কলকাতা: বুধবার রাতে মাকে ফোন করে স্বপ্নদীপ জানিয়েছিলেন, সে ভাল নেই। তাঁর খুব ভয় করছে। মাকে তাড়াতাড়ি আসতেও বলেছিলেন। বৃহস্পতিবার মামা অরূপ কুণ্ডু এমনটাই জানালেন। পাশাপাশি ভাগ্নের রহস্যমৃত্যুর পিছনে র্যাগিংয়ের অভিযোগ করেন তিনি। পরিবারের এই অভিযোগের পর যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে এই ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কমিটি। পাশাপাশি এই ঘটনায় আরও একটি বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। আঙুল উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে বেআইনি ভাবে থাকা প্রাক্তনীদের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের অভিযোগ, যাঁরা পড়ুয়া নন, আবাসিক নন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হোস্টেল দখল করে রয়েছেন। এঁদের বের করে দিলেই হোস্টেলের পরিবেশ ঠিক থাকবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ ব্লকের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। আত্মহত্যার জল্পনা উড়িয়ে মামা অরূপ জানিয়েছেন, ও আত্মহত্যা করেনি। যে ভাল ছেলে, সে কীভাবে হঠাৎ করে মারা যায়। ও পাগল নয়। তা হলে কি রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে কিছু সন্দেহ করছেন স্বপ্নদীপের পরিবার? অরূপ বলেন, সন্দেহ তো হচ্ছে। চিকিৎসক একটা কাগজে সই করেয়েছেন। তাতে লেখা, স্বপ্নদীপের গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। র্যাগিং অবশ্যই হয়েছে। র্যাগিং না হলে কী করে হয়? তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই বলেই জানিয়েছেন অরূপ।
আরও পড়ুন: বিরোধী জোটের প্রধান, উপ প্রধান হয়েই তৃণমূলে যোগ
উচ্চ শিক্ষার জন্য নদিয়া থেকে এসেছিলেন স্বপ্নদীপ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, সোমবার ছিল তাঁর প্রথম বর্ষের প্রথম দিনের ক্লাস। তবে গতকাল ক্লাসে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। তারপর মাঝরাতে হস্টেলের আবাসিকরা ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পান। বাইরে বেরিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় স্বপ্নদীপকে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। এরপর তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের।