কলকাতা: গড়ফার (Garfa Mysterious Death) কে পি রায় লেনের এই বাড়িটার কাছে এলেই এক অদ্ভুত অনুভূতি হয়। কেমন গা-ছমছম করে। বাড়ির সামনে ছড়ানো একটা চাতাল। আলো-অন্ধকার মেশানো। একটা গাছ দাঁড়িয়ে। সব পাতা ঝরে চাতালে ছড়িয়ে। পরিষ্কার করা হয়নি বহু দিন সেটা বোঝা যায়। এক তলা বাড়িটাও সে রকমই। রক্ষণাবেক্ষণের কোনও ছাপ নেই। রংহীন। শ্যাওলা ধরা। দরজা-জানলা সব বন্ধ। এই বাড়ির ভিতরেই তিন মাস ধরে পড়ে রয়েছে এক বৃদ্ধের মৃতদেহ (Decomposed Body)।
চাতাল পেরিয়ে একটা ছোট সিঁড়ি। ডান দিকে জলের ট্যাঙ্ক। সিঁড়ি ধরে উঠলে লোহার গ্রিল। সেটা পেরলে মূল দরজা। বন্ধ এই বাড়ির ভিতরের এক সদস্য অনেক দিন ধরে নিখোঁজ। তিনি সংগ্রাম দে। সল্ট লেকে ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের প্রাক্তন কর্মী। তাঁর স্ত্রী অরুণা দে। অথর্ব হাঁটতে চলতে পারেন না। একটা ঘরে পড়ে থাকেন। ছেলে কৌশিক দে। বয়স চল্লিশ। মানসিক দিক থেকে সামান্য বিপর্যস্ত। পাড়ার লোকে তাই জানে।
প্রায় খাটের সঙ্গে মিশে যাওয়া দেহ৷ নিজস্ব চিত্র৷
ঘরের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে তীব্র পচা গন্ধ। ঘরের ভিতরের যে ছবি দেখা গিয়েছে তা যে কোনও হলিউড হরর ছবির সমান। বিছানার উপর যে দেহ পড়ে তাকে একবার দেখলে হাড়হিম করা ভয় গ্রাস করতে পারে যে কাউকে। ঘরের দেওয়ালে ফাটল। নোংরা, অপরিষ্কার। মলিন একটা পর্দা কোনও রকম ঝুলছে। সংগ্রাম দে’র দেহটি বিছানায় মিশে গিয়েছে। চোখ, নাক আর মুখে বিরাট গর্ত। খুলিতে যেমন গর্ত থাকে ঠিক সে রকম। দেহের মাংস কবেই খসে পড়ে গিয়েছে। দেহের উপরে এক ধরণের আস্তরণ পড়ে। পা দু’টি বেঁকে গিয়েছে। হাড় বেরিয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন-বিছানায় মিশে কঙ্কাল দেহ, গড়ফায় তিন মাস ধরে মৃত বাবাকে আগলে ছেলে
ঘরের মেঝেতে একটা মাদুর পাতা। তার উপর তোষক। আর একটা নোংরা চাদর পাতা। চাদরটা সামান্য কোঁচকানো। কেউ প্রতিদিন সম্ভবত এই মৃতের পাশেই রাত কাটাতেন। কে থাকতেন এই ঘরে? সম্ভবত সংগ্রাম দে’র ছেলে কৌশিক দে। যিনি ভাবতেন তাঁর বাবা একদিন উঠে বসবেন।