কোথায় পুলিশকর্মী সাবির মোল্লা? আজও এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন তাঁর মা। ২০০৯ সালে ৩০ জুলাই লালগড়ের ঝিটকা জঙ্গল থেকে মাওবাদীদের হাতে অপহৃত হন সাবির মোল্লা। দীর্ঘ ১২ বছরের অপেক্ষা, সাবির মোল্লার মুখ হয়তো অনেকেরই মনে নেই। কিন্তু তাঁর বাড়িতে তাঁর ছবি আজও জ্বলজ্বল করছে। তাঁর মা প্রতিদিনই চোখে জল নিয়ে ছেলেকে দেখার অপেক্ষায় থাকেন। হয়তো ফিরে আসবে তাঁর সন্তান।
বর্ধমানের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবির মোল্লা। ছোটবেলা থেকেই সাবির মোল্লা পুলিশের চাকরিতে তাঁর ঝোঁক ছিল। তাঁর কপালে চাকরিও জুটে যায়। ২০০৬ সালে ব্যারাকপুর ফাস্ট ব্যাটেলিয়ানে সাবির মোল্লার পোস্টিং হয়। কনস্টেবল নম্বর ছিল ১০২৯। ২০০৯ সালে ব্যারাকপুর থেকে সাবিরকে পাঠানো হয় লালগড় ধরমপুর ক্যাম্পে। সেই সময় লালগড় জুড়ে মাওবাদীদের প্রবল প্রভাব। ৩০ জুলাই তাঁর সহকর্মী কাঞ্চন গড়াইয়ের সঙ্গে বাইক নিয়ে ডিউটি করতে গিয়েছিলেন সাবির মোল্লা। সেদিন পরিবারের সঙ্গে বিকেল ৪টে ৪৫ মিনিট নাগাদ সাবিরের শেষ কথা হয়। তারপর সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারেন জঙ্গল থেকে কাঞ্চন গড়াই এবং সাবির মোল্লাকে অপহরণ করেছে মাওবাদীরা। সেই থেকে দীর্ঘ ১২ বছরের অপেক্ষায় রয়েছেন সাবিরের পরিবার। সেই রহস্যের কোনও সমাধান হল না?
তৎকালীন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ২ জনের পরিবারকে নিয়ে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কাছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কোনও নেতাকর্মীকে দেখা না গেলেও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১৭ সালে সাবির মোল্লার ভাই শরীফ মোল্লাকে বর্ধমান সদর পুলিশ কার্যালয়ে কাজের ব্যবস্থা করে দেন। ২০০৯ থেকে ২০১১, তৎকালীন পুলিশের ডিজি ভূপিন্দর সিংয়ের সঙ্গে ৩ বার দেখা করেন তাঁর পরিবারের লোকজন। প্রথমবার ডিএনএ টেস্টের সঙ্গে কোনও পারিবারিক যোগসূত্রতা পাওয়া যায়নি। ২০১১ সালে জানুয়ারিতে আবার ডিএনএ টেস্ট করা হয়। কিন্তু আজও তার রিপোর্ট এসে পৌঁছায়নি।
সাবির মোল্লার পরিবারের প্রশ্ন, কবে সাবির মোল্লা অপহরণ রহস্যের সমাধান হবে?