কোচবিহার: রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা (Bharat Jodo Nyay Yatra) আগামী ২৫ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার অসম-বাংলা সীমান্ত দিয়ে কোচবিহারে (Cooch Behar) ঢুকবে। সেই যাত্রার প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। তার আগেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় ন্যায় যাত্রার জন্য রাহুলের (Rahul Gandhis) ছবি লাগানো ফ্লেক্স ছেঁড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। মঙ্গলবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে এদিনই অসমে রাহুলের ন্যায় যাত্রার তৃণমূলের পতাকা দেখা গিয়েছে। কংগ্রেস সাংসদের বাসের সামনেই তৃণমূলের পতকা হাতে দুতিনজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বাসের জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে রাহুল তাঁদের অভিনন্দন জানান। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল জানান, ইন্ডিয়া জোটের সব শরিককেই ন্যায় যাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলায় ওই যাত্রা ঢুকলে তৃণমূল তাতে শামিল হবে কি না, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
গত কয়েক দিন ধরে ইন্ডিয়া জোট (INDIA Allaince) নিয়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে চাপানউতোর চলছিল। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার কলকাতায় সংহতি মিছিলের পর কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে সরব হন। তিনি লোকসভা ভোটে কার্যত একলা চলার ইঙ্গিত দেন। সেই ইঙ্গিত অবশ্য মমতা বেশ কিছুদিন ধরেই দিয়ে আসছেন। গত মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ এবং এদিন বীরভূম জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকেও তিনি একলা চলার কথাই বলেন। এমনকী বাংলার ৪২টির মধ্যে সব কটি আসনেই লড়াইয়ের জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে বলেন নেত্রী। পাল্টা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী থেকে শুরু করে অনেক নেতাই তৃণমূলকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি। এদিনও দুই দলের মধ্যে তরজা অব্যাহত ছিল।
আরও পড়ুন: মমতার সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক, গুয়াহাটিতে বললেন রাহুল
এই অবস্থায় এদিন গুয়াহাটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কলকাতা টিভির সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেন, বাংলায় আসন সমঝোতা নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের আলোচনা এগোচ্ছে। তার ফলাফল নিয়ে আমি এখানে কোনও মন্তব্য করব না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। কংগ্রেসের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ভালো। দুই দলেরই কেউ কেউ নানা কথা বলছেন। তা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। জাতীয় স্তরে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। আঞ্চলিক স্তরে কিছু সমস্যা থাকলেও তা মিটে যাবে।
রাহুলের এই ন্যায় যাত্রা বৃহস্পতিবার অসম-বাংলা সীমান্তের কোচবিহার জেলার বক্সিরহাট দিয়ে প্রবেশ করবে। রাহুল গান্ধীকে ঐতিহ্যবাহী বৈরাতি নৃত্যের মাধ্যমে বরণ করা হবে। বক্সিরহাট থেকে তুফানগঞ্জ হয়ে চামটা এলাকায় দুপুরে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন রাহুল। কোচবিহার শহরের রেলঘুমটি, মা ভবানী চৌপথী হয়ে রাজবাড়ির সিংহদুয়ারের সামনে দিয়ে খাগড়াবাড়ি হয়ে পুণ্ডিবাড়ি, ঘোকসাডাঙা হয়ে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটায় পৌঁছবে যাত্রা। সেখানে রাত্রিবাসের কথা রয়েছে কংগ্রেস নেতাদের। এই কর্মসূচির কথা জানান এআইসিসি সদস্য পিয়া রায়চৌধুরী। বিশ্বনাথ ভক্ত প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি, অভিযোগ বিজেপি নেতার
ওর এক্সপায়ারি ডেট দেখতে পাচ্ছি, হুমকি তৃণমূল নেতার তৃণমূলের সংহতি যাত্রা শেষে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডলকে হুমকি দিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিশ্বজিৎ জানায়, বিশ্বজিৎ দাস তাঁকে বাটার মোড়ে সভা থেকে হুমকি দিয়েছেন। তাঁর ও তাঁর পরিবারের যদি কোনও অঘটন ঘটে, এর জন্য দায়ী থাকবেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস।
প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বিজেপি জেলা সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে, তৃণমূল জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘ওর এক্সপায়ারি ডেট দেখতে পাচ্ছি। আগামী চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে ওর এক্সপিয়ারি ডেট শেষ হয়ে যাবে। মিছিলের দিকটা যদি একটু ঘুরিয়ে দিতাম, ওর জামা ও প্যান্ট থাকত না।’ এর পর মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল জেলা সভাপতিকে পাল্টা জবাব দিয়ে বিজেপি নেতা বলেন, বিশ্বজিৎ দাস আমাকে বাটার মোড়ে সভা থেকে হুমকি দিয়েছেন। আমি এবং আমার পরিবারের যদি কোন অঘটন ঘটে, এর জন্য দায়ী থাকবেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। এক্সপায়ারি ডেট ভগবানের হাতে। সেটা সবার জন্য, আপনার জন্য, আমার জন্য।
আরও অন্য খবর দেখুন