আমার বাড়ির বই এর র্যাকে একটা বই আমার চোখে পড়েছিল বহু আগে, সে তখন আমার ১৩ কি চোদ্দ। হয় বাবা নয় কাকার কেনা বই, ভাগো মৎ দুনিয়া কো বদলো, রাহুল সংকৃত্যায়নের লেখা বই। সেটা পড়ে খুব কিছু বুঝেছিলাম তাও নয়, কিন্তু এই দুনিয়া কো বদল ডালো, এই শ্লোগানটা আমার পরিচিত হয়ে গিয়েছিল, তারপর থেকে বহু কথায় বহুয় আলোচনায় শুনেছি সব ব্যাটাকে ছেড়ে দিয়ে কেষ্টা ব্যাটাই যেমন চোর, তেমনিই নাকি আমাদের আদতে যা যা সমস্যা, যে বৈষম্য, খিদে, অনাহার, শোষণ ইত্যাদি তার মুলে আছে এক সিস্টেম, এক কাঠামো, যাকে বদলাতে না পারলে কিছুই হবে না। আরও পরে কমিউনিস্ট পার্টির প্রোগ্রাম আর ইতিহাস পড়ে দেখি মার্কস সাহেব তাঁর কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টোতে এই কাঠামো বদলের কথা, আমূল পরিবর্তনের কথা বলেছেন, ১৮৪৮ এই আর সেই বদলই নাকি এক অনিবার্য সমাজ বিপ্লব, যা হবেই কিন্তু তাকে কিলিয়ে কাঁঠাল পাকানোর মতই, ত্বরান্বিত করার জন্য কমিউনিস্ট পার্টি কাজ করে। মানে গোদা বাংলায় এক দেশে অন্য আর সব রাজনৈতিক দল যখন এক কাঠামোকে বজায় রাখে, সময়ে অসময়ে সেই কাঠামোতে কিছু বদলও আনে কিন্তু সেই কাঠামোকে ভেঙে এক নতুন কাঠামো তৈরি করার কথা বলে না, কমিউনিস্ট পার্টি সেই সিস্টেম ভাঙার কথা বলে।
১৮৪৮ এ কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো প্রকাশ হবার পরে এই দাবি আরও যুক্তিসংগতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, বার বার বলা হয়েছে ভাগো মৎ, দুনিয়া কো বদলো। কিন্তু বাম শাসনের সেই ৩৪ বছরে ব্রিগেডে বহু সভা হয়েছে, গতকাল যত মানুষ এসেছিলেন তার চেয়েও বেশি মানুষের বাম সমাবেশ ব্রিগেড দেখেছে, বহু কথা হয়েছে, বহু রাজনৈতিক প্রসঙ্গ এসেছে কিন্তু সাফ কথায় কমরেডস, আসলে আমাদের এই কাঠামোটাই বদলাতে হবে এই কথা অনুচ্চারিত থেকে গেছে, গতকাল মীনাক্ষী সেই কথাটা বললেন, কমিউনিস্ট পার্টির মূল লক্ষ্যের কথা, কমরেডস ভাগো মৎ দুনিয়াকো বদলো, বললেন আমাদের সিস্টেমটাকে পালটাতে হবে। তাহলে আসুন খুব সংক্ষেপে এই সিস্টেমটা, যেটাকে কমিউনিস্টরা বদলাতে চান, পাল্টাতে চান সেটার চেহারাটা কেমন একটু সেটা নিয়ে আলোচনা করে নিই। বোঝা যাবে কমিউনিস্টরা এই বদল চাইছেন কেন? কাঠামোর প্রথম বদল যা কমিউনিস্টরা চান তা হল সম্পত্তির মালিকানার পরিবর্তন, ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিলোপ। মানে এই যে দেশের ৯০% সম্পদ আর সম্পত্তির মালিক দেশের ১০% মানুষ, সেই বৈষম্যের বিলোপ ঘটাতে হলে আগে তো মালিকানার বদল দরকার, সেই মালিকানা যদি ১০% মানুষের বদলে রাষ্ট্রের হাতে আসে, সমাজের হাতে আসে, তাহলে এক ঝটকায় রাষ্ট্রের মোট সম্পদ বাড়ে, মাথা পিছু সম্পদ বাড়ে, সেই সম্পদ থেকে আয় এর সমবন্টন হলে মাথা পিছু আয় বাড়ে। তার মানে কমিউনিস্টদের ঐ ব্যক্তিগত সম্পদ বিলোপের দাবী বা কর্মসূচি এই কাঠামোকে বদলানোর প্রথম ধাপ। কাঠামোর দ্বিতীয় বড় পরিবর্তন হল সমবায় প্রথা, ফ্যাক্টরি থেকে ক্ষেত খামারে সমবায়, এক যৌথ সমাজের সূচনা। আল কেটে বিশাল জমিতে সবাই মিলে চাষ, আরও উৎপাদন, আরও সমৃদ্ধি।
