পুরুলিয়া: ১৯৩৯ সালের ৯ ডিসেম্বর। ফরওয়ার্ড ব্লক দলের কাজে পুরুলিয়া শহরে পা রাখলেন সুভাষ বসু। গোটা শহর তো বটেই, জেলার দূরদূরান্ত থেকে মানুষের ঢল নামল। দিনভর অক্লান্ত পরিশ্রমের শেষে পুরুলিয়ার ঠান্ডায় ধুম জ্বর এল সুভাষচন্দ্রের। সকলের পরামর্শে কলকাতায় না ফিরে, সেখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যাঁর বাড়িতে সেদিন তিনি ছিলেন, সেখানে আজও প্রতিবছর পালিত হয় নেতাজি জন্মজয়ন্তী।
একরাতের জন্য সুভাষচন্দ্র বসুর সান্নিধ্য পেয়েছিল পুরুলিয়া শহর। নবগঠিত ফরওয়ার্ড ব্লকের সাংগঠনিক শক্তির বিকাশ ও প্রসারের কাজে পুরুলিয়ায় এসেছিলেন দেশনায়ক সুভাষ। পুরুলিয়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নামোপাড়ার বাসিন্দা প্রখ্যাত আইনজীবী এবং পুরুলিয়া পুরসভার প্রথম পুরপ্রধান নীলকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায়ের আপ্যায়নে তাঁর বাড়িতে এসে পদার্পণ করেন নেতাজি।
নেতাজিকে একবারের জন্য চাক্ষুষ করতে সেদিন ছুটে এসেছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য উৎসাহী মানুষ। সারাদিনের শারীরিক ধকলে ৯ ডিসেম্বর রাতের দিকে প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নীলকন্ঠ নিবাসেই রাত্রিযাপন করেন। পরদিন ভোর হতেই সামান্য জলযোগ সেরে তিনি রওনা দেন কলকাতার উদ্দেশে। নেতাজির জন্মদিবসে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত এই নীলকন্ঠ নিবাস সংরক্ষণের দাবি জানালেন পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন- Netaji Birthday: রাজ্যকে কিছু না জানিয়ে নেতাজি ট্যাবলো বাতিল করেছে কেন্দ্র, সরব মমতা
এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে নীলকন্ঠ নিবাসে স্থাপিত হয় নেতাজির আবক্ষ মূর্তিও। জন্মদিবসে আজও জ্বলজ্বল করে ওঠে সেদিনের স্মৃতি। আর তখন থেকেই ‘নীলকণ্ঠ নিবাস’-এ আজও মর্যাদার সঙ্গে দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবস পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর দেশনায়কের আবক্ষ মূর্তির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে পূর্ণ মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়।