শাজাহান আলি, মেদিনীপুর: টাকা পেলেই মদ খায় স্বামী। যার কারণে সংসারে লেগে থাকে নিত্য অশান্তি। সেই প্রতিকূলতা থেকে মুক্তি পেতে ফন্দি এঁটেছিলেন স্ত্রী। গমের বস্তার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন টাকা। কিন্তু পোড়া কপালের জেরে খোয়া গেল সেই লুকানো টাকা। কারণ বাড়িতে হানা দিয়ে টাকা সমেত গমের বস্তা খেয়ে ফেলেছে হাতি।
আরও পড়ুন- চিড়িয়াখানায় এল আরও এক নতুন অতিথি
মাতাল স্বামীর থেকে সংসারের টাকা বাঁচাতেই ওই গমের বস্তায় তা লুকিয়ে রেখেছিলেন আশালতা দোলই। সেই টাকা যে দাঁতালের পেটে যাবে তা ভাবতেও পারেননি তিনি। হাতির পালের হানায় বাড়ি ভেঙে ধান, চাল, গমের বস্তা বের করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে ফের। কিন্তু এবার টাকা নিয়ে পালানোর ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গুড়গুড়িপাল থানার শালিকা গ্রামে।
আরও পড়ুন- সংবাদমাধ্যমে আয়কর হানা গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ, মোদিকে তোপ মমতার
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত্রি দশটা নাগাদ ছটি হাতির একটি পাল গোপগড় বিটের পাঞ্জাশোলের জঙ্গল ছেড়ে প্রবেশ করে শালিকা গ্রামে। জঙ্গল লাগোয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে থাকা বাদল দোলই নামে এক ব্যক্তির ইঁটের বাড়ির দেওয়াল ভেঙে দেয়। বাড়িতে মজুত থাকা রেশনের চাল, গম এর বস্তা শুঁড় দিয়ে বের করে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে খেয়ে সাবাড় করে দেয়। আর ওই গমের বস্তার মধ্যেই নাকি রাখা ছিল নগদ সাড়ে তেরো হাজার টাকা।
আরও পড়ুন- একুশে জুলাই রাতে তৃণমূল কর্মীকে গুলি, অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে
গমের সঙ্গেই সেই টাকা হাতির পেটে চলে গিয়েছে বলে দাবি পরিবারের। কারণ রাতে বস্তা নিয়ে চলে যাবার পর ভোর বেলায় বস্তার খোঁজে পাশের জঙ্গলে গিয়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। গিয়ে শুধু বস্তাটি পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গম। বাদল বাবুর স্ত্রী আশালতা দোলই বলেছেন, “গতকাল রাত্রি দশটা নাগাদ হাতি এসে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে চাল-গম খেয়ে ফেলে। স্বামী মদ্যপ বলে তার নজর এড়িয়ে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা গমের বস্তার মধ্যে লুকানো ছিল। গম সমেত সেই টাকা হাতি খেয়ে ফেলেছে হাতি।” এখন টাকার অভাবে বাড়ি মেরামত করা নিয়েও সমস্যায় পড়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- সংসদ ভবন হয়ে উত্তরপ্রদেশে অভিযানের পরিকল্পনা বিক্ষোভকারী কৃষকদের
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বন দফতরের লোকজন। হাতিগুলিকে তাড়িয়ে ফের জঙ্গলে ফেরত পাঠায়। বন দফতরের কর্মীরা পৌঁছালে তাদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রামবাসীরা। তবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো বনকর্মীদের মধ্যেও। এক বনকর্মী বলেন, বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণ মিলবে। কিন্তু টাকা খেয়ে নেওয়ার প্রমাণ দেখানো কি ভাবে সম্ভব!
আরও পড়ুন- মুসলিম-অমুসলিম বিতর্কে মোহন ভগবতকে আক্রমণ আসাদুদ্দিন ওয়াইসির
অন্যদিকে চাঁদড়ার শুকনাখালিতে থাকা দশটি হাতির অন্য একটি পালের তান্ডবে ক্ষতি হয় সদ্য রোয়া ধান জমির। যদিও হাতির ওই পালটিকে হুলা পার্টির লোকজন তাড়িয়ে কংসাবতী নদী পার করে মানিকপাড়ার দিকে পাঠাতে সক্ষম হন। আবার পিড়াকাটার নোনাশোলে সকাল বেলা ধানের চারা গাছ খেয়ে ফেলে একটি হাতি।