তৃতীয় সিস্টেম বদলের চাবিকাঠি হল গণতন্ত্রকে আরও অনেক অনেক প্রসারিত করা। কেবল নির্বাচিত করার অধিকার নয়, নির্বাচিত প্রার্থী মানুষের জন্য কাজ না করলে বা দূর্নীতির সঙ্গে জড়িত আছে এমন অভিযোগ উঠলেও তাকে ফিরিয়ে নেওয়া, প্রত্যাহার করা রাইট টু রিকল এর অধিকার। এবং নির্বাচন কেবল আইন সভার নয়, ব্যবস্থার পরিচালনার প্রত্যেকে যাতে নির্বাচিত হন, তার ব্যবস্থা। আপনার এলাকার পুলিশ থেকে বিচারক, আমলা প্রত্যেকে নির্বাচিত হবেন, মানুষ তাঁদের নির্বাচিত করবেন। আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা আর ইংরিজী গ্রামার পড়ে বিচারক হয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে ঘাড় ধরে জেলে পুরবো গোছের অশিক্ষিত মন্তব্য করার মত ঘটনা যাতে না ঘটে। মানুষের প্রতিনিধি মানুষের জন্য কেবল আইন তৈরি করবে না তা লাগু করবে এবং সেই আইনের রক্ষণাবেক্ষণও করবেন, এটাই সিস্টেমের বদল। এবং সেই কারণেই কমিউনিস্ট পার্টি এই পুলিশ আমলা বিচার ব্যবস্থা কে বর্তমান কাঠামোতে এক রাষ্ট্রযন্ত্র বলে, ওনাদের ব্যাখ্যায় যার কাজ বড়লোকেরদের তৈরি শোষণ ব্যবস্থাকে বজায় রাখা। এরপর হল শিক্ষা, স্বাস্থের বাজারমুখি কাঠামোকে জনমুখী করে তোলা, গণস্বাস্থের প্রথম কথা হল যেখানে মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেখানে স্বাস্থ বা শিক্ষার সবচেয়ে বেশি ব্যবস্থা করা, সবচেয়ে বেশি বাজেট বরাদ্দ সেখানেই যেখানে মানুষের শিক্ষা বা স্বাস্থের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এবং শেষ মেশ এক বিকল্প সংস্কৃতি, এই কাঠামোকে টিঁকিয়ে রাখার জন্যই এক সংস্কৃতি কাজ করে, তার পালটা এক সংস্কৃতি যা আবার সেই বেশীরভাগ মানুষের জন্য, যে সংস্কৃতি থেকে চুইঁয়ে পড়বে তাদের ঘাম, পরিশ্রম আর আনন্দ। এই হল গিয়ে মোদ্দা ঐ সিস্টেম বদলের কথা যা আদতে এক সামাজিক রাজনৈতিক বিপ্লব, যা শুরু হয় ক্ষমতা দখল দিয়ে, উৎপাদন যন্ত্রের মালিকানার দখলদারি দিয়ে এবং একমাত্র তারপরেই এক আমূল পরিবর্তন, সে পরিবর্তন মোড়ের মাথায় কিছু ভিতু ক্ষমতালোভী মানুষের পোস্টার নয়, সে পরিবর্তন এক আমূল বদলে যাওয়ার বিষয়, সুকান্ত বলেছিলেন, রক্তে আনো লাল, রাত্রির গভীর বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে আনো ফুটন্ত সকাল।
তো গতকাল ব্রিগেডে হঠাৎই সেই অমোঘ উচ্চারণ, না অষ্টম বাম সরকার তৈরি করতে হবে তেমন শ্লোগান নয়, সিস্টেম বদলাতে হবে বললেন মীনাক্ষী, যুব সম্পাদক, সি পি আই এম এর নতুন মুখ। ৭৭ এ বাম সরকার আসার পরেও বহুকাল সি পি আই এম এর বিভিন্ন আলোচনায় এই কাঠামো বদলের কথা থাকতো, প্রকাশ্যেই বলা হত, পার্টি ক্লাসে কমরেড লক্ষী সেন শুরুই করতেন কমরেড বিপ্লব হবেই। তারপর সি পি এম সরকার এক অভ্যেস হয়ে