জয়জ্যোতি ঘোষ
১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু বিতর্ক এবং একইসঙ্গে কিছু সোনালি মুহূর্ত। একবার ফিরে দেখা যাক সেইসব মুহূর্তগুলি-
১। ১৯৯২ সাল। পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে মুখোমুখি ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। নন স্ট্রাইকিং এন্ডে থাকা পিটার কার্সটেনকে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কর্ণপাত করেননি। আর যেটার মাশুল দিতে হল কার্সটেনকে। তৃতীয় বারের বার রান আউট করে প্যাভিলিয়নের দিকে আঙুল দেখান কপিল দেব নিখাঞ্জ। আউট হয়ে ফেরার পথে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পিটার কার্সটেন। আর এরজন্য পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটেও নেওয়া হয় পিটার কার্সটেনের।
২। ১৯৯৭ সালের ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। কেপটাউনে মহাকাব্যিক পার্টনারশিপ আজহার এবং শচীনের। ৫৮ রানের দলীয় স্কোরে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর অসাধারণ যুগলবন্দী দেখা যায় শচীন-আজহারের। মাস্টার-ব্লাস্টার করেন ১৬৯ রান, আজহার ১১০ বলে করেন ১১৫ রান। সেইসময়ের দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ে ম্যাচ শেষে বলেন, ‘আজহারের এই ইনিংস আমার দেখা অন্যতম সেরা।’
৩। ১৯৯৭ সালেরই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল। মুখোমুখি ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচেই বাদানুবাদে জড়ান রাহুল দ্রাবিড় এবং অ্যালন ডোনাল্ড। ডোনাল্ডকে লং অনের উপর দিয়ে একটি ছয় মারেন দ্রাবিড়। এরপরই আপত্তিকর কিছু মন্তব্য করেন ডোনাল্ড। ওই ঘটনার প্রায় পঁচিশ বছর পর দ্রাবিড়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন অ্যালন ডোনাল্ড। একইসঙ্গে ভারতীয় দলের বর্তমান হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের জন্য প্রশংসাস্তুতি শোনা যায় ডোনাল্ডের মুখে।
৪। ২০০১ সালে ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন তেন্ডুকরের বিরুদ্ধে বল বিকৃতি করার অভিযোগ আনেন ম্যাচ রেফরি মাইক ডেনেস। এছাড়াও সৌরভ-শেহবাগ-দীপ দাশগুপ্ত-শিবসুন্দর দাশ-হরভজন সিং সহ ছয়জন ভারতীয় ক্রিকেটারকেও নানান কারণে কাঠগড়ায় দাঁড় করান সেই ম্যাচ রেফরি। এরপর তোলপাড় হয়ে যায় ক্রিকেট বিশ্ব। ম্যাচ রেফরি মাইক ডেনেসকে সরাতে বাধ্য হয় আইসিসি। আন্তর্জাতিক স্ট্যাটাস হারায় এই টেস্ট ম্যাচ।
৫। ২০০৬-এর ডিসেম্বর মাস। ওয়ান ডে সিরিজে হেরে জেরবার টিম ইন্ডিয়া। দলের খারাপ অবস্থায় ডাক পান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর এই সুযোগকে দারুণভাবে কাজে লাগান ‘প্রিন্স অব ক্যালকাটা’। জোহানেসবার্গ টেস্টে কঠিন পরিস্থিতিতে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলেন সৌরভ। শুধু এখানেই শেষ নয়। সেই টেস্টেই শ্রীসন্থের দুর্দান্ত স্পেলের কারণে ম্যাচ জেতে ভারত। যদিও পরে সিরিজ হেরে যায় দ্রাবিড় এন্ড কোম্পানি।
৬। ২০১০-এর ডিসেম্বরে সেঞ্চুরিয়নে ৫০তম টেস্ট শতরান করেন শচীন তেন্ডুলকর। যদিও সেই টেস্ট ম্যাচ বড় ব্যবধানে হেরে যায় ভারত। কিন্তু সেঞ্চুরিয়নে টেস্টে সেঞ্চুরির হাফ-সেঞ্চুরি পূ্রণ করা থেকে আটকানো যায়নি মাস্টার-ব্লাস্টারকে।
এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি ভারত। এবারে কি হবে প্রতীক্ষার অবসান? আশায় বুক বাঁধছেন ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীরা।
আরও অন্য খবর দেখুন: