কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: করোনার (COVID-19) তৃতীয় ঢেউ (Third wave) ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এই অবস্থায় রাজ্যে আংশিক লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসল সব জেলা প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হলো লালবাগের হাজারদুয়ারির দরজা। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত হাজারদুয়ারির মিউজিয়াম বন্ধ থাকবে বলে নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সকালে বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেখে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে টাঙা চালকরা। মিউজিয়াম বন্ধ দেখে পর্যটকরা হতাশায় বাড়ি ফিরছেন।
ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস জুড়ে লালবাগের হাজারদুয়ারিসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখেন পর্যটকরা। এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সেই সময় দু পয়সা রোজগার করেন। গত ২৫ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি রেকর্ড ভিড় হয়েছিল লালবাগের হাজারদুয়ারিতে। রবিবারও তিলধারণের জায়গা ছিল না। ওমিক্রন সংক্রমণের আশঙ্কায় রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই বন্ধ করে দেওয়া হল হাজারদুয়ারির দরজা। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পর্যটন কেন্দ্রগুলি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন। গতকাল রাত থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আচমকা নির্দেশে সমস্যায় পড়েছেন বেশ কিছু পর্যটক।
আরও পড়ুন : পুরুলিয়ার পর্যটনস্থল ‘সাহেববাঁধ শিকারা পয়েন্টে’র বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, সংযোগ বিচ্ছিন্ন
রবিবার সন্ধে থেকেই বিভিন্ন ঘাটগুলোতে গার্ডওয়াল লাগিয়ে দেওয়া হয় এবং পর্যটকদের সচেতন করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, যে সমস্ত পর্যটক আটকে রয়েছেন, তাঁরা যেন অবিলম্বে বাড়ি চলে যান। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে, দিঘাতে এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার পর্যটক আটকে রয়েছেন। রাতের জন্য তাঁদের বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং বাকিরা যাতে কাল সকালের মধ্যে ট্রেনে যেতে পারেন, এমন ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার বিধিনিষেধের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সরকারি নির্দেশ মতো রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি খোয়াই হাট বন্ধ করে দিল প্রশাসন। শান্তিনিকেতন থানার পুলিস গিয়ে বন্ধ করে দেয় সোনাঝুরির খোয়াই হাট।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে কড়া বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে জঙ্গল পর্যটনে। গরুমারা ও জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান এবং বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটকদের প্রবেশ, গাড়ি ও হাতি সাফারি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সঙ্গে বন্ধ থাকছে রাজ্য সরকারের সব ধরনের বিনোদন পার্ক থেকে শুরু করে চিড়িয়াখানাগুলি। পর্যটনের ভরা মরশুমে রাজ্য সরকারের ওই নিষেধাজ্ঞায় মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।
আংশিক লকডাউনের জেরে বন্ধ বাঁকুড়া জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলি। আর তার জেরেই মুখ থুবড়ে পড়ল জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজন। পর্যটনের শহর বিষ্ণুপুরের সমস্ত মন্দিরের দরজা বন্ধ। একের পর এক হোটেল বুকিং বাতিল। ঘুরতে এসেও মন্দির দেখতে না পেয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে পর্যটকদের। চোখেমুখে হতাশার ছাপ পর্যটকদের। অন্যদিকে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার জেরে মুখ থুবড়ে পড়ল জেলার পর্যটন শিল্প।