তর থাকতে পারে কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলের পোস্টার-ব্যানার নিয়ে এই আন্দোলনটা শুরু হয়নি।  

সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেত্রী যিনি ফোন করেন কৃষক নেতাদের এবং তাঁর সমর্থন প্রথমেই জানিয়ে দেন। কৃষকদের ইস্যু যেখানে মমতা সবসময় সেখানে এগিয়ে যান, সমর্থনের হাত বাড়ান। ভুলে গেলে চলবে না যে, কমিউনিস্ট পার্টি যে রকম একদা তেভাগা এবং তেলেঙ্গানার কৃষি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উত্থিত হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতিও কিন্তু সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে কৃষকদের জমি অধিগ্রহণের ইস্যুতেই গড়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন: সিঙ্গুর থেকে সিংঘু, ঐতিহাসিক অগ্নিপথ

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে কৃষক নেতারা সাড়া দেন এবং টিকায়েত নিজে কলকাতায় আসেন এবং সিঙ্গুরে যান। টিকায়েতের কলকাতায় আসা নিয়েও সেই সময় বিজেপির রাজ্য নেতারা ক্ষুদ্ধ হন এবং বারবার তাঁরা সমালোচনার তোপ দাগেন। ক’দিন আগেও শুনছিলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কলকাতায় শিল্পের নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন বিজেপি নেতারা মমতার জমি অধিগ্রহণের নীতি বদলানোর দাবি তুলেছেন।

আজ কিন্তু কৃষি বিল প্রত্যাহার করতে যখন নরেন্দ্র মোদী বাধ্য হলেন, সেটা ভোটের জন্যই হোক, কৃষক আন্দোলনের চাপে হোক, সংসদ অধিবেশনের আগে বিরোধীদের বিক্ষোভের ভয়েই হোক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জুজু’ দেখেও হতে পারে। কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার কৃষক আন্দোলনের ব্যাপারে সংসদে সোচ্চার হবেন বলে তৃণমূল কংগ্রেসকে মোটামুটি তৈরি করে ফেলেছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে এই বিল প্রত্যাহার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

রাজনীতিটা হল আর্ট এবং সায়েন্স, দু’টোই। এই যে প্রায় এক বছর ধরে চলা কৃষক আন্দোলন, তারপর, আজ গুরু নানকের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহার করে নিলেন। তিনি কৃষকদের উদ্দেশে বললেন, ‘আসুন আমরা একটা নতুন অধ্যায় শুরু করি। আপনারা এখন যে যার নিজের বাড়ি চলে যান। ক্ষেতে যান। একটা নতুন অধ্যায় শুরু করা যাক।’

এটা কৃষক আন্দোলনের সাফল্য। এত বাধা-নিষেধ, দমন-পীড়ন, এতদসত্ত্বেও কোনও রকম চাপের মুখে নতিস্বীকার না করে টিকায়েতের নেতৃত্বে কৃষক আন্দোলন সফল হল।

আরও পড়ুন: সত্যাগ্রহীদের কাছে মাথা নোয়াল আক্রমণাত্মক হিন্দুত্ববাদ

সুতরাং সায়েন্স বা বিজ্ঞান হল, নরেন্দ্র মোদী, তাঁর যে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব, যে অহঙ্কার, যে রোল ব্যাক না করার তীব্র মানসিকতা, এ সবেরই একটা রাজনৈতিক পরাজয়। কিন্তু, এই বিজ্ঞানের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদীর রাজনীতির কৌশলের একটা আর্ট-ও এখানে নিহিত আছে। সেটা হল রাজনীতিতে শুধু সাফল্য হয় না, ব্যর্থতাও আসে। এটা এক ধরনের প্যাকেজ ডিল। কিন্তু রাজনীতিতে ব্যর্থতার মধ্যে থেকে সেই সংকটজনক অধ্যায় থেকে বেরোনোর রাস্তা কী হতে পারে তার পথ বের করাটা হচ্ছে ‘আর্ট’। আর্ট অফ ওয়ার্ক।

পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। এই নির্বাচনে একদিকে বিস্তীর্ণ পাঞ্জাব রাজ্য আর উত্তরপ্রদেশের বিশেষত পশ্চিমাঞ্চল কৃষক আন্দোলন দ্বারা প্রভাবিত। কেননা এই এলাকায় জাঠ সম্প্রদায় ও কৃষিভিত্তির মানুষ প্রচুর রয়েছেন। প্রয়াত চরণ সিংয়ের নাতি অর্থাৎ প্রয়াত অজিত সিংয়ের পুত্র জয়ন্ত সিং এখন সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং অখিলেশের সঙ্গে আছেন। এই এলাকায় পরাজয় যোগী আদিত্যনাথের জন্য মোটেও কাঙ্খিত নয়। আবার পঞ্চনদের তীরে যারা বেণী পাকাইয়া শিরে বিজেপিকে কার্যত কোণঠাসা করে দিয়েছে সেখানে হৃত গৌরব উদ্ধার করার চেষ্টা নানান ভাবে করছে সেখানে। এই বিল প্রত্যাহারও একটা ক্ষত-র স্থান নিরাময়ের চেষ্টা।

এমনকি ক’দিন আগে পাকিস্তানে শিখ ধর্মাবলম্বীদের গুরু নানকের পবিত্র জন্মস্থানে যাওয়ার যে অনুমতি খোদ কট্টরবাদী নেতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করলেন সেটাও সেই রাজনীতিরই অঙ্গ। এটাতে কোনও সন্দেহ নেই যে পাকিস্তানের করতারপুরে শিখ পূণ্যার্থীরা যে যাবেন তার সমস্ত ব্যবস্থা করার জন্য নিশ্চই আগাম পাকিস্তানের সঙ্গেও প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে কোনও একটা স্তরে আলাপ আলোচনা সরকার করেছে। তা না হলে এটা সম্ভব হয় কী করে!

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর কোন পদ্ধতিতে বাতিল হবে ৩ কৃষি আইন

সুতরাং, আজকের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু একদা বলেছিলেন যে নরেন্দ্র মোদী রোল ব্যাক করেন না। তিনি ‘নো রোল ব্যাক’ প্রধানমন্ত্রী। যেটা সিদ্ধান্ত নেন সেটায় দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেন, পিছু হটেন না। তাই হরিয়ানায় অজাঠ মুখ্যমন্ত্রী যতই সমালোচনার মুখে পড়ুন, তিনি বদলাননি। মহারাষ্ট্রেও ব্রাহ্মণ মুখ্যমন্ত্রী করে, অ-মারাঠা মুখ্যমন্ত্রী করে তিনি চালিয়ে গেছেন। পিছু হটেননি। কিন্তু এই দ্বিতীয় অর্ধের মোদী শাসনের যতই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে দেখা যাচ্ছে মোদীর সেই কঠোর মানসিকতার যে রণকৌশল সেটা বদলাতে বাধ্য হচ্ছে।

 কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর বদল হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে তো বেশ কয়েকবার বদল করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। বহু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই নরেন্দ্র মোদীকে পিছু হটতে হয়েছে। কিন্তু এই বিল প্রত্যাহারের ব্যাপারে এতটাই তিনি অনমনীয় ছিলেন, কেননা এই বিল প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে কর্পোরেট জগত, শিল্প জগত, আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় কিন্তু আবার নরেন্দ্র মোদীর একটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এমনকি কংগ্রেস তো এই কৃষি সংস্কারের পক্ষেই ছিল। ইউপিএ জমানাতেও কৃষি সংস্কার চেয়েছিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। মনমোহন সিং এই বিলের পক্ষেই ছিলেন। যদিও কংগ্রেস এখন বলে তারা যে বিলের খসড়া করেছিল আর এখন যে বিল পাশ করা হয়েছে সেটা এক নয়। সেখানে অনেক সংশোধন প্রয়োজন।

সোজা কথায়, এক পক্ষ বলছে যে, এই বিল কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করবে না এবং সেগুলো কর্পোরেট, আম্বানি-আদানিদের স্বার্থ রক্ষা করবে। আর অন্যদিকে শাসক দল বলছে, এটাতে আরও কৃষকদের রোজগার বাড়বে।

যখন কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছিল তখন কিন্তু এই আন্দোলন ভাঙার জন্য সবরকম চেষ্টা হয়েছে। দিল্লির সীমান্তে পুলিশ গেছে, লাঠিচার্জ হয়েছে, অনেক কৃষক মারাও গেলেন। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পুত্রের গাড়ি চাপা দিল কৃষকদের। সেই ঘটনা বোধহয় আন্দোলনকে আরও তীব্র থেকে তীব্রতর করে দিয়েছে। অনেকে বলেছিল যে, কৃষকদের আন্দোলনটা বড়লোকদের আন্দোলন। এখানে শুধু এসি লাগানো আছে, বড় বড় ট্রাক্টর নিয়ে আসছে। এরা তো কৃষক নয়, এরা কুলাক। এরা জোতদার, জমিনদার। কিন্তু দেখা গেল যে গোটা রাজ্যে এই কৃষক আন্দোলনের প্রভাব পড়ল। এমনকি পশ্চিমবঙ্গে যেখানে ভূমি সংস্কার হয়েছে এবং খণ্ড-বিখণ্ড বর্গাদার আছে, ভাগচাষী আছে, তাঁরাও কিন্তু কৃষক আন্দোলনের একটা প্রতীকী সমর্থনের পথে এগিয়ে এল। অর্থাৎ কৃষক আন্দোলনটা একটা অখণ্ড ভারতের আন্দোলন হয়ে উঠল।

আরও পড়ুন: কেন তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার, কী যুক্তি দিলেন মোদি? ডি-কোড করল কলকাতা টিভি ডিজিটাল

আর একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সেটা হল, এই আন্দোলনটা কিন্তু অরাজনৈতিক আন্দোলন। বহুদিন পর রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে একটা অরাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিবাদ যেখানে গোটা দেশের নাগরিক সমাজ যুক্ত হয়েছে এবং সঠিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের সময় তিনি কিন্তু ফোন করে টিকায়েতের সঙ্গে কথা বলেছেন, টিকায়েত কলকাতায় গেছেন, মমতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন এবং মমতা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের মধ্য দিয়ে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ উঠে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী পদমর্যাদায় তিন তিনবার, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষক আন্দোলনের নেত্রী। তিনিই কিন্তু এই আন্দোলনকে আরও অক্সিজেন জুগিয়েছেন সরাসরি।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

নাম না করে বিজেপির দেবাশিসকে খোঁচা তৃণমূলের শতাব্দীর
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
আজ থেকে আরও বাড়বে শহরের তাপমাত্রা, দক্ষিণবঙ্গে লাল সতর্কতা জারি
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
শনিবার ভাগ্য খুলবে ৫ রাশির জাতকের
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গে এনএসজি কমান্ডো ও রোবট দিয়ে সার্চ করা উচিৎ’ সন্দেশখালি নিয়ে সরব মিঠুন থেকে সুকান্ত
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
সন্দেশখালিতে দিনভর তল্লাশি, গুলি-বন্দুক, উদ্ধার শাহজাহানের নথিপত্র
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
দ্বিতীয় দফায় কোন কোন হেভিওয়েটদের ‘ভাগ্য পরীক্ষা’ ?
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
২৬১ রান করেও লজ্জার হার কলকাতার
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
পাপারাজ্জিদের উপর রেগে লাল জুনিয়ার এনটিআর, কিন্তু কেন?
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
বাংলার তিন কেন্দ্রে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটের হার ৭০ শতাংশ
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার আঁকড়ে থাকার অধিকার নেই, মন্তব্য শুভেন্দুর
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
৬ বছরে গুগলে ১০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বিজেপির
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
গরমে বাংলায় ভোটের নামে কমিশন অত্যাচার করছে, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
শাসক দলের ভয়ে বুথ ছেড়ে পালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী!
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
সন্দেশখালিতে বিস্ফোরকের সন্ধানে রোবট দিয়ে তল্লাশি এনএসজির
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team