Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ০৫ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: সংবাদমাধ্যমের শত্রু নরেন্দ্র মোদি
সম্পাদক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১, ১১:০৯:২৯ পিএম
  • / ৬০৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

৬ তারিখ বিকেল নাগাদ, পৃথিবীর মানুষ জন জানলো, নরেন্দ্র মোদি স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের শত্রু, স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমকে ধ্বংস করাটা ওনার কাজ। হ্যাঁ, রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডার, যাঁদেরকে পৃথিবী চেনে আরএসএফ বলে, তাঁরা তাঁদের এই বছরের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, গোটা পৃথিবীতে, বিভিন্ন দেশের সংবাদ মাধ্যম কতটা স্বাধীন, তারা কতটা নিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারে, সরকার তাঁদের কাজে কতটা হস্তক্ষেপ করে, সাংবাদিকরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন কিনা, সাংবাদিকদের খবর করার জন্য জেলে পাঠানো হয় কি না, সেই দেশের মিডিয়া, সংবাদমাধ্যম সম্পর্কিত আইন কী রকম, তাতে পরিবর্তন এসেছে কি না, এই সব কিছু খুঁটিয়ে দেখে এক তালিকা বের করা হয়, সে তালিকার শীর্ষে আছে নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, কোস্টারিকা, নেদারল্যান্ড, জামাইকা ইত্যাদি দেশ। মোট ১৭২ টা দেশের মধ্যে আমরা, মানে ভারত কোথায়? আমরা নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কারও তলায় ১৪২ নম্বরে। কেউ বলতেই পারেন, চুলোর দোরে যাক সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা। ওসব দিয়ে হবে কী? তাহলে আসুন ওই দেশগুলোর দিকে তাকানো যাক, যারা এই তালিকার এক্কেবারে ওপরে। তিন চারটে বিশেষত্ব আছে ওই দেশগুলোর, যারা এই স্বাধীন সাংবাদ মাধ্যম আছে এমন দেশের তালিকার শীর্ষে আছে, সেসব দেশে স্বাক্ষরতা ১০০%, সেসব দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ, সে সবকটা দেশে অপরাধ প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কম, সে সব দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষ হয় এইথিস্ট, নাস্তিক না হলে অ্যাগনস্টিক, অজ্ঞেয়বাদী, মানে যারা ইশ্বর আছে কি না, থাকলে কোথায়? কেমন? এসব নিয়ে মাথা ঘামান না। সেসব দেশের ১০০% মানুষ ধর্ম। বর্ণ, জাতির ভিত্তিতে যে কোনও বৈষম্যকে ঘৃণা করেন, তাঁরা অসাম্প্রদায়িক। আর এই সব দেশে দুর্নীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কম।  এসবের অনেক কারণ আছে, তাঁদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পেছনে তাঁদের দক্ষতা কাজ করে, দক্ষতার পেছনে শিক্ষা, শিক্ষার পেছনে রাষ্ট্র আর পরিবারের ভূমিকা, রাষ্ট্র দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার পেছনে স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম, তার পেছনে দেশের আইন, অনেক অনেক কিছু। কিন্তু এসবের পেছনে স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের যে এক বিরাট  ভূমিকা আছে, তা অস্বীকার করা যাবে না।

আমাদের দেশে স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের অবস্থা কী? সংবাদ মাধ্যমের কথা বাদই দিলাম, কেবল ছবি ট্যুইট করার জন্য জেলে পাঠানো হচ্ছে, সাংবাদিক সংবাদ করার জন্য, ঘটনাস্থলে যাবার পথে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, সংবাদপত্রের সাংবাদিকই কেবল নয়, সংবাদপত্রের সম্পাদক, বিনোদ দুয়ার মত সাংবাদিক, সিদ্ধার্থ বরদারাজনের মত সাংবাদিকদের জেলে পোরার ধমকি দেওয়া হচ্ছে, দেশদ্রোহিতার মামলা করা হচ্ছে, যে সংবাদ মাধ্যম কথা শুনছে না, তাঁদের পরিচালকমণ্ডলীকে হ্যারাস করা হচ্ছে, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স, ইডি লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এবং সবই করা হচ্ছে দেশপ্রেমের নামে, সবই করা হচ্ছে এক ভুয়ো মেকি জাতীয়তাবাদের নামে, সেসব বিশ্বের লোকজন দেখছেন, দেখছেন ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিকাল উইকলির কনসালট্যান্ট এডিটর ছিলেন এমন এক সাংবাদিক, গৌতম নভলাখাকে গ্রেফতার করা হল, অভিযোগ তিনি নাকি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার চক্রান্ত করছেন, কোন প্রধানমন্ত্রী? যাঁর একদিনের সুরক্ষা, সিকিউরিটির খরচ এক কোটি ৭০ লক্ষ টাকা! এই সংবাদ মাধ্যমকে দমিয়ে রাখা কেন? এর পেছনের রহস্যটা কী? সারা পৃথিবীতেই স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম রাষ্ট্রের চক্ষুশূল, সরকার, সরকারের মাথায় থাকা মানুষজন স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম পছন্দ করেন না, কারণটা খুব পরিস্কার, তাঁদের যা ইচ্ছে খুশি তাই করার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এরকম যে কোনও শক্তি তাঁদের না পসন্দ, তাঁদের ইচ্ছে হবে, তাঁরা ডিমনিটাইজেশন করবেন, কেউ কোনও প্রশ্ন করবে না, তাঁরা মনে করেন, তাঁরা একমাত্র তাঁরাই মানুষের ভালো চান, মানুষের পছন্দ হোক না হোক, তাঁরা যা ভাবছেন সেটাই সঠিক। দু নম্বর হল, অবাধ দুর্নীতির রাস্তা খোলা রাখা। ফ্রান্সে রাফাল জেট কেনাবেচা নিয়ে পরিস্কার অভিযোগ এসেছে, নিয়ম বিরুদ্ধভাবে টাকার লেনদেন হয়েছে, সে দেশে তদন্ত আর মামলা দুটোই শুরু হয়েছে, রাফাল কিনেছে কোন দেশ? ভারত, তো সেই ভারত আমার ভারতবর্ষে কিন্তু না আছে তদন্ত, না হচ্ছে মামলা। বিরোধীরা চিৎকার করছে চৌকিদার চোর হ্যায়, চোর কা দাড়ি মে তিনকা। মিডিয়া চুপ, মেইন স্ট্রিম মিডিয়াতে খবর নেই। এবং মিডিয়ার এক বড় কাজ ওয়াচডগের, কোথাও ভুল হলে, দুর্নীতি হলে, চুরি হলে, অত্যাচার হলে, বৈষম্য থাকলে তা মানুষের সামনে, সরকারের সামনে তুলে ধরা, কিন্তু সংবাদ মাধ্যম যদি স্বাধীন না হয়, যদি যো হুজুর হয়, যদি অর্ণব গোস্বামী হয়, তাহলে দেশে অশিক্ষা থাকবে, দেশে দুর্নীতি বাড়বে, সরকার যা ইচ্ছে খুশি তাই করবে, সরকারের মাথায় যিনি তিনি হয়ে উঠবেন, মহম্মদ বিন তুঘলক।