দাঁড়ালো, সে সরকার আর পাঁচটা সরকারের মতই উন্নয়ন, বিকাশের কথা বললো, সি পি এম নেতারা ব্রিগেডে দাঁড়িয়ে কাঠামো বদলের কথা বলা তো বন্ধ করেছেন সেই কবেই, তারপর পাড়ার মিটিং এও ঐ সিস্টেম বদলের ডাক শোনা গ্যালো না। এরপর বুদ্ধ বাবু এলেন, বলেই দিলেন ওসব কাগুজে বিপ্লব, কাঠামো বদল ওসব আর সম্ভবই নয়, না পার্টি বলেনি, উনি বলেছিলেন, লিখেওছিলেন দেশহিতৈষীর পুজো সংখ্যায়, কাজেই সরকার যখন হাতে আছে তখন এই সরকারের মধ্যে থেকেই কারখানা করতে হবে চাকরির জন্য, বড়বড় মল, রাস্তা, ফ্লাই ওভার, মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি করতে হবে, কিছু হলো বটে কিন্তু সে প্রচেষ্টায় চন্দ্র বাবু নাইডু থেকে নরেন্দ্র মোদী অনায়াসে এক ডজন গোল দিলেন, কারণ তাঁরা এই সিস্টেমের মধ্যে থেকেই স্কুল থেকে স্বাস্থকে বেসরকারিকরণে অনেক বেশী দক্ষ, তাঁদের সঙ্গে দেশের কর্পোরেট পুঁজির সখ্যতা অনেক বেশি, গড়ে উঠল নাইডু মডেল, গুজরাট মডেল, যার পাশাপাশি সে রাজ্যেও চূড়ান্ত বৈষম্য আর দারিদ্র।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | নির্বাচনের আগেই সিএএ নিয়ে আসছে বিজেপি, রাস্তায় নামুন
বুদ্ধ বাবু তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই লজ্জা পেলেন, বললেন তিনি লজ্জা পান, তাঁর দল হরতাল ডাকে, ধর্মঘট ডাকে, এবং কফিনে শেষ পেরেক চার ফসলি জমিতে টাটার কারখানা আর সেই আবহেই নন্দীগ্রামের কেমিক্যাল ফ্যাক্টরির প্রসঙ্গ উথ্বাপন। এরপর সিস্টেম বদল ছেড়েই দিন অষ্টম সরকারের শোকে মুহ্যমান নেতারা শয্যাশায়ী আর এই সিস্টেমের সবচেয়ে বড় হোতা কংগ্রেস আপাতত পথ চলার সাথী, সেই পথেই জুটেছে এক ধর্মীয় উন্মাদ আবাস সিদ্দিকিও, এই ব্রিগেডেই তাকে বুকে জড়িয়ে কার্যসিদ্ধির ছকবাজিও আমরা দেখেছি। তারপর হঠাৎ এতদিন পরে এক তরুণীর মুখে আবার ব্রিগেড শুনলো দিন বদলের গান, তিনি বললেন সিস্টেম বদলাতে হবে, মনে পড়লো ভাগো মৎ দুনিয়া কো বদলো, না এই উচ্চারণে আমি কোনও শঠতা দেখিনি, আমি এই উচ্চারণের গভীরতায় অবিশ্বাস করিনি, কেবল বোঝার চেষ্টা করেছি এ উচ্চারণ কি আবারও এই কিছু সময়ের জন্য, যদি আবার লাল গাড়ি জুটে যায়, কমরেড আভাস তো বলেই রেখেছেন, স্যালুট করবে পুলিশ সারা দিন রাত, প্রিয়তমা জেনে রেখো। তারপরেও এই সিস্টেম বদলের কথা কি মনে থাকবে? কেন এই কথা বলা? কারণ কমরেডরা ৭৭ এর পরে আপনারা বিলকুল ভুলেই মেরেছিলেন আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন, সরকারে বসেছেন, বসার আগে বহু আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে গরীবস্য গরীবদের ন্যুনতম রিলিফ দেবার জন্যই এই সরকারে বসা, এক মধ্যবিত্ত দিনযাপন নয়, গরীবদের মধ্যেও যাঁরা আরও গরীব, এই সরকারকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের পাশে থাকা মানে দিন বদলের পালার সবথেকে বড় কুশিলবদের পাশে রাখা, তাদের সঙ্গে নিয়ে ঐ যে ফুটন্ত সকাল কে ছিনিয়ে