কলকাতা: পুজোর পর পরই কাজ শুরুর কথা ছিল বীরভূমের দেউচা-পাঁচামিতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের কয়লা-ব্লক প্রকল্পের কাজ।
বাম আমলে এই এলাকায় পাথর খাদানের কাজ শুরু হয়। যদিও তারপর কোনও পুনর্বাসন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই দেউচা-পাঁচামির মানুষের মনে কিছু টালবাহানা ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পুনর্বাসন প্যাকেজে সেই জটিলতা কেটে গিয়েছে। কী রয়েছে মমতা’র ক্ষতিপূরণ প্যাকেজে? কলকাতা টিভি ডিজিটালের এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট।
আঠেরোটি গ্রাম। সব মিলিয়ে ৩ হাজার চারশো একর জমি। সরকারি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে দেউচা-পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লা-ব্লক প্রকল্প এলাকায় তিন হাজার দশটি পরিবারের বাস। এর মধ্যে এক হাজার তেরোটি আদিবাসী পরিবার। প্রস্তাবিত প্রকল্পের দিওয়ানগঞ্জ-হরিণডাঙা অংশের দিক থেকেই প্রথম খননের কাজ শুরু হবে। তার আগেই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সম্পূর্ণ করা হবে।
জমি, বাড়ি, গাছ, পশুখামার বা গোয়াল ঘর, শস্য সবকিছুর জন্যই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ঠিক হয়েছে প্রকল্পের আওতায় যে জমি পড়বে তার মালিককে বিঘা প্রতি ১০ লক্ষ টাকা থেকে ১৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। জমির মান অনুযায়ী টাকার অংকের ক্ষতিপূরণ ঠিক করা হবে। জমির আয়তন যদি বিঘার কম হয় তা হলে কাঠা প্রতি ৫০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। জমির উপর যদি দেখা যায় কোনও বাড়ি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে কী হবে? ঠিক হয়েছে সরকার নির্ধারিত দামেই দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ।
একই রকম ভাবে জমির উপর গাছ বা শস্য থাকলে সরকার নির্ধারিত দামেই প্যাকেজ পাবেন জামির মালিকরা। গোয়াল ঘর বা পশুখামার থাকলে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন-কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখানো মমতা বুঝিয়ে দিলেন সিঙ্গুর জমি অধিগ্রহণের মডেল নয়
জমির মালিকরা জমি দেওয়ার পর বা বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার পর কোথায় থাকবেন? তারও বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে সরকারি প্যাকেজে। ঠিক হয়েছে পরিবার পিছু একটি করে বাড়ি দেওয়া হবে। পাঁচ ডেসিবেল জমির উপর তৈরি করা হবে বাড়ি। সাড়ে পাঁচশো স্কোয়ার ফুটের বাড়িতে থাকবে দু’টি করে ঘর। থাকবে একটি রান্নাঘর ও একটি বাথরুম, সিঁড়ি। পুনর্বাসন কলোনি এলাকায় এই বাড়িগুলি তৈরির পরিকল্পনা করেছে সরকার।
পুনর্বাসনের সময় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার সময় এবং নতুন করে বসবাস শুরু করার জন্য এককালীন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ঠিক হয়েছে পরিবার পিছু এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার। যদি নতুন বাসস্থানে নলকূপ খননের প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার পাঁচ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে বলে ঠিক হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিদিনের খরচ, জীবিকা চালানোর খরচ হিসেবে পরিবার পিছু মাসিক দশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে সরকার।