সন্দেশখালি: শুক্রবার সকাল থেকে ফের বিক্ষোভে উত্তপ্ত সন্দেশখালি (Sandeshkhali Incident)। বেড়মজুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছারি বাড়িতে এক তৃণমূল নেতার দুটি আলাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অজিত মাইতির বাড়িতে ভাংচুর চালানো হয়। তাঁকে মারধর করা হয়। অজিতের স্ত্রী এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মহিলারা ফের ঝাঁটা, লাঠি হাতে পথে নামেন। দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার (ADG South Bengal Supratim Sarkar), বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার-সহ পদস্থ পুলিশ অফিসাররা ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। সুপ্রতিম বলেন, আমাদের উপর বিশ্বাস রাখুন। ১৪৪ ধারা রয়েছে। আপনারা ঘরে ফিরে যান। পুলিশ অফিসারের সঙ্গে স্থানীয়দের বচসাও হয়। পরে ঘটনাস্থলে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার (DG Rajiv Kumar)। তিনি বলেন, এখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। যারা আইন ভাঙবে, তাদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ডিজির ফের সন্দেশখালি সফর বুঝিয়ে দিয়েছে, পরিস্থিতি কতটা গুরুতর।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৮)
তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে সন্দেশখালির জেলিয়াখালির মহিলারা ঝাঁটা, লাঠি, বাঁশ হাতে গ্রামের মহিলারা পথে নেমেছিলেন। থানা ঘেরাও করেছিলেন। সেই প্রতিবাদ এখনও অব্যাহত। বুধবার থেকে সন্দেশখালিতে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। টোটোয় চেপে গোটা এলাকায় কার্যত টহল দেন তিনি। অফিসারদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি।বৃহস্পতিবার ডিজি রাজীব কুমারের (DG Rajeev Kumar) তৎপরতায় শাহজাহানের দখলমুক্ত হয় সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) অনেক জমিই। বৃহস্পতিবার শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজুদ্দিনের মাছের ভেড়ির আলাঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল গ্রামবাসীরা। শুক্রবারও সেই ঘটনার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
আরও পড়ুন: ১৪৪ ধারা নিয়ে ফের আদালতে শুভেন্দু
এদিকে এদিনই সকালে সন্দেশখালিতে পৌঁছেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (National Human Rights Commission) প্রতিনিধিরা। ছয় সদস্য বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। আগামিকালও ওই প্রতিনিধিরা এলাকায় থাকবেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সফর চলাকালীনই সকাল থেকে আবারও তেতে ওঠে সন্দেশখালির বেড়মজুর এলাকা। স্থানীয় এক মহিলা বলেন, শাহজাহানের ভাই সিরাজের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছি। আমার ঘর ভেঙে দিয়েছে ওর দলবল। পরে বলেছিল, কোর্টেও যাবি না, থানাতেও যাবি না। তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির নির্দেশে এসব হচ্ছে বলে দাবি করেন মহিলারা। এডিজি সুপ্রতিম সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, সব অভিযোগের তদন্ত হবে। যারা আজ ভাংচুর করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তারও তদন্ত হবে। এডিজি বিক্ষোভকারীদের বলেন, আমাদের উপর ভরসা রাখুন। এখানে প্রশাসনের শিবির বসেছে। জেলাশাসক রয়েছেন। তাঁরা আপনাদের সব অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিলাম। সবাই সবার জমি ফেরত পাবেন। আপনারা এভাবে বিক্ষোভ দেখাতে থাকলে গোটা প্রক্রিয়াটায় দেরি হবে।
অন্য খবর দেখুন