কলকাতা: ফের চেনা ছন্দে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যেমনটা ছিলেন। ভবানীপুর উপনির্বাচনে ঠিক একই রকম। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে উদাহরণ তুলে আক্রমণ করা, কিংবা, রাজ্যের বাম শাসনে অত্যাচারিত হওয়ার কাহিনী তুলে ধরে ভোট দেওয়ার আর্জি জানালেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী অপরিবর্তিত রাখতে বুধবার ভবানীপুরে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, ‘‘আমি না জিতলে অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আমাকে মুখ্যমন্ত্রী রাখতে ভোট দিন। আমার কাছে প্রতিটা ভোট দামি।’’
রাজ্যে ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার গঠনে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন উল্লেখযোগ্য। একারণেই অনুরোধ রাখতে একুশের আন্দোলনে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু চক্রান্ত করে তাঁকে হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি বিচারাধীন। তাই সে বিষয়ে বিশেষ কিছু না বললেও দেশের বিজেপি শাসিত রাজ্যে নারীদের উপর অত্যাচার, কেন্দ্র বিরোধী খবর লেখা সাংবাদিকদের গ্রেফতার কিংবা মোদির অফিসার নেতৃত্বাধীন সরকারে মানুষের দুর্বিষহর কথা তুলে ধরেন মমতা। তিনি বলেন, “দিল্লি অত্যাচার করছে। মিটিং-মিছিল করতে দিচ্ছে না. মিটিং মিছিল করতে গেলেই মারছে, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হাথরাসে মেয়েদের উপর অত্যাচার হয়েছে। আমি দল পাঠিয়েছিলাম ঢুকতে দিল না। তাই জেনে রাখুন, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। আগামীতেও চলবে।”
এরপরই নিজের রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোথা থেকে কতবার সাংসদ-বিধায়ক হয়েছেন, কী কী উন্নয়ন হয়েছে তাঁর সরকারের আমলে, আগামীতে কী কী করতে চান তাও জানান। মমতা বলেন, “আগে যাদবপুর থেকে নির্বাচনে লড়তাম। কিন্তু মা একবার বলেছিল একবার ভবানীপুরে দাঁড়া না তুই। নিজের মেয়েকে একবার ভোট দিতে চায়। তারপর থেকেই ভবানীপুরের প্রার্থী হওয়া। ছয় বার আপনারা আমাকে জিতিয়েছেন। এই ভবানীপুরই আমার জন্মস্থান, আমার কর্মস্থান, আমার ধর্মস্থান… আমার সবটা ভবানীপুর ঘিরে। তাই, আপনারা আবার আমাকে আশীর্বাদ করুন। যাতে ভবানীপুর এই থাকতে পারি, আর্জি মমতার।
আরও পড়ুন-সাত বছরে এজেন্সিকে যেভাবে ব্যবহার সত্তর বছরেও হয়নি, হাজিরা শেষে বললেন কৌস্তুভ রায়
উপ-নির্বাচনের প্রচারে নাম না করেই মোদি-অমিত শাহ্কে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না বলে বারবার অভিয়োগ করে বিজেপি। মমতা মনে করিয়ে দিলেন এ বছর দুর্গাপুজোর সময় ত্রিপুরা সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছে। তাঁর দল এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা যাতে মিটিং-মিছিল করতে না পারে, সে জন্যই ত্রিপুরা সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছে। তা হলে কি পুজো হবে না? কেননা ১৪৪ ধারা জারি থাকলে নিয়ম অনুযায়ী চার জনের বেশি এক সঙ্গে জড়ো হতে পারে না। মমতা’র প্রশ্ন তা হলে পুজো হবে কী ভাবে?