নিয়ে আসা। যে ভাবে আর এস এস বিজেপি এই সরকার আর তার যন্ত্রকে কাজে লাগিয়েই দেশ জুড়ে রামন্দির গড়ে তোলা থেকে তাঁদের অভিষ্ট হিন্দু রাষ্ট্রের দিকে ছুটে চলেছেন। কিন্তু বাম জামানায় সে সব কি দিন তখন, কমরেড সুশান্ত ঘোষকেও দেখেছি সকালে হরিণের গায়ে হাত বুলোতে, সি আই টি ইউ নেতা নীরেন ঘোষকে দেখেছি ধর্মঘটের দিনে আপেল টুকরো আর আঙুর খেতে, বুদ্ধ ভট্টাচার্যকে পাটভাঙা ধুতি পাঞ্জাবি পরে দপ্তরে আসতে, কিন্তু না সিস্টেম বদলানোর যাবতীয় গালগল্প তখন ব্যাকসিটে চলে গেছে। কোন বিকল্প সংস্কৃতি কমরেডরা তুলে ধরেছিলেন? পাড়ায় পাড়ায় ইঁট বালি সিমেন্টের সিন্ডিকেটে কোন সমবায়ের গল্প লেখা হচ্ছিল? হ্যাঁ বাম নেতারা আজকের তৃণমূল নেতাদের তুলনায় ঢের ঢের সৎ ছিলেন, কিন্তু সেই সৎ নেতাদের পাশে রশিদের বিরিয়ানি খাওয়া, হলদিয়া বন্দরের কমিশন খাওয়া বা উটকো শিল্পপতিদের বন্ধু আরামবাগের নেতারাও তো ছিলেন। ৮০ র পর থেকে কোন ব্রিগেডে সিস্টেম পাল্টানোর ডাক দেওয়া হয়েছে? কোন ব্রিগেডে বলা হয়েছে এসব সরকার ইত্যাদি এক কৌশল আমরা তো কাঠামো বদলানোর কাজ করছি। কোন কাজ করছিলেন তখন এস এফ আই ডি ওয়াই এফ আই এর নেতারা? কেন সেই মানুষেরা পাশ থেকে সরে গেলেন? যাঁদের স্বার্থরক্ষার জন্য গদিতে বসেছিলেন নেতারা? সবটাই ষড়যন্ত্র? সবটাই মিডিয়ার তৈরি চক্রান্ত? ভুল হয়েছিল? কোন ব্রিগেডে, কোন রাজ্য সম্পাদক, পলিটব্যুরো নেতা আধঘন্টা ধরে এক এক করে সেই ভুলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন? ভুল স্বীকার করেছেন? আজ যখন মইদুল বা আনিসের হত্যার কথা বলা হচ্ছে তখন ভিখারি পাসওয়ান বা ২১ শে জুলাই গুলিতে নিহত মানুষজনদের কথা বলা হবে না কেন? তাঁরা কি শিল্পপতি? পুঁজিপতি? ভিড় নিয়ে কথা বলার কোনও মানেই হয় না, কারণ আজও সি পি এম আর তার গণসংগঠনের ১০% মানুষও কলকাতায় এসে হাজির হলে কলকাতায় জন বিস্ফোরণ হবে।
সেই লোকেরাই নিজেদের পাড়াতে গণশক্তির বোর্ডও লাগান না, কাজেই কত লোক হয়েছিল সে নিয়ে আলোচনা অবান্তর, এর চেয়ে অনেক বেশি ভিড় আনার পরেও নির্বাচনে শূন্য হয়েছে, এবারেও হবে। কিন্তু সেই নির্বাচনী পাটিগণিতই কি এক কমিউনিস্ট পার্টির একমাত্র বিবেচ্য বিষয়? সেই আবহে এক নতুন মুখ আবার অনেক দিন পরে লক্ষ মানুষের সমাগমে বললেন আমরা সিস্টেম বদলাতে চাই, তলায় বসে থাকা প্রবীন বৃদ্ধ নেতাদের কি বুকের রক্ত ছলাৎ করে ওঠেনি? এই সময়ের এক রাজনৈতিক সমাবেশে আগামী রাজনৈতিক জোট নিয়ে একটা কথাও নেই, ইদানিং লেখা আকর্ষণহীন হুলো বিড়াল মার্কা অখাদ্য গণসংগীত বা টুম্পা সোনার বদলে রবি ঠাকুর দিয়ে শুরু আর নজরুল দিয়ে শেষ, মঞ্চের সবথেকে ওপরে জাতীয় পতাকা আর মঞ্চে নতুন মুখ বলে দিল সিস্টেম পাল্টানোর লড়াই হবে কি না জানা নেই কিন্তু দলের ভেতরের সিস্টেমে ঘা পড়েছে, অচলায়তনের দরজায় ঘা পড়েছে, ভাঙলে ভালো, না ভাঙলে মীনাক্ষীর সিস্টেম বদলানোর কথা কেবল কথার কথা হয়েই রয়ে যাবে।