রাশিয়া–১ ফিনল্যান্ড–০
(অ্যালেক্সিই মিরানচুক)
এবারের ইউরোতে প্রথম জয়ের মুখ দেখল রাশিয়া। প্রথম ম্যাচে বেলজিয়ামের কাছে হারার পর তারা অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে গিয়েছিল। ডু অর ডাই ম্যাচে তাদের জিততেই হত। তাই প্রথম থেকেই পর্যাপ্ত প্রাধান্য নিয়ে খেলে রাশিয়া আরাল ফিনল্যান্ডকে এবং নক আউটে যাওয়ার আশা জিইয়ে রাখল ভাল মতোই। শেষ ম্যাচে তারা যদি ডেনমার্কের সঙ্গে ড্র-ও করে তাহলেও প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া আটকাবে না। ম্যাচের সিংহভাগ বল দখলে রেখেও রাশিয়া যে মোটে এক গোলে জিতল, তার জন্য তাদের গোল মুখে ব্যর্থতাই দায়ী। মাঝ মাঠের প্রাধান্যকে তারা বড় ব্যবধানের জয়ে পরিণত করতে পারেনি। যে ম্যাচে তাদের গোলকিপার মাতভেই সাতোনভকে একটা কঠিন বল ধরতে হয়নি সে ম্যাচে এক গোলে জয় বেমানান।
ইউরোতে টিকে থাকতে গেলে এই ম্যাচটাতে জিততেই হত রাশিয়াকে। কারণ বি গ্রূপের প্রথম ম্যাচে বেলজিয়ামের কাছে তিন গোলে হারতে হয়েছিল গত বিশ্ব কাপে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া রাশিয়াকে। উল্টো দিকে ডেনমার্ককে হারিয়ে ফিনল্যান্ড তিন পয়েন্ট পেয়ে বসে আছে। ফিনিসদের কৃতিত্ব তারা এই প্রথম কোনও বড় টুর্নামেন্টে খেলছে। বিশ্ব কাপ তো দূরের কথা তারা কখনও ইউরোতেও খেলেনি। প্রথম ম্যাচে তারা ডেনমার্কের মুখোমুখি হয়েছিল কোপেনহেগেনে। সে ম্যাচে ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য ম্যাচ স্থগিত হয়ে যায়। পৌনে দু ঘণ্টা ড্রেসিং রুমে অপেক্ষা করার পর আবার খেলতে নামে ফিনল্যান্ড এবং ডেনমার্ককে হারায়।
বুধবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের গজপ্রম এরিনায় ফিনল্যান্ড কিন্তু নিজেদের ওজন মাথায় রেখে খেলতে নেমেছিল। তারা জানত রাশিয়া ম্যাচ জেতার জন্য গোল পেতে মরিয়া হবে। তাই ডিফেন্সিভ নয়, কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর খেলতে চেয়েছিল তারা। তাদের কোচ মার্কু কানেরভা একটু রক্ষণশীল মনোভাবের কোচ। রাশিয়ার কোচ স্টানিস্লাভ চেরচেসভ আবার উল্টো। পরিস্থিতির চাপে পড়ে হারও বেশি আক্রমণাত্মক হতে হয়েছিল তাঁকে। প্রথম থেকেই তাই রাশিয়ান গোলাগুলি বর্ষিত হতে শুরু করল ফিনল্যান্ডের উপর। রুশী অধিনায়ক আরটিওম দিয়ুবার নেতৃত্বে তাদের একটার পর একটা আক্রমণ আছড়ে পড়তে আরম্ভ করল ফিনল্যান্ডের উপর। এগুলোকে রুখতে হিমসিম খেতে হচ্ছিল ফিনল্যান্ড ডিফেন্সকে। কিন্তু যথেষ্ট মুন্সিয়ানার সঙ্গে সেগুলোকে সামলে দিলেন লুকাস হারাডেস্কি এবং পৌলন আরাজুয়ারি। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। প্রথমার্দ্ধের সংযুক্ত সময়ের দু মিনিটে রাশিয়া গোল করে এগিয়ে গেল।
বক্সের মধ্যে দিয়ুবার সঙ্গে অপর স্ট্রাইকার আ্যালেক্সিই মিরানচুকের কম্বিনেশন ভাল। পঁচিশ বছর বয়সী ইতালির আটলান্টার ফরোয়ার্ড বক্সের মধ্যে তাঁর অধিনায়কের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের উঁচু শটে গোল করেন। এই গোলেই ম্যাচের ফয়সালা হল, জিতল রাশিয়া। কিন্তু মাত্র এক গোলে জয়টা নক আউটে যাওয়ার ব্যাপারে সমস্যায় ফেলতে পারে। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে রাশিয়ার তাই বড় জয় দরকার।