এ তো গেলো দেশের তালিকার কথা, পৃথিবীর ১৭২ টা দেশের মধ্যে সারে জঁহা সে অচ্ছা হিন্দুস্থান, আজ ১৪২ নম্বরে। কিন্তু এখানেই থামেনি, যাঁরা এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন, তাঁরা বিশ্বের সেইসব নেতাদের নামেরও একটা তালিকা বানিয়েছেন, যারা তাঁদের ভাষায় স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের শত্রু, তাঁদের ভাষায়, প্রিডেটরস অফ প্রেস ফ্রিডম, যারা যেনতেন প্রকারেণ সংবাদ মাধ্যমকে চুপ করিয়ে রাখতে চায়। প্রথমে লোভ দেখিয়ে, পাইয়ে দিয়ে বশে আনতে চায়, না হলে ভয় দেখিয়ে চুপ করায়, তাও সামলানো না গেলে জেলে পোরে, খুন করে, তেমন রাষ্ট্রনায়কদের তালিকায় এবার সংযোজন নরেন্দ্রভাই দামোদর দাস মোদি, তাঁর সঙ্গে যাদের নাম এই তালিকায় ঝলমল করছে তারা হলেন পাকিস্তানের ইমরান খান, সৌদি আরবের রাজপুত্র মহম্মদ বিন সালমন, মায়ানমারের মিলিটারি শাসক মিন আং লিয়াং, উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুটিন, সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি বাসার আল আসাদ। তাকিয়ে দেখুন বিশ্বের রত্নদের সঙ্গে আমার দেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম, তো রিপোর্টে কী বলা হয়েছে? বলা হচ্ছে ২০০১ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হবার পর থেকেই মোদিজি গুজরাটকে এক ল্যাবরেটরি, এক পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছেন, কিভাবে সংবাদ এবং সংবাদপত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন, গুজরাট হিংসার সময় নিজের ইমেজকে বরকরার রাখা, মুসলিম বিদ্বেষকে কাজে লাগানোর শিক্ষা তিনি ওখান থেকেই পেয়েছিলেন। তারপর এল ২০১৪, তখন থেকে মিডিয়া ব্যারনদের সঙ্গে সখ্যতা, তাঁদের অন্য ব্যবসায় সুবিধে দিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে চুপ করিয়ে রাখা, যে সাংবাদিক একটু অন্যরকম, একটুতে এঁটে, প্রশ্ন করে তাঁকে বাপি বাড়ি যা বলে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া, আর কিছু পা চাটা দালালদের দিয়ে ২৪ ঘন্টা গুণকীর্তন করানো গোদি মিডিয়া তৈরি করলেন মোদিজি, তাকিয়ে দেখুন মেন স্ট্রিম মিডিয়ার দিকে, সাংবাদিক প্রশ্ন করছে না উত্তর দিচ্ছে বোঝা দায়, প্রখ্যাত সাংবাদিকের প্রশ্ন, আপনি ২০ ঘন্টা কাজ করেন, দেশের জন্য সারাদিন কাজ করেই চলেছেন, এত এনার্জি পান কোত্থেকে? মানে সারাদিন কাজ করেন, এটা সাংবাদিকই বলে দিল, এবার উনি এনার্জি ট্যাব খেয়ে কাজ করেন, না যোগাসন থেকে এনার্জি পান, সেটা উনি বলবেন। সাংবাদিক প্রশ্ন করছে, আপনার এই প্রকল্প থেকে ১০ কোটি কৃষক লাভবান হলেন, এই প্রকল্প নিয়ে কিছু বলুন, মানে বলেই দেওয়া হল যে এই প্রকল্প থেকে ১০ কোটি কৃষক লাভ পেলেন, এই হয়ে উঠেছে মিডিয়া। মিডিয়াতে উনি এবং ওনার সাকরেদরা কিছু অদ্ভুত তথ্য ছুড়ে দেবেন, পরদিন থেকে সেটাই প্রচার হতে থাকবে, যেমন টুকরে টুকরে গ্যাং, এরা কারা? যদি এরা দেশকে টুকরো করার চক্রান্ত করছে, তাহলে এরা জেলের বাইরে কেন? প্রমাণ কোথায়? আর্বান নকশাল। তারাই বা কারা? এরকম কোনও দল আছে নাকি? কিন্তু চালু হয়ে গেলো আর্বান নকশাল, প্রতিবাদী মানুষ মানেই আর্বান নকশাল? গুপকর গ্যাং? কারা? যে পিডিপি’র সঙ্গে সাড়ে চার বছর একসঙ্গে রাজ্য শাসন করলো বিজেপি, তারাই ক’দিনের মধ্যে গ্যাং? কোনও মিডিয়া প্রশ্ন করছে না? কোনও মিডিয়া প্রশ্ন করছে না, সেদিন কাদের, কার গাফিলতিতে পুলওয়ামায় বিস্ফোরণ হল? কেউ প্রশ্ন করছে না পাকিস্তান নিয়ে এত বড় বড় কথা চীন নিয়ে চুপ কেন মোদিজি? কারণ মিডিয়া তাঁর কেনা গোলাম। তার বাইরেও যদি কেউ থাকে, তাহলে তাকে সেকুলার বলো, যেন সেকুলার হওয়াটা অন্যায়, প্রেস্টিটিউট বলো, ট্রোল করো, ধমকি দাও, লেলিয়ে দাও ভক্তদের, গণধর্ষণ করার হুমকি দাও মহিলা সাংবাদিকদের, আরও সাংঘাতিক হলে জেলে পুরে দাও, দেশদ্রোহিতার মামলা দাও, জেলেই পচে মরুক। না না, এসব কথা আমি বলছি না, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ভারতে স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমকে ধ্বংস করার কাজে নেমেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদি, দেশ ডুবছে, অর্থনীতি ডুবছে, সামাজিক বৈষম্য বাড়ছে, হিন্দুত্বের শ্লোগান, জয় শ্রী রাম এখন এক যুদ্ধ হুঙ্কার।

ভরসা একটাই, মানুষ সব দেখছে, সব শুনছে, মানুষ এই স্বৈরাচারকে মেনে নেবে না কোনওদিন, সাময়িক বাড়বাড়ন্ত হলেও শেষ পর্যন্ত রাজছত্র ভেঙে পড়ে, রণডঙ্কা শব্দ নাহি তোলে, কারণ সভি কা খুন সামিল য়ঁহা ইস মিট্টি মে, হিন্দুস্থান কিসিকা বাপ কা থোড়েই হ্যায়? বলেছিলেন রাহত ইন্দোরি, https://youtu.be/GFxSAfraKVc.

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

লখনউ দুরমুশ, আইপিএলের মগডালে KKR
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
নারিনের ব্যাটে ভর করে ২৩৫ করল KKR
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
কাল, সোমবার এসএসসি মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
ফের নারিনের তাণ্ডব, বড় রানের পথে কলকাতা
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
স্কুলে বেত খেয়েছিলাম: প্রধান বিচারপতি
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
হোয়াইট হাউসের গেটে ধাক্কা গাড়ির
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
৯ নম্বরে ব্যাট করতে এলেন ধোনি, চলছে ট্রোলিং
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
এশীয় বংশোদ্ভূত সাদিক খান লন্ডনের মেয়র
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
লখনউয়ের বিরুদ্ধে কী হবে নাইটদের একাদশ?
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
শ্রেয়সের হৃদরোগের কারণ কোভিড ভ্য়াকসিন!
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
বাড়িতে পিঁপড়ের উপদ্রব! জেনে নিন কীভাবে রেহাই পাবেন
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
একমাত্র রোহিতকেই ভয় পেতেন অধিনায়ক গম্ভীর!  
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
জাতীয় মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ পদ পেলেন শ্রীলেখা
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
স্টেশন মাস্টার ঘুমিয়ে পড়ায় ট্রেন থমকাল ৩০ মিনিট
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team