ব্যারাকপুর: উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার অশান্তির ঘটনায় সোমবার ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) বিরুদ্ধে নতুন করে এফআইআর দায়ের করল তৃণমূল নেতৃত্ব। অর্জুন সিংয়ের সঙ্গেই আরও কয়েক জন লোকাল বিজেপি নেতার নাম রয়েছে এফআইআরে।
বিজেপি-র তরফেও ভাটপাড়া পুরসভার পুরপ্রশাসক গোপাল রাউত এবং অমিত সাউ-সহ মোট ৯ জনের নামে রবিবার রাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সূত্রের খবর, বিজেপি আইপিসি-র ৩৪১, ৩০৭, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৭ ধারা ছাড়াও অস্ত্র আইনে অভিযোগ রুজু করে। অভিযোগ হয়েছে ভাটপাড়া থানায়।
নেতাজি জয়ন্তী ঘিরে অশান্তির জেরে ভাটাপাড়া থানার পুলিসও রবিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আর একটি মামলা করে। সব মিলিয়ে ভাটপাড়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত চারটি এফআইআর দায়ের হল। যদিও অর্জুনপুত্র পবন সিংয়ের নামে কোনও এফআইআর হয়নি বলে পুলিস সূত্রে এদিন নিশ্চিত করা হয়।
রবিবার সকালে নেতাজি-জয়ন্তীর অনুষ্ঠান ঘিরে ভাটপাড়ায় ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়। নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিজেপি এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেখানে ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুনপুত্র পবন সিং নেতাজি মূর্তিতে মাল্যদান করতে এসে বাধা পান। তার জেরেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিজেপি অভিযোগ করে, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পবন সিংকে নেতাজির গলায় মালা পরাতে বাধা দিয়েছে।
এখান থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। খবর পেয়ে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ভাটপাড়ায় এলে, উত্তেজনার আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতার অভিযোগ, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং মালা দিয়ে বেরোনোর সময় তাঁর পিছনে তিন-চার জন ধাওয়া করে। অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তিও হয়।
অর্জুন সিং দাবি করেন, তাঁকে নিশানা করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। সেই উত্তেজনা থেকেই বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে শাসকদলের লোকজনের হাতাহাতি বেধে যায়। অর্জুনের অভিযোগ, সেসময় তাঁর নিরাপত্তরক্ষীকে টার্গেট করে গুলি চালানো হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর কান ঘেঁষে সেই গুলি বেরিয়ে যায়।
গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল কংগ্রেসের পালটা অভিযোগ, অর্জুন সিংয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা শূন্যে গুলি চালিয়েছেন। ব্যারাকপুরের সাংসদ নিরাপত্তারক্ষীদের গুলি চালানোর অভিযোগ স্বীকার করেননি। তাঁর সাফাই, পরিস্থিতি খারাপ হতে দেখে নিরাপত্তারক্ষীরা বন্দুক বের করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অর্জুন সিংয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা শূন্যে ৬ রাউন্ড গুলি চালিয়েছেন। তার পরেই ভাটপাড়ায় চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এক পর্যায়ে RAF-ও নামাতে হয়।
রবিবার ভাটপাড়ায় গুলি চলেছে কি না, পুলিস তা জানায়নি। পুলিসের বক্তব্য, তদন্তের পরই বলা সম্ভব। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।